।।”প্রধানমন্ত্রী”-বরাবরে প্রতিদিন।। পত্র নং-১১, Daily #NoteToOurPrimeMinister (প্রিয় পাঠক-যৌক্তিক, গঠনমুলক, তথ্যসম্বলিত ও মার্জিত মন্তব্য সমুহ আপনাদের নাম-পরিচয় সহ ছাপা হবে আসন্ন মুল বইয়ে। সুতরাং শুধুমাত্র বিষয় সংশ্লিষ্ট মার্জিত মন্তব্যই কাম্য।)
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী
প্রজাতন্ত্রের সর্বাধিক সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত গর্বিত এই নাগরিক রাশেদ কাঞ্চন বাংলাদেশ-এর সালাম নিন। আপনার নিরাপত্তা ও সুস্বাস্থ্য সর্বদাই কাম্য। আমি মনেপ্রানে বিশ্বাস রাখি জাতি, জাতীয় সুরক্ষা, সার্বভৌমত্ব এবং দেশের অগ্রগতির বিষয়ে আপনি কখনোই কোনও আপস করবেন না।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী
সেবা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ঘুষ ও দুর্নীতির আলোচনা এলে প্রথমেই নাম আসে রাজউকের। এটি সাধারণ মানুষের মধ্যেও এমন কেউ নেই জানেন না। অথচ বারবার দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হলেও এই খাতটি সংশোধন হয়েছে এমন কোনো নজির নেই। বরং দিন দিন এদের দৌরাত্ম্য বেড়েই চলছে। ২৯ জানুয়ারি মাইডাস সেন্টারে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায় শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) থেকে বিনা ঘুষে কোনো সেবা পাওয়া যায় না বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক। তার মন্তব্য যে একেবারে অসাড় এটি বলার উপায় নেই। কারণ ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন সেখানে কী ধরনের অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী
ঢাকাকে তিলোত্তমা নগরী করে গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি অনেকদিনের। কিন্তু তা কোনোদিনই সম্ভব নয় সঠিক পরিকল্পনা ছাড়া। রাজধানীজুড়ে যে কোনো ভবন, স্থাপনা তৈরি করতে হলে রাজউকের সার্বিক তত্ত্বাবধান ও নজরদারি থাকা জরুরি। কিন্তু দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে রাজউক উদাসীন। অথবা মোটা অঙ্কের অর্থের বিনিময়ে অনুমোদন দেয়া যায় না এমন নকশা ছাড়া ছাড় দিয়ে দেয়। কোনো ভবন ধসে পড়লে বা আগুন লাগলে তখন আমরা জানতে পারি যে ভবনটি রাজউক অনুমোদিত ছিল না বা অনুমোদনকৃত নকশার বাইরেও নানাভাবে বর্ধিত পরিসরে তৈরি করা হয়েছে। অথচ এমনটি হওয়ার কথা না।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী
একটি নকশা অনুমোদন পাওয়ার পর সেই ভবন তৈরি করার পরও বসবাস বা ব্যবহারের যোগ্য কিনা সে বিষয়েও রাজউক ছাড়পত্র দেয়ার কথা। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে, রাজউকের কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশে এমন এক বলয় তৈরি হয়েছে যেখানে অর্থের বিনিময়ে সব হালাল করে নেয়া সম্ভব। রাজউক থেকে বিনা ঘুষে সাধারণ মানুষ সেবা পেয়েছেন এমন ঘটনা বিরল। রাজউক কর্মকর্তা, দালাল ও সেবাগ্রহীতাদের একাংশের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় আঁতাতের মাধ্যমে চুক্তি করে সুনির্দিষ্ট হারে ঘুষ নেয়া হয়। রাজউক ও দুর্নীতি একাকার এবং সমার্থক শব্দ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সুরাহা হওয়া জরুরি।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী
টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজউকে ছাড়পত্র অনুমোদনে ঘুষের পরিমাণের নির্ধারকগুলো হচ্ছে রাস্তার প্রস্থ, জমির পরিমাণ, জমির ব্যবহার, জমির অবস্থান বা এলাকা, সেবাগ্রহীতার ধরন। এছাড়া সেবাগ্রহীতা অনেক সময় বহিরাগত দালালদের মাধ্যমে হয়রানি ও অর্থ আত্মসাতের শিকার হয়ে থাকেন। আবার জরিপের সময়ও চুক্তিভিত্তিক নিয়মবহির্ভূত অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপন করা টিআইবির গবেষণা প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ছাড়পত্র এবং নকশা অনুমোদন ও বাস্তবায়ন সম্পর্কিত সেবা গ্রহণের জন্য অবৈধভাবে অর্থ আদায় করেন রাজউকের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী
যেখানে আপনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা করেছেন সেখানে রাজউক কিভাবে এই প্রতিষ্ঠানটিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করে বহাল তবিয়তে তা চালিয়ে যাচ্ছে তা আমাদের বোধগম্য নয়। তবে রাজউক সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলদের কোনো জবাবদিহিতার বালাই না থাকায় তারা বেপরোয়া এমনটিই মনে করেন অভিজ্ঞজনরা। এই রীতি ভাঙতে হবে। তাদের জবাবদিহিতার আওতায় এনে দুর্নীতিগ্রস্তদের শাস্তি নিশ্চিত করা এখন জরুরি হয়ে পড়েছে। সেবা প্রতিষ্ঠান থেকে প্রকৃত অর্থেই যেন প্রত্যেকে সেবা পায় তা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা নিতে হবে।
প্রিয় প্রধানমন্ত্রী
আজ এ পর্যন্তই। আবারও আপনার সুস্থতা কামনা করছি। মহান সৃষ্টিকর্তা সর্বদাই আপনার সহায় হউন। ইতি রাশেদ কাঞ্চন বাংলাদেশ (প্রজাতন্ত্রের সর্বাধিক সাধারণ কিন্তু অত্যন্ত গর্বিত একজন নাগরিক)