ডাঃ তাবাস্সুম উর্মি রোজা,
কনসালট্যান্ট সাইকিয়াট্রিস্ট, কগনিসিটি ওয়েলবিং, লন্ডন।
কিডনির সমস্যা প্রথম দিকে বোঝা যায় না। তবে যখন সমস্যা প্রকট হয়, তখন নানাবিধ শরীরিক সমস্যা দেখা দেয়। অতিরিক্ত ওজন, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ কিডনির জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।
কিডনির সুস্থতায় খাদ্য তালিকায় শর্করা, আমিষ, চর্বি, ভিটামিন ও খনিজের সুষম থাকতে হবে। অর্থাৎ খাদ্য তালিকা এমন হবে যেন সেখানে সঠিক পরিমাণে খাদ্যের সকল উপাদান বর্তমান থাকে। বিশেষ ধরনের ক্র্যাশ না করাই ভালো। কারণ এ ধরনের অনেক ডায়েটে অতিরিক্ত প্রোটিন ব্যবহার করা হয়, যা সবার জন্য ভালো না–ও হতে পার এবং কিডনির জটিলতা তৈরি করতে পারে।
লবণ, লবণযুক্ত খাবার, চিপস, চানাচুর, বিস্কুট, নানরুটি, তন্দুর রুটি, কিমা, নোনা ইলিশ, টেস্টিং সল্ট, তামাক, জর্দা, আচার, কাঁচা সবজি, ডাল ও ডালজাতীয় খাবার, কোমল পানীয়, কফি, কেক, প্যাস্ট্রি, লাল মাংস (গরু,খাসি) কিডনি রোগীদের জন্য ক্ষতিকর।
এছাড়া ডাবের পানিতে উচ্চমাত্রায় পটাশিয়াম, সোডিয়াম থাকায় কিডনি রোগীদের বেলায় এই পানি খাওয়ায় খানিকটা বিধিনিষেধ আছে। এছাড়া যারা কিডনি রোগের সঙ্গে অতি উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন, তাদের জন্য ডাবের পানি গ্রহণযোগ্য নয়। আবার অনেকেই ইচ্ছে মতো ব্যথার ওষুধ দীর্ঘসময় পর্যন্ত সেবন করেন যা কিডনির জন্য ভালো নয়। সেজন্য বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ সেবন হতে বিরত থাকতে হবে। কিডনি ভালো রাখতে বিভিন্ন শাক সবজির যেমন লাউ, ঝিঙা, পটল, ঢেঁড়স, ধুন্দল, চিচিঙা, মিষ্টিকুমড়া, অঙ্কুরিত মুগডাল, ক্যাপসিকাম ইত্যাদির বেশ ভূমিকা রয়েছে। এসব খাবারে থাকা বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান কিডনি পরিশোধন করে দেহ থেকে দূষিত পদার্থ বের করতে বের করতে সাহায্য করে।
বাঁধাকপি, ফুলকপি, ব্রকলিসহ ক্রুসিফেরা জাতীয় সবজিতে রয়েছে ভিটামিন কে, সি, বি৬, ফলিক অ্যাসিড, ফাইবার, অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট যা দেহের ক্ষতিকারক ফ্রি র্যাডিক্যালের বিরুদ্ধে কাজ করে কিডনিকে শক্তিশালী করে। জাম-জাতীয় ফল, স্ট্রবেরি, আপেল ইত্যাদি কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে।
পেঁয়াজ ও রসুনে থাকা অ্যান্টি অক্সিডেন্ট কিডনিকে ভালো রাখতে ও কার্যকারিতা সঠিক রাখতে সাহায্য করে। এছাড়াও আদা দেহের রক্ত চলাচল বাড়িয়ে কিডনিকে সচল রাখতে সাহায্য করে, ফলে কিডনির কার্যকারিতা ঠিক থাকে। কিডনি ভালো রাখতে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পানি পান করতে হবে। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং ব্যয়াম আমাদের কিডনি ভালো রাখতে সাহায্য করে থাকে সে বিষয়টি অনেকেরই অজানা, সেজন্য কিডনির কার্যক্ষমতা ঠিক রাখতে প্রতিনিয়ত ব্যায়াম জরুরি। সচেতন থাকুন, ভালো থাকুন।