আকাশপথে চলাচলের সময় দুর্ঘটনায় যাত্রী আহত বা নিহত হলে এবং মালামাল নষ্ট হলে বা হারিয়ে গেলে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ প্রায় ছয় গুণ বাড়িয়ে ‘আকাশপথে পরিবহন (মন্ট্রিল কনভেনশন) বিল ২০২০’ জাতীয় সংসদে পাস করা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৭ নভেম্বর) সংসদে বিলটি উত্থাপন করেন বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী। পরে তা সংসদে কণ্ঠভোটে পাস হয়।
বিদ্যমান বিধানে আকাশপথে পরিবহনের সময় যাত্রী নিহত বা আহত হলে ক্ষতিপূরণ ছিল ২০ লাখ ৩৭ হাজার ৬০০ টাকা। নতুন আইনে তা বেড়ে ১ কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৩৩৪ টাকা করা হয়েছে।
আকাশপথে পরিবহনের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় যাত্রীর মৃত্যু বা আঘাতপ্রাপ্ত হলে এবং মালামাল নষ্ট বা হারানোর ক্ষেত্রে ওয়ারশ কনভেনশন-১৯২৯-এর আলোকে দেশে বর্তমানে প্রচলিত ‘দ্য ক্যারেজ বাই এয়ার অ্যাক্ট-১৯৩৪’, ‘দ্য ক্যারেজ বাই এয়ার (ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন) অ্যাক্ট-১৯৬৬’ এবং ‘দ্য ক্যারেজ বাই এয়ার (সাপ্লিমেন্টারি কনভেনশন) অ্যাক্ট-১৯৬৮’ আছে। এই তিনটি আইনের আলোকে প্রাণহানি, আঘাত ও ব্যাগেজ নষ্ট বা হারানোর ক্ষেত্রে ক্ষতিপূরণের পরিমাণ কম ছিল।
এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে ১৯৯৯ সালে মন্ট্রিল কনভেনশন গ্রহণ করা হয়েছে। সে বছরেই ওই কনভেনশনে স্বাক্ষর করে বাংলাদেশ।
১৯৯৯ সালে মন্ট্রিল কনভেনশন গ্রহণের পর দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও বাংলাদেশে তা অনুসমর্থন হয়নি। মন্ট্রিল কনভেনশনটি অনুসমর্থন করে নতুন আইন প্রণয়ন হলে মুত্যু, আঘাত ও মালামাল হারানো বা নষ্ট হওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ ক্ষতিপূরণ পাওয়া সহজ হবে।
বিলের উদ্দেশ্য ও কারণ সম্পর্কে প্রতিমন্ত্রী মাহবুব আলী বলেন, ‘কনভেনশনের আলোকে নতুন আইন না হওয়ায় কোনো দুর্ঘটনার জন্য বর্তমানে প্রচলিত আইনে প্রাপ্ত প্রাপ্ত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ খুবই কম এবং তা আদায়ের পদ্ধতি অস্পষ্ট, সময়সাপেক্ষ ও জটিল। এ অবস্থা থেকে উত্তরণের জন্য জন্য আকাশে চলাচলকারী যাত্রীর অধিকার সুরক্ষা ও মালামাল পরিবহন সুনিশ্চিতকরণ, যাত্রীর মৃত্যুর কারণে পরিবারকে প্রদেয় ক্ষতিপূরণ প্রায় ৬ গুণ বৃদ্ধি এবং আদায় পদ্ধতি সহজ করতে আইনটি প্রয়োজন।’
নতুন আইন অনুযায়ী, ফ্লাইট বিলম্বের কারণে পরিবহনকারীর দায় ২০ ডলারের পরিবর্তে ৫ হাজার ৭৩৪ ডলার, ব্যাগেজ বিনষ্ট বা হারানোর জন্য প্রতি কেজিতে ২০ ডলারের পরিবর্তে ১ হাজার ৩৮১ ডলার এবং কার্গো বিমানের মালামাল বিনষ্ট বা হারানোর জন্য প্রতি কেজিতে ২০ ডলারের পরিবর্তে ২৪ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে।