বরেণ্য সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের একমাত্র ছেলে নিবিড় কুমার কানাডায় সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়ে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। বর্তমানে সস্ত্রীক কানাডায় অবস্থান করছেন এই শিল্পী। পুত্রের সুস্থতায় সকলের দোয়া প্রার্থনা করে ফেসবুকে দীর্ঘ একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ।
মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) এই স্ট্যাটাসটি দেন কুমার বিশ্বজিৎ। লেখার শুরুতে তিনি বলেন— ‘জীবন কখনো কখনো অনেক বড় পরীক্ষার অন্য এক নাম। হঠাৎ আসা কোনো ঝড়ের মতো গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কানাডার টরন্টো শহরে আমার একমাত্র সন্তান নিবিড় এবং তার তিন বন্ধু আরিয়ান দীপ্ত, শাহরিয়ার খান মাহির ও এঞ্জেলা শ্রেয়া বাড়ৈ এক সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। আরিয়ান, মাহির ও শ্রেয়া আমাদের সবাইকে ছেড়ে অন্য দুনিয়ায় চলে গেছে।’
দুর্ঘটনায় নিহত তিনজনকে নিজের সন্তানের মতোই জানেন কুমার বিশ্বজিৎ। তা উল্লেখ করে এই শিল্পী বলেন, ‘নিবিড়ের মতোই বাকি তিনজনকেও আমি আমার সন্তানই মনে করি। তারা আমার পরিবারেরই একটা অংশ। তাদের সবার সাথেই আমার সম্পর্ক ছিল বন্ধুতুল্য। আমি মেনে নিতে পারছি না তারা নেই। সন্তান হিসেবেই তাদের স্মৃতি আমার হৃদয়ে থাকবে চিরজাগ্রত। আমি তাদের আত্মার শান্তি কামনা করি। ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাদের এই শোক সহ্য করবার শক্তি দেন। আমি ঈশ্বরের কাছে আরো প্রার্থনা করি, তিনি যেন আমাকে ও আমার পরিবারের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে আমার নিবিড়কে আমাদের কাছে ফিরিয়ে দেন।’
মানসিকভাবে ভীষণভাবে ভেঙে পড়েছেন কুমার বিশ্বজিৎ। তা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নিবিড় এখনো আইসিইউতে শয্যাশায়ী। এই আকস্মিক ঘটনায় আমি মানসিকভাবে ভীষণ বিপর্যস্ত। আমি আমার সকল বন্ধু, পরিচিতজন এবং ভক্তবৃন্দের কাছে নিবিড়ের জন্য দোয়া/ আশীর্বাদ কামনা করছি। আর যারা ইতোমধ্যে নিবিড়ের সুস্থতা কামনা এবং আমার পরিবারের এই দুঃসহ অবস্থা কাটিয়ে উঠার জন্য দোয়া/আশীর্বাদ করেছেন ও করছেন তাদের কাছে আমি চিরঋণী।’
গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে মর্মান্তিক এই সড়ক দুর্ঘটনা ঘটে। টরন্টো পুলিশ গণমাধ্যমকে জানিয়েছে, টরন্টো নগরীর অদূরে মিসিসাগা এলাকায় ৪২৭ হাইওয়ে ও ডানডাস ইন্টারসেকশনের সন্নিকটে ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে এ ভয়াবহ দুর্ঘটনায় আরিয়ান আলম দীপ্ত, শাহরিয়ার খান ও অ্যাঞ্জেলা বারৈ নামের ৩ বাংলাদেশি ছাত্র নিহত হন। নিবিড় কুমার নামে আরেক ছাত্র হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সংগীতশিল্পী কুমার বিশ্বজিতের ছেলে নিবিড় কুমার গাড়ি চালাচ্ছিলেন। গাড়িটি খুব দ্রুতগতিতে চলছিল। এক হাইওয়ে থেকে আরেক হাইওয়েতে ওঠার সময় টার্ন নিতে গিয়ে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। সেখানে একটু কার্ভ ছিল। হাইওয়ের রেলিংয়ে গিয়ে ধাক্কা খেয়ে গাড়িটি ৩ বার উল্টে যায়। সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে আগুন ধরে যায়।