সেজান মাহমুদ
লেখক পরিচিতি: কথাশিল্পী, গীতিকার, চলচ্চিত্রকার, পেশায় চিকিৎসা বিজ্ঞানী। ইউনিভার্সিটি অব সেন্টার ফ্লোরিডা কলেজ অব মেডিসিনে সহকারী ডিন ও প্রফেসর হিসাবে কর্মরত।
আমি বহু আগে থেকেই বলতাম ট্রাম্প হলো আমেরিকার গর্বাচভ; গর্বাচভ ভেঙেছিল সোভিয়েত ইউনিয়ন, আর ট্রাম্প ভাঙার চেষ্টা করছে ইউনাইটেড স্টেটস অব আমেরিকা।
কিন্তু আমেরিকার গণতন্ত্র কে লক্ষ্য করুন। এখনও ক্ষমতায় বসে-থাকা প্রেসিডেন্টের সমর্থকেরা রাজধানীতে তুলকালাম কান্ড করলো; কিন্তু তারপরও ডেমোক্র্যাট ও রিপাবলিকান দুইদল মিলে কংগ্রেসের দায়িত্ব পালন করলো রাত চারটা পর্যন্ত এবং ইলেকটোরাল ভোট সার্টিফাই করলো যে জো বাইডেন জিতেছেন! এই সার্টিফিকেশন হলো বাইডেনের শপথ গ্রহণের আগে ফাইনাল স্টেপ!
গত পাঁচ তারিখ আরো একটি বিপ্লব ঘটে গেছে; জর্জিয়া স্টেটের সিনেট ভোটে দু’জন ডেমোক্র্যাট ক্যান্ডিডেট জিতে যাওয়ায় সিনেটেও তারা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলো। তার মানে, কংগ্রেসের দুই অংশ ‘হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস ‘ ও সিনেট সবখানেই ডেমোক্র্যাটেরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলো যা স্বয়ং ট্র্যাম্পও পায় নি। এখন যে কোন বিল বা আইন পাশ করতে সক্ষম হবে তারা কোন বড় বাঁধা ছাড়াই।
প্রেসিডন্ট ক্ষমতায় থাকার পরও এই যে শক্তির ভারসাম্য এবং দুই দলের মধ্যে সমঝোতা এটাই গণতন্ত্রের আসল রূপ। পৃথিবীর আর কোন বড় দেশে এমন নজির সহজে পাওয়া যায় না।
ট্রাম্প যে কাজটি করলো তা লজ্জাকর, অপরাধ; এর আগে ১৮১৪ সালে বৃটিশরা এভাবে ক্যাপিটালে আক্রমণ করেছিল। যদিও বিচ্ছিন আক্রমণ হয়েছে কিন্তু জনতার একযোগে আক্রমণ এই প্রথম ১৮১৪ সালের পর। ঘৃণিত বর্ণবাদ এইসব কিছুর মূলে। তাই ডেমোক্র্যাটদের বিজয় মূল্যবোধেরও বিজয়। সামনের দিনগুলো ভাল হোক।