কখনও রুশ বাহিনীর হামলা এড়াতে লুকাতে হয়েছে জঙ্গলে। কখনও বা বিয়েবাড়িতে অনাহুত অতিথি হয়ে ঢুকে পড়তে হয়েছে আশ্রয়ের সন্ধানে। ইউক্রেনের দুই ভারতীয় মেডিকেল শিক্ষার্থী হর্ষ পানওয়ার ও তার বান্ধবী রেবা শ্রীবাস্তব শেষ পর্যন্ত পৌঁছাতে পেরেছেন নিরাপদ ঠিকানা।
পশ্চিম ইউক্রেনের একটি মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী হর্য ও রেবার আলাপ হয়েছিল বছর দু’য়েক আগে। পরে সম্পর্কও তৈরি হয় দু’জনের। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সেনা অভিযানের ঘোষণার পরেই ইউক্রেনের নানা প্রান্তে আছড়ে পড়তে শুরু করে ক্ষেপণাস্ত্র। বোমাবর্ষণ শুরু করে রুশ বিমানবহরও। এই পরিস্থিতিতে ইউক্রেনের প্রতিবেশী দেশ রোমানিয়ার উদ্দেশে রওনা দেয় ওই যুগল।
রেবা জানিয়েছেন, লাগাতার দু’দিন ধরে কোনো আশ্রয় ছাড়াই হেঁটেছেন তারা। মধ্যে মধ্যে বিমানহানার ভয়ে আশ্রয় নিয়েছেন রাস্তার পাশের জঙ্গল বা চাষের ক্ষেতে। এমনকী, রোমানিয়া সীমান্তে পৌঁছানোর পরে ইউক্রেনের সীমান্তরক্ষীদের হেনস্থারও শিকার হতে হয় তাদের।
তিনি বলেন,‘ভারতীয় এবং আফ্রিকার নাগরিকদের সীমান্ত পেরোতে বাধা দিচ্ছিল ইউক্রেন বাহিনী।’
শুধু রেবা নন, ইতোমধ্যে রোমানিয়ায় চলে আসা আরো কয়েক জন ভারতীয় নাগরিকও একই অভিযোগ করেছেন। তার প্রেক্ষিতে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্র কুলেবা বুধবার টুইট-বিবৃতিতে লিখেছেন, ‘প্রত্যেকেরই দেশে ফেরার সমান সুযোগ পাওয়া উচিত।’
সীমান্ত পেরিয়ে রোমানিয়ার ঢোকার পরে সে দেশের রাজধানী বুখারেস্টের অদূরের বিমানবন্দরে পৌঁছান হর্ষ ও রেবা। শুরু হয় দেশের ফেরার বিমানের প্রতীক্ষা। সে সময় অদূরের কোরবেনিয়াঙ্কা গ্রামের একটি কমিউনিটি হলে আশ্রয় নিতে গিয়েছিলেন তারা। তাদের সঙ্গে ছিলেন ইউক্রেন ফেরত আরো অনেক শিক্ষার্থী। রোমানিয়ার সেই গ্রামবাসীরা অনাহুত অতিথিদের সানন্দেই আশ্রয় দিয়েছিলেন বলে জানান হর্ষ।