১০০তম দিনে গড়িয়েছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ। এই যুদ্ধে উভয়পক্ষেই ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, তবে রাশিয়া যেভাবে গর্জন করেছিলেন সেভাবে বর্ষণ ঘটাতে পারেনি।
মস্কো ও কিয়েভের মধ্যে কয়েক মাস উত্তেজনার পর রাশিয়া ২৪ ফেব্রুয়ারি স্থল, আকাশ ও সমুদ্রপথে ইউক্রেনে আক্রমণ শুরু করে। এ ঘটনায় বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে। তবে তার খুব একটা তোয়াক্কা করেনি মস্কো। হামলার এক সপ্তাহের মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলো রাশিয়ার ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে শুরু করে। এর প্রতিক্রিয়ায় রাশিয়াও পাল্টা নিষেধাজ্ঞা দেওয়া শুরু করে।
২ মার্চের মধ্যে রাশিয়ার বাহিনী ইউক্রেনের দক্ষিণের শহর খারসন দখল করে এবং মারিউপোল ঘিরে ফেলে। দক্ষিণের আরেক শহর খারকিভ ও রাজধানী কিয়েভের কাছাকাছি অঞ্চলগুলোও রুশ বাহিনীর দখলে চলে আসে। তবে ইউক্রেন বাহিনীর পাল্টা হামলায় শেষ পর্যন্ত কিয়েভের আশেপাশের অঞ্চল থেকে সেনা প্রত্যাহার করে নিতে বাধ্য হয় রাশিয়া। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে বুচা শহর থেকে পিছু হটে রুশ বাহিনী। এরই মধ্যে পশ্চিমা দেশগুলো থেকে বিপুল অস্ত্র ও অর্থ সহায়তা আসতে শুরু করে ইউক্রেনে।
যুদ্ধ শুরুর প্রথম এক সপ্তাহে রুশ বাহিনী যেভাবে এগুতে শুরু করেছিল, ধারণা করা হচ্ছিল, দ্রুত ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখল করে ফেলবে তারা। তবে বাস্তবে তা হয়নি। বরং পরাশক্তি রাশিয়া কৌশলগতভাবে পরাজিত হয়েছে ইউক্রেনীয়দের কাছে।
গ্রিসের এথেন্সের হেলেনিক মিলিটারি একাডেমির ভূ-রাজনীতি এবং আধুনিক অস্ত্র ব্যবস্থার অধ্যাপক কনস্টান্টিনোস গ্রিভাস বলেছেন, ‘আমরা বুঝতে পারছি গোলাবারুদ হচ্ছে যুদ্ধক্ষেত্রে জয়-পরাজয় নির্ধারণের মৌলিক উপাদান। আমরা দেখেছি উভয় পক্ষের গোলাবারুদ কতটা গুরুত্বপূর্ণ – যেগুলো অতিমাত্রায় উন্নত নয়- যার মধ্যে রয়েছে ষাটের দশকের একাধিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ব্যবস্থা … দূরপাল্লার ও উচ্চমাত্রার নির্ভুল এবং অতি ধ্বংসাত্মক ক্ষমতাসম্পন্ন ক্ষেপণাস্ত্র।’
অত্যাধুনিক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা থাকার পরও রাশিয়ার পিছিয়ে পড়ার কারণ হচ্ছে এর ভাল কৌশলগত পরিকল্পনার অভাব রয়েছে। যুদ্ধের এক মাসে দেশটি ইউক্রেনকে নকআউট আঘাত হানতে ব্যর্থ হয়েছে।
হেলেনিক আর্মির প্রাক্তন সাঁজোয়া ডিভিশন কমান্ডার এবং গ্রিসের ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজের প্রভাষক প্যানায়োটিস গার্ত্জোনিকাস বলেন,‘ইউরোপের প্রতি রাশিয়ার সামরিক হুমকিকে অতিমূল্যায়ন করা হয়েছিল।’