ইরাক ও সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার ঘটনায় জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া। জাতিসংঘে রাশিয়ার প্রথম উপ-স্থায়ী প্রতিনিধি দিমিত্রি পলিয়ানস্কি এ তথ্য জানিয়েছেন।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) রুশ বার্তা সংস্থা তাসের খবরে বলা হয়েছে, দিমিত্রি পলিয়ানস্কি ইনস্টাগ্রামে এক পোস্টে জানিয়েছেন, ‘ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন হামলার ফলে শান্তি ও নিরাপত্তার হুমকির কারণে আমরা এইমাত্র জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি জরুরি বৈঠক আহ্বান করতে বলেছি। নিরাপত্তা পরিষদের এই মাসের সভাপতি (গায়ানা) ৫ ফেব্রুয়ারি নিউ ইয়র্ক সময় বিকেল ৪টায় সভা নির্ধারণ করার পরিকল্পনা করছেন।’
এর আগে, রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মারিয়া জাখারোভা বলেন, রাশিয়া সার্বভৌম দেশগুলোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের আগ্রাসনের নতুন নির্লজ্জ আচরণের নিন্দা জানায়। তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলা ইচ্ছাকৃতভাবে সংঘাতকে আরও উসকে দেওয়ার লক্ষ্যে করা হয়েছে।’
তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলুর খবরে বলা হয়েছে, রাশিয়ার দাবি, মার্কিন হামলায় ইরাক ও সিরিয়ায় বেসামরিক অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে এবং সাধারণ মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
যুক্তরাষ্ট্রকে ইচ্ছাকৃতভাবে মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতি খারাপ করার জন্য অভিযুক্ত করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাখারোভা বলেছেন, ওয়াশিংটন, তার দায়মুক্তিতে বিশ্বাস করে, মধ্যপ্রাচ্যে ধ্বংস ও বিশৃঙ্খলার বীজ বপন করে চলেছে। জো বাইডেনের নেতৃত্বে ২০০৩ সালের পর এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় মার্কিন বিমান হামলা এটি। জর্ডানে আমেরিকান ঘাঁটিতে অজ্ঞাত ড্রোন হামলার জন্য ‘প্রতিশোধ নেওয়ার’ কোনো যুক্তি নেই।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আবারও তার আগ্রাসী মনোভাব এবং আন্তর্জাতিক আইনের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শন করেছে।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার মধ্যরাতে ইরাক ও সিরিয়ায় ৮৫টি অবকাঠামোতে হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। মূলত গত সপ্তাহে জর্ডানে সামরিক ঘাঁটিতে ড্রোন হামলায় ৩ মার্কিন সেনা নিহত এবং আরও ৪০ জনেরও বেশি সেনা আহত হওয়ার পর প্রতিশোধ নিতে ইরাক ও সিরিয়ায় ইরানের রেভল্যুশনারি গার্ড বাহিনী ও তাদের সঙ্গে সম্পর্কিত মিলিশিয়াদের লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালায় মার্কিন বাহিনী।
হামলার পর ইরাকের সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফের মুখপাত্র ইয়াহিয়া রসুল এক বিবৃতিতে বলেছিলেন, ইরাকের সীমান্ত এলাকায় মার্কিন বিমান বাহিনীর বোমাবর্ষণ দেশটির সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন এবং হামলাগুলো ‘ইরাক ও অঞ্চলের নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার জন্য বিপর্যয়কর পরিণতি বয়ে আনবে।’