নাশকতার পরিকল্পনা ও ইসরায়েলি গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের হয়ে গুপ্তরচরবৃত্তির অভিযোগে চারজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে ইরান। আজ সোমবার তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয় বলে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে।
ওয়াশিংটন পোস্টের খবরে বলা হয়েছে, ইরানের সরকারি বার্তা সংস্থা আইআরএনএ জানিয়েছে, অভিযুক্তদের ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের জন্য সরঞ্জাম উৎপাদনকারী ইসফাহানভিত্তিক একটি কারখানায় বোমা হামলা চালানোর পরিকল্পনার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।
খবর অনুসারে, ২০২২ সালের গ্রীষ্মে ইসরায়েলের মোসাদের পক্ষ থেকে তাদের অভিযান চালানোর কথা ছিল। ইরানে প্রবেশের আগে এই চারজনকে আফ্রিকার একটি দেশে ইসরায়েলি সংস্থা মোসাদ দ্বারা প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ইরানি গোয়েন্দারা তা প্রতিহত করে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
অভিযুক্ত চারজন ইরানি নাগরিক হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন: মোহাম্মদ ফারামারজি, মোহসেন মাজলুম, ভাফা আজারবার এবং পেজমান ফাতেহি। গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশটির একটি আদালত তাদের মৃত্যুদণ্ডের রায় দেন। সুপ্রিম কোর্ট তাদের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার পর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।
কীভাবে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে, তা আইআরএন’র প্রতিবেদনে বলা হয়নি। তবে ইরানে সাধারণত ফাঁসি দেওয়া হয়।
২০২২ সালে ইরান বলেছিল, তাদের গোয়েন্দা কর্মকর্তারা মোসাদের সাথে যুক্ত একটি গ্রুপকে ভেঙে দিয়েছে, যারা ইরানের অভ্যন্তরে সন্ত্রাসী কার্যক্রমের পরিকল্পনা করেছিল। গ্রুপের সব সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছিল এবং প্রচুর পরিমাণে অস্ত্র ও বিস্ফোরক বাজেয়াপ্ত করেছিল।
ইরান নিয়মিত মোসাদ ও অন্যান্য পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থার জন্য গুপ্তচরবৃত্তির জন্য দেশটির নাগরিকদের গ্রেপ্তার, বিচার এবং মৃত্যুদণ্ডের খবর প্রকাশ করে থাকে।
গত মাসের শেষের দিকে ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগ তিনজন পুরুষ ও একজন নারীর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে ইরান। এছাড়াও আরও বেশ কয়েকজনকে কারাদণ্ড দেয়। ডিসেম্বরের শুরুর দিকে মোসাদের কাছে গোপন তথ্য প্রকাশের অভিযোগে দেশটিতে আরেকজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়।
ইরান ও ইসরায়েল বছরের পর বছর ধরে পরস্পরের বিরুদ্ধে গুপ্তচরবৃত্তি ও ছায়া যুদ্ধের অভিযোগ করে আসছে। ইসরায়েল ইরানকে তার সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে দেখে এবং ইরানকে পারমাণবিক অস্ত্র অর্জন থেকে বিরত রাখতে সামরিক পদক্ষেপ নেওয়ার হুমকি দিয়ে আসছে। অন্যদিকে, ইরান তাদের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি অস্বীকার করেছে এবং যেকোনো আগ্রাসনের কঠোর জবাব দেওয়ার অঙ্গীকার করেছে।