মু স্তা ফি জ র হ মা ন
একদিন এই আকাশের নীচে
মৃত মানুষের মত ভেসে আসবো জলে
সাপ-কাটাল লখীন্দরের ভেলা
ছেলেবেলায় যেমন থেমে থেমে ছেলেখেলা-
সারাবেলা।
এবং কোন একদিন পরজন্মে-
ঘনঘোর বৃষ্টির মরশুমে, সাঁইজী লালন-
বসন্ত জ্বরে ফের ভাসিয়ে দেবে লাশবাহী ভেলা
ক্যানো লখীন্দর, লালন ফকিরেরা ফিরে ফিরে আসে ব্রাহ্মণশাসনে ঘেরা সবুজাভ এই পঞ্চগ্রামে?
একদিন মাছ হবোÑ জলের গভীরে কানকো শ্বাস ঠেলে অক্সিজেন-
কখনোবা বড়শিতে ফাৎনার লোভে
গেঁথে যাবো শিকারীর বড়শীর বঙ্কিম চাতুর্যে।
আমাদের শরীর মিশে গেছে মাটিতে
আমাদের শ্বাস মিশে গেছে হাওয়ায়
আমাদের স্মৃতি এখন কোরান তেলোয়াতে
আমাদের ছবি এখন পোকাকাটা এলবামে
আমাদের বধ্যভ‚মিগুলোর উপর দিয়ে চলে গেছে মহাসড়ক কিংবা উর্ধ্বমুখী ব্যাপক হাইরাইজ, দালানকোঠা, কারো প্রিয়
গোলাপ বাগান, আর্কিড গার্ডেন।
দ্যাখো সহস্র বছর পর আবারো জন্ম নেব,
-ফিরে আসবো
বাংলার সহস্র বধ্যভ‚মিতে বেয়নেটের ঘাঁই, ঠা ঠা ব্রাশফায়ারে গণহত্যার শিকার তিরিশ লক্ষ মৃত মানুষের মিছিল।
কেননা দেখিনি এতকাল স্বাধীন পতাকা, ধান্যবতী জমিজমা, মৃতদেহ খেয়ে বেড়ে উঠা ভোরের বাতাসে জমা থাকে এখন
কতটুকু ধোঁয়া, অক্সিজেন, শিউলী ফুলের ঘ্রাণ;
জ্যামে আটকে পড়া ট্রাফিক, বড় বড় সেতু, রেলব্রিজ, শহরের মাঝখানে অগুনতি কাঁচের দালানের শীতাপে এখনো কী
মানুষেরা ঘামে যেভাবে আমরা বধ্যভ‚মিতে বেয়নেট, গুলি, তলোয়ার চলার আগমুহূর্তে ঘামছিলাম কুলকুল, শীতের রাতেও
স্বেদবিন্দু, ধোঁয়াটে আকাশ, রেলব্রিজের নীচে বধ্যনদী…
বহুকাল আমাদের রক্ত, মাংস, হাড়গোড় মিশেল দেয়া এইসব হগমগে জমিতে বিঘা প্রতি ফসলের আবাদ কী বাড়ল?
নদী-খাল-বিলে জাল ফেলে জেলেরা কী দরতে পারলো নালখোর স্বর্ন বোয়াল, রাঘা আইড়, রাক্ষুসে মাগুর?
পাগাড়ের অগভীর জলে মাছ চাষ করে কতটা লাভবান হলো বেকার যুকব?
চাই এসবের চুলচেরা সুচারু হিসেব।
আমাদের রক্তে সবুজ হয়েছে কালচে ঘাস।