ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ (টিসিবি) এর স্বল্প আয়ের ১ কোটি কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রয়ের জন্য অভ্যন্তরীণ বাজার থেকে দুটি পৃথক দরপত্রের মাধ্যমে ১ কোটি ৪৫ লাখ লিটার ভোজ্যতেল ক্রয়ের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুই ক্যাটাগরির ভোজ্যতেল ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ২৩১ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। বুধবার অনুষ্ঠেয় সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে এ সংক্রান্ত দুটি পৃথক ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য উপস্থাপন করা হতে পারে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, চলতি ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের জন্য টিসিবির সয়াবিন তেল ক্রয়ের লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২৬ কোটি ৪০ লাখ লিটার। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত মোট ৩ কোটি ৫০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ের চুক্তিপত্র সম্পাদন করা হয়েছে। এ অবস্থায় সংস্থার চলমান ক্রয় পরিকল্পনার পরিপ্রেক্ষিতে আরও ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল কেনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
দুই লিটার পেট বোতলে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে গত ২৫ আগস্ট স্থানীয়ভাবে উন্মুক্ত জরুরি দরপত্র (জাতীয়) আহ্বান করা হয় এবং দুটি দরপত্র জমা পড়ে। দুটি দরপত্রই রেসপন্সিভ হিসেবে বিবেচিত হয়। এর মধ্যে সর্বনিম্ন দরদাতা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে সিটি এডিবল অয়েল লিমিটেড। অগ্রিম আয়কর, মূসক ও টিসিবির গুদামে পরিবহনসহ প্রতি লিটার সয়াবিনের ক্রয় মূল্য দাঁড়াচ্ছে ১৬০ টাকা ৩০ পয়সা। সে হিসাবে ৮০ লাখ লিটার সয়াবিন তেল ক্রয়ে মোট ব্যয় হবে ১২৮ কোটি ২৪ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, টিসিবির ক্রয় প্রস্তাবে প্রতি লিটার সয়াবিনের দর ১৬৯ টাকা ৭৯ পয়সা প্রাক্কলন করা হয়েছিল। সে হিসেবে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে প্রস্তাবিত দর প্রতি লিটারে ৯ টাকা ৪৯ পয়সা কম। বর্তমানে স্থানীয় বাজারে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলের গড় খুচরা মূল্য হচ্ছে ১৭২ টাকা ৫০ পয়সা। সে হিসাবে প্রতি লিটার সয়াবিন তেলে দাম কম পড়ছে ১২ টাকা ২০ পয়সা।
সয়াবিন তেল সরবরাহের অপর দরপত্রটি ছিল সুপার অয়েল রিফাইনারি লিমিটেড-এর। এ কোম্পানি প্রস্তাবিত দর ছিল প্রতি লিটার ১৬০ টাকা ৯২ পয়সা।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, চলতি অর্থবছরে টিসিবির রাইস ব্রাণ তেল কেনার লক্ষ্যমাত্রা হচ্ছে ২ কোটি ৪০ লাখ লিটার। এর বিপরীতে এ পর্যন্ত ১ কোটি ৬৫ লাখ লিটার রাইস ব্রাণ তেল কেনার চুক্তিপত্র সম্পাদিত হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় ৬৫ লাখ লিটার রাইস ব্রাণ তেল কেনা হবে দুটি লটে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে। এর মধ্যে ১ম লটে ৫০ লাখ লিটার রাইস ব্রাণ তেল সরবরাহ করবে মজুমদার প্রোডাক্টস লিমিটেড এবং ২য় লটে ১৫ লাখ লিটার রাইস ব্রাণ তেল সরবরাহ করবে এমআরটি এগ্রো প্রোডাক্টস বিডি লিমিটেড। দর কষাকষির মাধ্যমে উভয় প্রতিষ্ঠান থেকে অগ্রিম আয়কর, মূসক ও টিসিবির গুদামে পরিবহনসহ প্রতি লিটার রাইস ব্রাণ তেল ১৫৯ টাকা দরে কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ৬৫ লাখ লিটার রাইস ব্রাণ তেল কিনতে মোট ব্যয় হবে ১০৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।
সূত্র জানায়, টিসিবির ক্রয় প্রস্তাবে প্রতি লিটার রাইস ব্রাণ তেলের দর ১৭৫ টাকা ৪০ পয়সা প্রাক্কলন করা হয়েছিল। সে হিসেবে প্রাক্কলিত দরের চেয়ে প্রস্তাবিত দর প্রতি লিটারে ১৬ টাকা ৪০ পয়সা কম। তবে এর আগে সর্বশেষ গত ৭ আগস্ট প্রতি লিটার রাইস ব্রাণ তেল ১৬১ টাকা ৫০ পয়সা দরে কেনা হয়েছিল। সে হিসাবে এবার প্রতি লিটারে ২ টাকা ৫০ পয়সা কম পড়ছে।