এখন টাকায় নয়, ডলারে ঘুষ লেনদেন হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট।
সিলেট জেলা কারাগারে একই নামের একজনের পরিবর্তে অন্যজন চাকরি করছেন, এ সংক্রান্ত রিট আবেদনের শুনানিতে মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ মন্তব্য করেন।
আদালতে দুদকের পক্ষে শুনানি করেন মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
শুনানিতে আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, একজন চাকরিপ্রার্থী পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছেন। তার পরও তাকে জয়েন না করিয়ে একই নামের অন্য একজনকে চাকরি করতে দেওয়া হয়। এমন অভিযোগ ওঠায় চাকরিপ্রার্থী রিট করেছেন।
এসময় রিটকারী আইনজীবীর উদ্দেশে হাইকোর্ট বলেন, ‘এসব বিষয়ে তো দুদক ব্যবস্থা নিতে পারে। দুদক কি এগুলো দেখছে না? আপনারাই চাকরির সুযোগ করে দিয়েছেন।’
তখন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান বলেন, ‘এজন্যই তো আমরা এসেছি।’ আদালত আইনজীবীকে বলেন, ‘এখন আসছেন। ধরা খাওয়ার পরে…।’
তখন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বাশার বলেন, ‘টেলিভিশনে প্রতিবেদন হয়েছে—সিলেট কারাগারে চাকরি না পেয়েও ২০০ কারারক্ষী কাজ করছেন। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৮৮ জনকে পাওয়া গেছে যাদের চাকরি না হলেও কাজ করছেন। ওই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ শুনানি হয়েছে।’
এ সময় আদালত আইনজীবীদের উদ্দেশে বলেন, ‘গণেশ যদি সব জায়গায় রাজত্ব করে, তাহলে তো হলো না। আর এখন তো টাকায় নয়, ঘুষ লেনদেন হয় ডলারের মাধ্যমে।’
শুনানির একপর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলেন, ‘গণমাধ্যমে দেখা যায়, ঘুষ লেনদেনে বস্তায় বস্তায় টাকা লেনদেন হয়। তখন বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারক বলেন, এখন আর টাকায় নয়, ঘুষ নিচ্ছে ডলারে।’
ছদ্মবেশ ধারণ ও বিভিন্ন জাল-জালিয়াতি করে চট্টগ্রাম এবং সিলেটে ২০০ জন কারারক্ষী চাকরি করছেন বলে সম্প্রতি গণমাধ্যমে খবর প্রচারিত হয়। পরে কারা কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে ৮৮ জনের বিরুদ্ধে জালিয়াতির প্রমাণ পায়। এর মধ্যে তিনজনকে পাওয়া যায়, যারা একজনের পরিবর্তে আরেকজন চাকরি করছেন।