সেজান মাহমুদ
লেখক পরিচিতি:সেজান মাহমুদ একজন স্বনামধন্য কথাসাহিত্যিক, গীতিকার, ছড়াকার। পেশাগতভাবে চিকিৎসা বিজ্ঞানী এবং শিক্ষক। আমেরিকার ইউনিভার্সিটি অব সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা কলেজ অব মেডিসিনের সহকারী ডিন এবং প্রফেসর হিসাবে কর্মরত।
মানুষ একদিকে যেমন ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র ভাইরাস দিয়ে নাস্তানবুদ হচ্ছে; অন্যদিকে আবিস্কারে জন্ম দিচ্ছে বিষ্ময়কর সব মাইলস্টোনের। ক্লোন ক’রে ভেড়া, ইঁদুর, গরু, গিনিপিগ সৃষ্টি তো এখন ছেলেখেলার মতো। ক্লোন হলো, ধরা যাক একটা ভেড়ার চামড়া থেকে কোষ নিয়ে হবহু সেই ভেড়ার আরেকটি কপি তৈরি করা।
পরের ধাপে বিজ্ঞানীরা শুক্রাণু এবং জিম্বানু ছাড়াই জীবের জন্ম দেয়া, অর্থাৎ বাবা মা ছাড়া শিশুর জন্ম দিতে সক্ষম হয়েছে। কিন্তু এইসব পরীক্ষা মানুষ কে নিয়ে করার অনুমতি দেয়া হয় না। যদিও অনেকেই ধারণা করেন গোপনে মানুষকে নিয়েও এইসব গবেষণা হচ্ছে; কিন্তু তা ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসাবে নাকচ করে দেয়া যায়।
এবার বিজ্ঞানীরা বাবা মা ছাড়া ( বলাই বাহুল্য বাবার কাছে শুক্রানু আর মায়ের কাছে থেকে ডিম্বানু আসে যা থেকে বাচ্চা হয়) ল্যাবেরেটরিতে মানুষের বাচ্চার প্রথম স্টেপ সফলভাবে তৈরি করেছে। ছবিটি সেই মানব কোষ যাকে বলে ব্লাস্টোসাইট। শুক্রানু বা স্পার্ম এবং ডিম্বানু বা ওভাম মিলিত হওয়ার চারদিন পরে যে কোষগুলো তৈরি হয় সেটাকে বলে ব্লাসটোসাইট- তা থেকেই ধীরে ধীরে মানব শিশুর জন্ম হয়।
বাবা মা ছাড়া শুক্রানু বা স্পার্ম এবং ডিম্বানু নিয়ে টেস্ট টিউব বাচ্চা হয়েছে বহু আগেই। এটা কিন্তু তা না। এটা একেবারে সৃষ্টি করা স্টেম কোষ থেকে যা সৃষ্টিকর্তার কাজ!
তারমানে সায়েন্স ফিকশনে যা লিখেছি তা সত্য হতে যাচ্ছে দিনে দিনে। আপনি হয়তো দোকানে অর্ডার দেয়ার মতো অর্ডার দেবেন- আমার একটি ছেলে দরকার যে আইনস্টাইনের মতো বুদ্ধি আর রবীন্দ্রনাথের মতো কাব্যময় হবে। কিম্বা প্রিয়তমা মরে গেলে তার দ্বিতীয় সংস্করণ তৈরি করে নেয়া।
এটা কি ঈশ্বর ঈশ্বর খেলা না? এই খেলার অনেক বিপদও আছে। সেদিকে নাই বা গেলাম। মানুষের আবিস্কারের ক্ষমতা যেমন সীমাবদ্ধ, তেমনি সম্ভাবনাও অসীম! সেই সম্ভাবনার একটি ধাপ প্রকাশিত হয়েছে গত মাসে- অপ্রকাশিত যা তা খোলাসা করে বলি- প্রাণ সৃষ্টি সম্ভব, মানুষের দ্বারাই, আর কিছুর প্রয়োজন নেই!!!