নিজেদের ইতিহাসে সবচেয়ে বাজে পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশ শ্রীলঙ্কা। অর্থনৈতিকভাবে ভুগতে থাকা দেশটিতে খাবার এবং জ্বালানির জন্য আন্দোলন শুরু করেছে সাধারণ নাগরিকরা। আন্দোলন এতোটাই তীব্র আকার ধারণ করেছে যে তা সরকার বিরোধী বিক্ষোভে পরিণত হয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে দেশটির সরকারের ২৬ মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর পদত্যাগ করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে তাই প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে ঐক্যের সরকারের ডাক দিয়েছেন।
সোমবার (৪ এপ্রিল) প্রেসিডেন্ট কার্যালয় থেকে দেওয়া এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘পার্লামেন্টে থাকা সব রাজনৈতিক দলকে মন্ত্রিসভায় পদ গ্রহণ এবং জাতীয় সংকট সমাধানের প্রচেষ্টায় নিজেদের সম্পৃক্ত করার জন্য প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপাকসে সবাইকে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন।’ বর্তমান পরিস্থিতিকে জাতীয় প্রয়োজন বিবেচনা করে সব নাগরিক এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের স্বার্থে এক সঙ্গে কাজ করা প্রয়োজন বলেও বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।
শ্রীলঙ্কার প্রতিটি শহর এবং গ্রামে হাজার হাজার মানুষ সরকার বিরোধী বিক্ষোভে অংশ নিয়েছে উল্লেখ করে সরকারি ওই বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গণতান্ত্রিক উপায়ে গভীরতম সঙ্কট নিরসনের সঠিক পথ খুঁজে পাওয়া সম্ভব।
এক টুইট বার্তায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর অজিথ নিভার্ড ক্যাবরাল। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘সব মন্ত্রীদের পদত্যাগের পরিপ্রেক্ষিতে আজ আমিও নিজের পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছি।’
এদিকে শেয়ারবাজারে দর পতন অব্যাহত থাকায় সোমবার কলম্বো স্টক এক্সেচেঞ্জে দুইবার লেনদেন বন্ধ করে দেয় কর্তৃপক্ষ।
স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অর্থনৈতিক সংকটে পড়েছে শ্রীলঙ্কা। বিদেশি মুদ্রার অভাবে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য আমদানি ব্যাহত হচ্ছে। দাম পরিশোধ করতে না পারায় জীবন রক্ষাকারী ওষুধ থেকে শুরু করে সিমেন্ট পর্যন্ত সব গুরুত্বপূর্ণ পণ্যের ভয়াবহ সংকট তৈরি হয়েছে। লোকজনকে জ্বালানির জন্য দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করতে হচ্ছে। প্রতিদিন প্রায় ১৩ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের কবলে পড়তে হচ্ছে। কাগজের অভাবে স্কুলের পরীক্ষা ও দৈনিক পত্রিকার প্রকাশনা বন্ধ হয়ে গেছে। বিদ্যুৎ সংকটে এমনকি সড়কবাতিও বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।