এমন ফাইনাল ক্রিকেটবিশ্ব কখনোই দেখেনি। যে ম্যাচে কেউ জেতেনি আবার কেউ হারেনি! এমন ম্যাচেই বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুললো ইংল্যান্ড! সমান সমান লড়াইয়েও যখন সামনে দিয়ে প্রতিপক্ষ ট্রফি উঁচিয়ে উল্লাস করে তখন সেটা চেয়ে দেখা ছাড়া আর কিছুই করার থাকে না। শুধু দুর্ভাগ্যকেই দুষতে পারে নিউজিল্যান্ড দল। আর ভাগ্য দেবীর সাহায্য নিয়েই প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপের শিরোপা ঘরে তুললো ক্রিকেটের জনক ইংল্যান্ড।
নিউজিল্যান্ডের ২৪১ রানের জবাবে ইংল্যান্ডও ২৪১। ম্যাচ গড়ালেঅ সুপার ওভারে। সেখানে ইংল্যান্ড আগে ব্যাটিং করে করলো ১৫, জবাব দিতে নেমে নিউজিল্যান্ডও করলো ১৫! কিন্তু হারলো কে আর জিতলো কে? অবাক হওয়ার কিছু নেই। আইসিসির নিয়মানুযায়ী সুপার ওভারেও ম্যাচ টাই হলে ম্যাচের নির্ধারক হবে বাউন্ডারির সংখ্যায়। পুরো ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ১৬টি বাউন্ডারি মেরেছিলো আর ইংল্যান্ড ২৩টি। ফলে চারবারের ফাইনালে এসে শিরোপা উৎসবে মাতলো ইংলিশরা। এই নিয়ে টানা তিনবার স্বাগতিক দল শিরোপা জিতলো। ২০১১-তে ভারত, ২০১৫-তে অস্ট্রেলিয়া এবং এবার ইংল্যান্ড।
১৯৭৯, ১৯৮৭ ও ১৯৯২ তিন আসরের ফাইনাল খেলে প্রতিপক্ষকে শিরোপা উৎসব করতে দেখেছে ইংল্যান্ড। ক্রিকেটের জনক হয়েও কখনো বিশ্ব আসরের শিরোপাটা ছুঁয়ে দেখতে পারেনি ইংলিশরা। বারবার ফিরতে হয়েছে খালি হাতে। সেই সঙ্গে গত আসরে গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নেয়ায় যেনো মুষড়ে পড়েছিলেন ইয়ন মরগানের সেনারা। কিন্তু সেখান থেকেই নিজেদের প্রত্যাবর্তনের একটা গল্প লেখার স্বপ্ন দেখছিলেন ইংল্যান্ড দলের ক্রিকেটাররা। আর সে গল্পটা লিখলেন বেশ ভালোভাবেই। দেশের জনগণকে প্রথমবার শিরোপা জয়ের আনন্দে ভাসালেন বেন স্টোকস ও জস বাটলাররা।
‘ক্রিকেটের মক্কা’ খ্যাত লর্ডসের মাটিতে একটা জমজমাট ফাইনাল উপহার দিয়েছে ইংল্যান্ড-নিউজিল্যান্ড। ম্যাচে বড় স্কোর না হলেও দারুণ কিছু মুহূর্তের উপহার দিয়েছেন লকি ফার্গুসন, জিমি নিশাম, জস বাটলার ও বেন স্টোকসরা। ম্যাচের একেক সময় একেক অনুভূতি পেয়েছেন বিশ্বের সব ক্রিকেটভক্তরা। বিশ্বকাপের অন্য ফাইনালের মতো ছিলো না এবারের ফাইনাল। এবারের ফাইনালের প্রতিটা পরতে পরতে ছিলো উত্তেজনা।
ইংল্যান্ডের ক্রিকেটাররা যখন উচ্ছ্বাসে ভাসছেন, তখন চোখের জলে আইসিসির নিয়মের প্রতি হয়তো গভীর অনুযোগ জানাচ্ছিলেন নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেটাররা। হাটু মুড়ে বসে জোফরা আরচার যখন আবেগী কান্না কাঁদছিলেন, তখন মার্টিন গাপটিল ও কেন উইলিয়ামসনরা আবারও একবার হৃদয় ভাঙার বেদনা নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন। এবার হয়তো হলো না কিন্তু কোন এক উত্তরসূরীর হাতে শিরোপা দেখার আশা নিয়েই অবসরে যাবেন উইলিয়ামসনরা।