করোনাভাইরাস শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিশ্বের সব দেশই মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) প্রবৃদ্ধিতে ব্যাপক প্রভাব পড়েছে। যার ফলশ্রুতিতে অনেক দেশের প্রবৃদ্ধি ধনাত্মক থেকে ঋণাত্মকে পৌঁছে অর্থনৈতিকভাবে হিমশিম খাচ্ছে। চলতি বছর থেকে প্রবৃদ্ধি পুনরুদ্ধারের পূর্বাভাস থাকলেও করোনার নতুন ভেরিয়েন্টে ওমিক্রনে আবারও হুমকিতে পড়তে যাচ্ছে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি।
বুধবার (১২ জানুয়ারি) বিশ্বব্যাংক থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। বিশ্বব্যাংকের সর্বশেষ গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টস রিপোর্টে এমন তথ্য উঠে এসেছে।
২০২১ সালে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৫ দশমিক ৫ শতাংশ ছিল। ২০২২ সালে তা কমে হবে ৪ দশমিক ১ শতাংশ এবং ২০২৩ সালে ভয়াবহভাবে কমে হবে ৩ দশমিক ২ শতাংশ।
সংস্থাটি জানায়, করোনার নতুন ভেরিয়েন্ট ওমিক্রনে সামনে ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি। ২০২৩ সালের মধ্যে বৈশ্বিক প্রবৃদ্ধি আরও কমবে। উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে ‘হার্ড ল্যান্ডিং’র ঝুঁকি বাড়াচ্ছে মুদ্রাস্ফীতি ও ঋণ। এর ফলে বৈষম্যের পাশাপাশি করোনা সংকটে অনিশ্চয়তা তীব্রতর হবে।
বিশ্বব্যাংক জানায়, ২০২১-২২ সালে একটি শক্তিশালী প্রত্যাবর্তনের পরে, বিশ্ব অর্থনীতি একটি সুস্পষ্ট মন্দার মধ্যে প্রবেশ করছে। করোনার নতুন ভেরিয়েন্টের নতুন হুমকি। মুদ্রাস্ফীতি, ঋণ এবং আয় বৈষম্য বৃদ্ধির মধ্যে যা উদীয়মান এবং পুনরুদ্ধারকে বিপন্ন করতে পারে।
বিশ্বব্যাংক রিপোর্টে জানানো হয়, ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের দ্রুত বিস্তার ইঙ্গিত দেয় যে মহামারিটি সম্ভবত নিকট মেয়াদে অর্থনৈতিক কার্যকলাপকে ব্যাহত করবে। এছাড়াও, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চীনসহ প্রধান অর্থনীতিতে একটি উল্লেখযোগ্য মন্দাভাব টেনে আনবে। উদীয়মান এবং উন্নয়নশীল অর্থনীতিতে চাহিদার উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। নতুন ভেরিয়েন্ট এমন একটা সময়ে আসলো যখন উন্নয়নশীল অর্থনীতির দেশগুলো ঘুরে দাঁড়ানোর নানা পদক্ষেপ নিচ্ছিল। ওমিক্রন ক্রমাগত সরবরাহ-চেইন বাধা এবং মুদ্রাস্ফীতির চাপ এবং বিশ্বের বড় অংশে উচ্চতর আর্থিক দুর্বলতা তৈরি করবে। এতে বৈশ্বিক একটি ঝুঁকি বাড়াতে পারে। সামনের সময় আরও কঠিন হবে।
বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাস জানান, বিশ্ব অর্থনীতি একই সঙ্গে কোভিড-১৯, মুদ্রাস্ফীতি এবং নীতির অনিশ্চয়তার মুখোমুখি হচ্ছে। ক্রমবর্ধমান বৈষম্য এবং নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ উন্নয়নশীল দেশগুলোর জন্য বিশেষভাবে ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে।
তিনি বলেন, করোনা সংকট মোকাবিলায় অধিক দেশকে সম্পৃক্ত করতে হবে। বিশ্বকে একটি অনুকূল প্রবৃদ্ধির পথে রাখার জন্য সমন্বিত আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ এবং জাতীয় নীতি প্রতিক্রিয়াগুলো জোরদার করা জরুরি।