মহামরি করোনাভাইরাসের উৎপত্তি নিয়ে নতুন তথ্য হাজির করেছেন চীনের এক দল গবেষক। তাদের দাবি, উহান থেকে নয়, বরং ভারত ও বাংলাদেশ থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি হয়ে থাকবে। চিকিৎসাবিষয়ক সাময়িকী ল্যানসেটের একটি প্রি-প্রিন্ট প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত গবেষণা প্রতিবেদনে এ দাবি করা হয়েছে।
অবশ্য বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, এই গবেষণা অত্যন্ত ‘ত্রুটিপূর্ণ’ এবং করোনাভাইরাস নিয়ে আমাদের যে বোধগম্যতা তাতে এটি নতুন করে কিছুই যুক্ত করেনি।
ল্যানসেট জানিয়েছে, তাদের এই প্রি-প্রিন্ট প্ল্যাটফর্মে প্রকাশিত প্রতিবেদন কোনো ক্লিনিক্যাল বা জনস্বাস্থ্যের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা উচিত নয়। এগুলো প্রাথমিক তথ্য এবং পিয়ার পর্যালোচনা করা হয়নি। চীনা গবেষকদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা জীবাণুর উৎস শনাক্তে তারা পলিজেনেটিক অ্যানালাইসিস পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন।
তাদের মতে, সব জীবকোষের মতো ভাইরাসও পুনরুৎপাদনের সময় পরিবর্তিত হয়, অর্থাৎ এটির ডিএনএতে সূক্ষ্ম পরিবর্তন ঘটে। এই পরিবর্তন থেকে এর উৎস অনুসন্ধান করা যায়। যেখানে ভাইরাসটির কোষে মিউটেশন বা পরিবর্তনের পরিমাণ কম পাওয়া যাবে, সেই স্থানটিই ভাইরাসের উৎস হতে পারে। এই পদ্ধতি ব্যবহার করে দেখা গেছে, করোনাভাইরাসটির ‘আদি’ রূপ উহান থেকে আসেনি। বরং এটি অন্য আরো আটটি দেশ থেকে আসতে পারে। এই দেশগুলো হলো: বাংলাদেশ, যুক্তরাষ্ট্র, গ্রিস, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইতালি, চেক প্রজাতন্ত্র, রাশিয়া ও সার্বিয়া। যেহেতু বাংলাদেশ ও ভারতের নমুনায় এই ভাইরাসের ডিএনএতে কম মাত্রায় মিউটেশন পাওয়া গেছে, তাই এ দুই প্রতিবেশী দেশ থেকেই প্রথম সংক্রমণ ঘটে থাকতে পারে।
চীনা গবেষকদের দাবি, নভেম্বরে নয় বরং ২০১৯ সালের জুলাই বা আগস্টে ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব হয়েছিল। তারা বলেছেন, ‘২০১৯ সালের মে থেকে জুনের মধ্যে উত্তর-মধ্য ভারত ও পাকিস্তানের ওপর দিয়ে তীব্র দাবদাহ বয়ে গেছে। এর ফলে এ অঞ্চলে তীব্র পানির সংকট ছিল। এই সংকটের কারণে বানরসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণীর মধ্যে পানি নিয়ে সংঘাত শুরু হয়। এ থেকে মানুষ ও বন্যপ্রাণীর মধ্যে সংস্পর্শের সম্ভাবনা নিশ্চিতভাবে বেড়েছে।’