বিশ্বকাপের ৮৮ বছরর ইতিহাসে এই প্রথম শীতকালে হতে যাচ্ছে বিশ্বকাপ। তার ওপর রয়েছে নানা বিধি-নিষেধের বেড়াজাল। শ্রমিক শোষণের মতো ঘটনা। সে কারণে প্রচুর সমালোচনার শিকার হচ্ছে কাতার। বিশেষ করে ইউরোপীয় ও পশ্চিমাদের।
তবে কাতারের সমালোচনা করার বিষয়টি ভালোভাবে নেননি ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো। নানামুখী সমালোচনায় তিনি রীতিমতো ক্ষুব্ধ। শনিবার কাতার বিশ্বকাপের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান সংক্রান্ত সংবাদ সম্মেলনে তিনি সমালোচনাকারীদের একহাত নিয়েছেন। জানিয়েছেন কাতারের সমালোচনা করার আগে নিজেদের ৩ হাজার বছরের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা চাও।
‘বিশ্বব্যাপী আমরা ইউরোপীয়রা গেল ৩ হাজার বছরে যা করেছি, কাউকে নৈতিক উপদেশ দেওয়ার আগে সেগুলোর জন্য পরবর্তী ৩ হাজার বছর আমাদের ক্ষমা চাওয়া উচিত। কতোজন ইউরোপীয় ও পশ্চিমা ব্যবসায়ী কাতারে শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘনের বিষয় নিয়ে কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলেছেন? অথচ তারা কিন্তু ঠিকই কাতার থেকে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার আয় করে নিয়েছেন। তাদের কেউ কিন্তু শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে টু শব্দটি করেননি। কারণ, শ্রমিকদের অধিকার নিয়ে আইন করলে তাদের লাভ কম হতো। তবে আমরা (ফিফা) করেছি। তাদের ক্ষতিপূরণ দিচ্ছি। ফিফা কিন্তু ইউরোপীয় ও পশ্চিমা ব্যবসায়ীদের চেয়ে অনেক কম লাভ করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আজ আমার নিজেকে একজন কাতারি মনে হচ্ছে, একজন আরব মনে হচ্ছে, একজন আফ্রিকান মনে হচ্ছে, একজন সমকামী, প্রতিবন্ধী, একজন পরিযায়ী শ্রমিক মনে হচ্ছে। অবশ্যই আমি একজন কাতারি নই, আরব নই, আফ্রিকানও নই, নই সমকামী কিংবা প্রতিবন্ধী। কিন্তু আমি তাদের বিষয়গুলো অনুভব করতে পারছি। কারণ, আমি জানি একজন বিদেশি হিসেবে বিদেশের মাটিতে বৈষম্যের শিকার হলে কেমন লাগে। বুলিং এর শিকার হলে কেমন লাগে।’
‘ছোটবেলায় আমি বুলিং-এর শিকার হয়েছি। কারণ, আমার লাল চুল ছিল, মুখে গুড়ি গুড়ি বাদামী দাগ ছিল। পাশাপাশি আমি দেখতে ইতালিয়ানদের মতো ছিলাম। এরকম হলে আপনি কি করতেন? আপনি হয়তো সমঝোতা করতেন, বন্ধুত্ব করার চেষ্টা করতেন।’
‘অভিযোগ কিংবা সমালোচনা, মারামারি, অপমান করা বাদ দিয়ে সমঝোতা করুন। এবং এটাই আমাদের এখন করা উচিত।’ যোগ করেন তিনি।