দেশের কিংবদন্তি সংগীতশিল্পী রুনা লায়লা। দীর্ঘ সংগীত জীবনে ১৮টি ভাষায় অসংখ্য গান গেয়েছেন তিনি। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন এই কণ্ঠশিল্পীর আজ (১৭ নভেম্বর) ৬৮তম জন্মদিন।
১৯৫২ সালের ১৭ নভেম্বর সিলেট জেলায় জন্মগ্রহণ করেন রুনা লায়লা। তার বাবার নাম সৈয়দ মোহাম্মদ ইমদাদ আলী ও মা আমিনা লায়লা। বাবার চাকরির সূত্রে রুনা লায়লার শৈশব এবং কৈশোরের কিছু সময় তৎকালীন পশ্চিম পাকিস্তানে কেটেছে। মাত্র ৬ বছর বয়সে রুনা লায়লা প্রথম মঞ্চে গান পরিবেশন করেন। তার প্রথম গান প্রকাশিত হয় ১৯৬৪ সালে । অল্প বয়স থেকে স্টেজে সংগীত পরিবেশনের পাশাপাশি করাচি রেডিওতেও গান গাইতেন রুনা লায়লা।
১৯৬৭ সালে পাকিস্তানি চলচ্চিত্রে ‘দাইয়ারে দাইয়ারে দাইয়া’ গানটি গেয়ে ব্যাপক প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন রুনা লায়লা। ১৯৬৮ সালে ঢাকার সুরকার সুবল দাস রুনা লায়লাকে দিয়ে প্রথম ‘স্বরলিপি’ চলচ্চিত্রে গান গাওয়ান। ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার পর নিজের সিদ্ধান্তে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে চলে আসেন রুনা লায়লা। ১৯৭৪ সালের শুরুতে প্রয়াত সত্য সাহার সুরে ‘জীবন সাথী’ চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে প্রথম প্লে-ব্যাক করেন তিনি। এরপর অসংখ্য চলচ্চিত্রের গানে কণ্ঠ দেন তিনি।
বাংলাদেশে চলচ্চিত্র, পপ ও আধুনিক সংগীতের জন্য বিখ্যাত রুনা লায়লা। বাংলাদেশের বাইরে গজল গায়িকা হিসেবে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশে তার সুনাম আছে।
১৯৭৪ সালে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনশিপসের (আইসিসিআর) আমন্ত্রণে ভারত সফর করেন রুনা। এর মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক পাশও করেন। কল্যাণজি-আনন্দজির সুরে হিন্দি ছবি ‘এক সে বারকার এক’-এর টাইটেল সংয়ের প্লেব্যাক ছিল তার প্রথম হিন্দি গান। এছাড়া ‘দামাদাম মাস্ত কালান্দার’-এর কথা সবারই জানা- যার জন্য ভারতে তার নাম হয়েছিল ‘দামদাম গার্ল’। তার গাওয়া অন্যান্য হিন্দি গানের মধ্যে আছে ‘দে দে পেয়ার দে’, ‘আও সুনলো’, ‘মেরা বাবু ছেল ছাবিলা’ ইত্যাদি।
বাংলাদেশে ৭ বার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার, ভারতের সায়গল পুরস্কার, পাকিস্তানের দুইবার নিগার পুরস্কার, দুইবার গ্র্যাজুয়েট পুরস্কার, সমালোচক পুরস্কার ও জাতীয় সংগীত পরিষদ স্বর্ণপদকসহ দেশ-বিদেশের নানা পুরস্কার অর্জন করেছেন রুনা লায়লা। এ পর্যন্ত ১৫ হাজারেরও বেশি গানে কণ্ঠ দিয়েছেন এই গুণী সংগীতশিল্পী। ব্যক্তিগত জীবনে রুনা লায়লা দেশের জনপ্রিয় চিত্রনায়ক আলমগীরের সহধর্মিনী।