ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীরা যদি তাদের চিকিৎসার অংশ হিসেবে অ্যাসপিরিন ওষুধ সেবন শুরু করেন, তাহলে ক্যানসারে তাদের মৃত্যুঝুঁকি ২০ শতাংশ কমাতে সহায়তা করতে পারে। নতুন একটি গবেষণায় এমন তথ্য উঠে এসেছে।
যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ১৮ ধরনের ক্যানসার রোগীদের নিয়ে ১১৮টি গবেষণাপত্র পর্যালোচনা করে এ তথ্য জানতে পেরেছেন। গবেষণাপত্রগুলোতে প্রায় আড়াই লাখ ক্যানসার আক্রান্ত রোগীর তথ্য ছিল, যারা অ্যাসপিরিন সেবন করেন বলে উল্লেখ করেছিলেন। পর্যালোচনায় দেখা গেছে, এ বিষয়টি ক্যানসারে মৃত্যুঝুঁকি প্রায় ২০ শতাংশ হ্রাসের সঙ্গে সম্পর্কিত ছিল।
গবেষকদের মতে, বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের সাপ্লিমেন্টারি ট্রিটমেন্ট হিসেবে অ্যাসপিরিনের কার্যকারিকার প্রমাণ দেখা গেছে। যা এর ব্যবহার যুক্তিসঙ্গত তা ইঙ্গিত দেয়। এ ব্যাপারে রোগীদের অবহিত করা উচিত।
নতুন এই গবেষণাপত্র ইক্যানসারমেডিক্যালসায়েন্স নামক ওপেন-অ্যাকসেস জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে। মূল গবেষক ড. পিটার ইলউড বলেন, ‘আমাদের গবেষণায় ক্যানসারের সঙ্গে সম্পর্কিত জৈবিক প্রক্রিয়াগুলোতে অ্যাসপিরিনের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করা হয়েছে। বিভিন্ন ধরনের ক্যানসারের ক্ষেত্রে অ্যাসপিরিনের একইরকম কার্যকারিতা রয়েছে বলে মনে হয়েছে। সব মিলিয়ে আমরা দেখেছি, শরীরে ক্যানসার নির্ণয় হওয়ার পর যেকোনো সময়ে অ্যাসপিরিন সেবন শুরু করা প্রায় ২০ শতাংশ রোগী বেচেঁ ছিলেন, ওষুধটি সেবন না করা রোগীদের তুলনায়।’
গবেষক দলটি অ্যাসপিরিনের ঝুঁকিগুলোতেও নজর দিয়েছেন। ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে কিছু সংখ্যক রোগীর রক্তক্ষরণ হয়েছিল। তবে এ কারণে অতিরিক্ত কোনো মৃত্যুর প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
ড. ইলউড বলেন, ‘আমাদের পর্যালোচনায় দেখা গেছে, অ্যাসপিরিন কেবল মৃত্যুর ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করে না, পাশাপাশি শরীরের মধ্যে ক্যানসারের বিস্তার হ্রাস করতেও ভূমিকা রাখে।’
গবেষক দলটির মতে, ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের অ্যাসপিরিন সেবনে মৃত্যুহার উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস পায়- এ পরামর্শ দেওয়ার যথেষ্ট প্রমাণ এখন রয়েছে। আর এই সুবিধাটি একটি বা কয়েকটি ক্যানসারের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
ড. ইলউড বলেন, ‘ক্যানসারে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় অ্যাসপিরিনকে অন্যতম একটি ওষুধ হিসেবে গুরুত্ব দেওয়া যেতে পারে। তবে এটাও মনে রাখতে হবে, অ্যাসপিরিন কোনো চিকিৎসার সম্ভাব্য বিকল্প নয়।’
তথ্য: রাইজিংবিডি