ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে একটি আবাসিক ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। হামলায় অন্তত ৩৬ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
গাজার মিডিয়া অফিসের বরাত দিয়ে শনিবার (১৬ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে তুর্কি বার্তা সংস্থা আনাদোলু এজেন্সি।
গাজার মিডিয়া অফিস এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েলি দখলকার বাহিনী শুক্রবার রাতে মধ্য গাজায় অন্তত ১২টি বাড়ি লক্ষ্য করে বোমা হামলা চালিয়েছে। নুসিরাত শরণার্থী শিবিরের পশ্চিমে ইত-তাবাতিবি পরিবারের বাড়িতে বোমা হামলায় ৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান এবং স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় পাঁচ মাসের বেশি সময় ধরে ইসরায়েলের অব্যাহত হামলায় এখন পর্যন্ত ৩১ হাজার ২০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী এবং শিশু। এ ছাড়া হামলায় ৭২ হাজারেরও বেশি মানুষ আহত হয়েছেন।
জাতিসংঘের মতে, গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসনে খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে ভূখণ্ডের ৮৫ শতাংশ বাসিন্দা অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। সেই সঙ্গে অঞ্চলটির ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
জাতিসংঘ আরও বলছে, দীর্ঘ এ সময় ধরে চলা সংঘাতের কারণে মানবিক সংকটে দিন পার করছেন ফিলিস্তিনিরা। এছাড়াও খাবার, পানি, ওষুধ ও প্রয়োজনীয় মানবিক সহায়তার অভাবে উপত্যকাটির ২৩ লাখেরও বেশি বাসিন্দা চরম ক্ষুধা ও ভয়াবহ অপুষ্টিতে ভুগছেন। এর মধ্যে রাফাহ নগরীতে আশ্রয় নিয়ে আছেন আনুমানিক ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি। তারা ইসরায়েলের আক্রমণ থেকে বাঁচতে গাজার অন্যান্য স্থান থেকে এখানে এসে আশ্রয় নিয়েছেন।
এদিকে, গতকাল শুক্রবার (১৫ মার্চ) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু রাফায় সেনাবাহিনীকে স্থল অভিযানের অনুমোদন দিয়েছেন। রাফায় ইসরায়েলের এই অভিযানের বিরোধিতা করেছে যুক্তরাষ্ট্র।
আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। জানুয়ারিতে একটি অন্তর্বর্তীকালীন রায়ে তেল আবিবকে গণহত্যামূলক কর্মকাণ্ড বন্ধ করতে এবং গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবিক সহায়তা প্রদানের নিশ্চয়তা দেওয়ার ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।