মুজিববর্ষ উপলক্ষে দেশের গৃহহীন ও ভূমিহীনদের ঘর উপহার দিচ্ছে সরকার। এই ঘর উপহার দেওয়াকে জীবনের সব থেকে আনন্দের দিন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (৩০ মার্চ) জাতীয় সংসদে জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য ফখরুল ইমামের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
স্বাধীনতার পরে ভূমিহীন ও গৃহহীনদের জন্য গুচ্ছগ্রাম তৈরির কাজ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুরু করেছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার স্বপ্ন ছিলো দেশের কোন মানুষ গৃহহীন, ভূমিহীন ও ঠিকানা বিহীন থাকবে না। এটা জাতির পিতার লক্ষ্য ছিলো।’
জাতির পিতার লক্ষ্য পূরণ করাই একমাত্র কাজ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার লক্ষ্য মানুষকে উন্নত জীবন দেওয়া। ১৯৯৬ সালে সরকারে আসার পর থেকে ভূমিহীন মানুষদের ঘর তৈরি করে দিচ্ছি এবং পুনর্বাসন করে যাচ্ছি। আমরা শুধু ঘর দিয়ে বসে থাকছি না, ঘর দেওয়ার পরে তাদের অর্থ দিচ্ছি, প্রশিক্ষণ দিচ্ছি। আয়ের পথও করে দিচ্ছি। আমার জীবনে বোধহয় ১৫ আগস্টের পরে যে দুঃখ, কষ্ট, যাতনা ভোগ করতে হয়েছে, সেই দুঃখের মধ্যে দিয়ে, বোঝা নিয়ে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলাম বাবার স্বপ্ন পূরণে।’
ঘর উপহার দেওয়ার পরে নিয়মিত খোঁজ খবর নিচ্ছেন বলে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এটা খুব ভালোভাবে মনিটরিং করে। কার্যালয়ের সচিব ও কর্মকর্তারা প্রায় যাচ্ছেন, তারা কেমন আছেন দেখছেন। দেখে আসার পরে যে ছবি আমাকে পাঠালো। ঘর পাওয়ার পরে মানুষের যে অনুভূতি, একটা ঠিকানা পেয়েছে, সেই আনন্দে যে কান্না—সেই হাসি, কান্না, বেদনা উপলব্ধি করে, সেদিন আমিও… একটা মানুষ, একটা পরিবার যার একটা ঠিকানা পেয়েছে। ঘর পাওয়ার পরে জীবনটা যে পাল্টে গেছে। অভাব, দারিদ্র নেই। নিজের জীবনকে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার জীবনে সবথেকে বড় আনন্দের দিন। একজন মানুষ, যার কিছু ছিলো না, তাকে একটা ঘর দিয়ে তার মুখে হাসি ফুটাতে পেরেছি। এর থেকে বড় আনন্দের কিছু হতে পারে না। সেদিন আনন্দে চোখের পানি রাখতে পারিনি। আমি অঝোর ধারায় কেঁদেছিলাম। কারণ এটাইতো আমার বাবার স্বপ্ন ছিলো।’
যেসব গৃহহীনদের ঘর দেওয়া হয়েছে তাদের অনেকের ঘরেই এখন ফ্রিজ, টেলিভিশনসহ নানান আসবাবপত্র দিয়ে সাজানো হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা মানুষকে যে ঠিকানা দিতে পেরেছি, জীবনটাকে পাল্টে দিতে পারলাম, এর চেয়ে আনন্দের আর কি হতে পারে।’
উল্লেখ্য, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায়ে ১ লাখ ১৭ হাজার ৩২৯টি ঘর উপহার দেওয়া হয়েছে। তৃতীয় পর্যায়ে ৬৫ হাজার ৪৭৪টি ঘর দেওয়া হবে।