চলে গেলেন বাংলা সাহিত্যের শক্তিমান লেখক ছোটগল্পকার, ঔপন্যাসিক সুবিমল মিশ্র (১৯৪৩-২০২৩)। বুধবার (৮ ফেব্রুয়ারি) ভোর রাতে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বয়স হয়েছিলো ৮০ বছর।
পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের বহু কবি, সাহিত্যিক সুবিমল মিশ্রের প্রয়াণের খবরটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করে শোক জানাচ্ছেন। তারা বলছেন, প্রতিষ্ঠান বিরোধীতার মহীরুহ ছিলেন সুবিমল মিশ্র। তার প্রয়াণ সার্বিকভাবে বাংলা সাহিত্যের জন্য অপূরণীয় ক্ষতি।
দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগে অসুস্থ ছিলেন পশ্চিমবঙ্গের এই সাহিত্যিক। শত অপ্রাপ্তির মধ্যেও পুরো জীবনে নিজের মতাদর্শ থেকে বিচ্যুত হননি মিশ্র। তার ৫০ বছরের সাহিত্যজীবনে কোনদিন কোন বাণিজ্যিক পত্রিকায় একটি অক্ষরও লেখেননি। বেশিরভাগ বই নিজেই দায়িত্বে সম্পাদনা, প্রকাশ ও বিক্রয় করেছেন ব্যতিক্রমী এই সাহিত্যিক।
সুবিমল মিশ্রের নিজের ও পাঠকদের ভাষায় তার লেখা ছোটগল্পগুলো অ্যান্টি-গল্প এবং উপন্যাসকে অ্যান্টি উপন্যাস বলা হয়। তার যে ছোটগল্পটি বাংলা সাহিত্যজগতে প্রথম আলোড়ন ফেলে সেটি হলো ৬৭ সালে প্রকাশিত ‘হারান মাঝির বিধবা বৌ এর মড়া অথবা সোনার গান্ধীমূর্তি’। এই গল্পটি ইংরেজিতে অনূদিত হয়। তার প্রায় সব লেখাতেই রাজনৈতিক, সামাজিক অবক্ষয়ের প্রতি দ্বিধাহীন বিশ্লেষণ ও মধ্যবিত্ত সমাজের যৌনতা নিয়ে অচ্ছুতপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ লক্ষ্য করা যায়। রাষ্ট্র ব্যবস্থা, তার শোষণ, সুবিধাভোগী শ্রেণির প্রতি ব্যঙ্গ, অবক্ষয়, দ্বন্দ্ব, লেখার কোলাজ এবং বিশেষভাবে নৈরাজ্য ইত্যাদি সুবিমলের লেখার অন্যতম বৈশিষ্ট্য।
তার প্রকাশিত বইগুলোর মধ্যে আছে তেজস্ক্রিয় আবর্জনা, আসলে এটি রামায়ণ চামারের গল্প হয়ে উঠতে পারতো, হাড়মটমটি, ক্যালাকাটা ডেটলাইন, ওয়ান পাইস ফাদার মাদার, চেটে চুষে চিবিয়ে গিলে।