প্রতারণাসহ বেশ কয়েকটি মামলায় ‘লাভ মাদার’ হিসেবে আখ্যা পাওয়া চাইনিজ লি ইয়ানশিয়াকে ২০ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন দেশটির আদালত। ৫৪ বছর বয়সী এই নারী ১১৮ শিশুকে দত্তক নিয়ে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচনায় আসেন। খবর বিবিসির।
বুধবার হেবেই প্রদেশের উয়ান কোর্টে চাঁদাবাজি, প্রতারণা এবং সামাজিক আদেশ অমান্য করায় লি দোষী সাব্যস্ত হন। লিকে কারাদণ্ডের পাশাপাশি ৩ লাখ ৮৮ হাজার ডলার জরিমানা করা হয়।
এছাড়াও তার প্রেমিকসহ আরও ১৫ জনকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়।
লি এক অনাথ আশ্রমের মালিক ছিলেন। তিনি অনাথ আশ্রমে শিশুদের লালন-পালনের কথা বলে প্রতারক চক্র গড়ে তোলেন। এর মাধ্যমে তিনি বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন।
তার প্রেমিক শা কিউআইয়ের বিরুদ্ধে সামাজিক আদেশ অমান্য, চাঁদাবাজি, জালিয়াতি এবং শিশুদের মারধরের অভিযোগ প্রমাণিত হয়। আদালত তাকে জরিমানাসহ ১২ বছর পাঁচ মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন। সেইসঙ্গে লিয়ের সহযোগীদের প্রত্যেকের চার বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
২০০৬ সালে লি আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে আলোচনায় আসেন। তিনি দেশটির হেবেই প্রদেশের ছোট্ট শহর ইয়ানের বাসিন্দা। সেখানে অনেক শিশুকে দত্তক নিয়ে তিনি সেসময় আলোচনায় আসেন।
সেসময় তিনি অভিযোগ করেন, ডিভোর্সের পরে তার প্রাক্তন স্বামী তার ছেলেকে মানব পাচারকারীদের কাছে বিক্রি করে দেন। অনেক চেষ্টার পর তিনি ছেলেকে ফিরে পান। এরপর তিনি অন্য শিশুদের সাহায্য করার সিদ্ধান্ত নেন।
কয়েক বছরের মধ্যেই তিনি ইয়ানের ধনী নারীর কাতারে নাম লেখান। ১৯৯০ সালে এক খনি কোম্পানিতে তিনি অর্থ লগ্নি করেন এবং পরে ওই খনির মালিক হন।
তিনি শিশুদের জন্য একটি এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করে তার নাম দেন ‘লাভ ভিলেজ’। ২০১৭ সাল পর্যন্ত ১১৮ জন শিশুকে তিনি দত্তক নেন।
তবে তার কার্যকলাপে দেশটির সরকারের সন্দেহ হলে তার ওপর নজরদারি শুরু হয়।
২০১৮ সালের মে মাসে পুলিশ জানতে পারে, ব্যাংকে তার বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে। তারা অনুসন্ধানে জানতে পারে, লি অবৈধ উপায়ে এই বিপুল অর্থের মালিক হয়েছেন।
নানা অবৈধ কাজে তিনি শিশুদের ব্যবহার করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। লিকে এরপর পুলিশ ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার করে।
পরে লির দত্তক নেওয়া শিশুদের দায়িত্ব নেয় দেশটির সরকার।