এবিএম সালেহ উদ্দীন
চারিদিকে আতঙ্ক! পৃথিবী অস্থির ও অশান্ত। কোথায় গিয়ে থামবে এই মহা আতঙ্ক।ধরণীকুলে অবস্থিত মানবালোকে নেমে এসেছে অন্ধকারের কালো ছায়া।মানব বিধ্বংসী মারণব্যধি করোনাভাইরাস বিপজ্জনকভাবে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বময়। মানুষের ভয় জড়িত জীবন হয়ে উঠছে ভীতিকরও আতঙ্কময়! নাগরিক জীবন থেকে শুরু করে পৃথিবীর সকল রাষ্ট্রপুঞ্জে বয়ে যাচ্ছে অনাকাঙ্খিত আতঙ্ক! কীভাবে এইরোগের নিরাময় কবে কী হবে পরিত্রাণের উপায় তা নিয়ে পৃথিবীর বড় বড় চিকিৎসক ও বিজ্ঞানীরা উৎকন্ঠিত ওগবেষণারত।কিন্তু কোথাও কুল-কিনারা পাওয়া যাচ্ছেনা!
চারিদিকে আতঙ্ক ও মৃত্যুর বিভীষিকা।ইতিহাসে মানবজাতির আবির্ভাবের সাথে রোগ-বালাইসহ অসংখরকমের ভাইরাসের(মহামারির) দৃষ্টান্ত আছে।যুগে যুগে শতাব্দীকালে অনেক বড় ধরণের মহামারি মরণব্যধি ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ঘটেছে। কিন্তু এবারের ভাইসারটির সংক্রমণ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ অন্যরকম। আগেকার মারণব্যধি ভাইরাস সমূহের চেয়ে আলাদা।আগে মহামারি কিংবা ভয়বাহ ভাইরাস আসতো কোন নিদির্ষ্ট জাতি,গোষ্ঠীকিংবা দেশ ভিত্তিক।একটি অঞ্চলে অথবা দেশ আক্রান্ত হলেওঅন্য অনেকস্থান ও দেশে খুউব একটা ছড়াত না এবং তারপ্রতিষেধক ছিল। কিন্ত এই করোনাভাইরাস এতই ভয়াবহতার সংক্রমণক্ষমতা অন্যরকম।এই মারনভাইরাস এখন সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে গ্যাছে।শহর-বন্দর,আকাশ,পথ নৌযান এমনটি সুকঠিণ রাষ্ট্রীয়ভবন, সুরক্ষিত রাজ প্রাসাদেও এইভয়ংকর ভাইরাসটি আঘাত করে বসেছে।
চারিদিকে মহা বিপদের ঘনঘটা।কীভাবে এবং কখন এর থেকে পরিত্রাণ হবে নিশ্চিত ভাবে কেউ বলতে পারছে না।কতিপয় নিয়ম ওফর্মূলার বাইরে এখনও কোন ঔষধ বের হয়নি। ফলে প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ অকালে মৃত্যুর কোলে পড়ছে।স্বজন হারার আর্তনাদে চতুর্দিকে মহা আতঙ্ক ও হাহাকার খুউব কষ্ট লাগে।দু:খ পাই হৃদয় ও মন বেদনায় ভাড়াক্রান্ত হয়ে ওঠে।এই সুন্দর পৃথিবী ও প্রকৃতির পরিবেশ বিনষ্ট করে পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে।কেন এই সুন্দর পৃথিবী ক্রমাগত ধ্বংসের দিকে ধাবমান ? পৃথিবী ও প্রকৃতির সর্বসুন্দর আলোছায়ার এই সুন্দর ভূবনকে সৌন্দর্যময় করে রাখার দায়িত্ব তো মানুষের।কিন্তু এ পৃথিবীকে কে কলুষিত করছে? কারা এই বর্ণময় বিচিত্র সুন্দর ভূবনের সৌন্দর্য কেড়ে নিচ্ছে? মানুষের বেঁচে থাকার অধিকার কেড়ে নিচ্ছে।মানুষকে অবলীলায় হত্যা করছে।মানুষ নামের এক ধরণের পাশবিক শক্তিসমূহ মানব বিধ্বংসী যুদ্ধের মাধ্যমে দেশে দেশে ব্যাপক বোমাবাজি ও ভয়ংকর মারণাস্ত্র প্রয়োগ করে এসেছে মানুষেরই উপর।দেশ দখলের নামে, রাষ্ট্রক্ষমতার নামে,জাত-গোষ্ঠীগৌরব রক্ষার নামে রাজনীতি ও ধর্মের নামে নিরীহ,নিরন্ন মানুষকে নির্দয় ও নিষ্ঠুর পন্থায় নৃশংসভাবে হত্যা করছে।
এতে পৃথিবীর পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। প্রকৃতি মানব জাতির নিকট থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে! প্রকৃতি বিষিয়ে উঠেছে এবং অভিশাপ দিচ্ছে।এক কথায় বলা যেতে পারে,এই মরণব্যাধি মানুষেরই সৃষ্টি।করোনা ভাইরাসের মতো সর্বব্যাপী মারণব্যাধি থেকে মুক্তি ও নিরাময়ের পথকিতা নিয়ে গবেষণা ও অনুসন্ধ্যান চলছে।পূর্বে পৃথিবীতে যত মহামারি কিংবা ভাইরাসগুলোর মতো নয়।যেমন গুটিবসন্ত, ইবোলা, স্পেনিশ ফ্লু, পেগ ও জলাতঙ্ক ভাইরাসের মতো অনেক রকম ভাইরাসের ঔষধ বের হয়েছিল।একটা রফা গিয়েছিল।কিন্তু এখন পর্যন্ত কোন করোনাভাইরাসের কোন নিরামক ঔষধ বের করা সম্ভব হয়নি।করোনাভাইরাসের সমক্রমণ থেকে মুক্ত থাকার কিছু আপাত: ফর্মুলা ব্যতিত এখন পর্যন্ত সংক্রমিত রোগীকে রক্ষা করবার কোন চিকিৎসা বের হয়নি।চোখ,নাক,মুখ,হাত না ও হ্যান্ডশ্যাকনা করা এবং অন্যজনের নিকট থেকে দূরত্ব বজায় রাখা ইত্যাদি নিয়মগুলো মেনে চললে ভাইরাসের আক্রম্রণ থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।হয়তো সহসা ভাইরাসটির গতি-পরিণতির একটা সমাধান বেরিয়ে আসবে কিন্তু এই সময়ের মধ্যে কী পরিমাণ লোকের ক্ষতি হয়ে যাবেতা আমরা কেউ জানিনা।
সমগ্র পৃথিবীতে অনেক মানুষের মর্মান্তিক প্রাণহানি ঘটে যাচ্ছে। আপাতত: নিয়তি ওসময়ের উপর মানুষের ভাগ্য ছেড়ে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায়নেই। তবে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তির প্রাথমিক লক্ষণ জ্বর,সর্দি-কাশি,অবসাদ, শুষ্ক কাশি,শ্বাসকষ্ট,গলাব্যাথা,মাথাব্যাথা,পেটব্যাথা ও বমি ইত্যাদি।উপরোক্ত উপসর্গ থাকলেও কোন কোন রোগীর ক্ষেত্রে ভিন্নকোন উপসর্গও যোগ দিতে পারে। করোনা ভাইরাসের পোষাকি নাম কোভিড-১৯। তবে প্রশ্ন হচ্ছে, এই ভয়ংকর ভইরাসটি কীভাবে পৃথিবীতে এলো। ২০১৯এর ডিসেম্বর মাসের শেষ দিকে চীনের উহান শহরে করোনাভইরাসের একটি সংক্রনণ দেখা দেয়।আস্তে আস্তে সমগ্র চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব ছড়িয়ে পড়ে পুরোচীন দেশে।অত:পর পর্যায়ক্রমে তিনমাসের মধ্যে সমগ্র বিশ্বে করোনাভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে।উৎপত্তি নিয়ে রয়েছে দ্বিমত প্রাথমিক তথ্য অনুপাতে প্রথমে ১৯৬০ সালের দিকে মুরগি থেকে আসলেও বর্তমানে এটি এসেছে এক ধরণের সাপের কাছ থেকে।চীনের মানুষ সাপসহ এমন আকৃতির নানা ধরণের প্রাণী খায়। অনেকের ধারণা সেখান থেকেই তার উৎপত্তি। কিন্তু কথা হলো কেন চীনের একটি মাত্র শহর থেকে বর্তমানে তা বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে সমগ্র মানবতাকে গ্রাস করতে চাইছে? ইহা কি শুধুমাত্র রোগ নাকি আকাশ থেকে নেমে আসা প্রকৃতির কোন ধ্বংসলীলা! তা নিয়েও রয়েছে নানাবিধ প্রশ্ন ও ধুম্রজাল।হাজার হাজার বছর থেকে এরকম মহামারি, রোগ-বলাই কোনএকটা দেশ কিংবা অঞ্চলভেদে সংঘটিত হতো।
অতি মাত্রিক পাশবিকতা,গোয়ার্তুমি,বাড়াবাড়ি ও সীমা লংঘনের ফলেযুগে যুগে মানুষকে শাস্তিস্বরুপ সৃষ্টিকর্তা প্রকৃতিক দুর্যোগ রোগ-বালাই ও মহামারি দিয়ে সঠিক পথে ফিরে আসার শিক্ষা দিয়ে থাকেন। ধর্মানুরাগি মানুষ তাবিশ্বাস করেন।আবার কারো কারো মধ্যে দ্বিমতও রয়েছে।ধর্মে যাদের বিশ্বাস নেই তারা অবশ্য সেটি মানতে রাজিনন। তবে,নৈতিকতাহীন সামাজিক অবক্ষয়, অশিলতা,মানুষে প্রতি মানুষের অমানবিক আচরণ,বর্বরতা,হত্যাযজ্ঞ ও সর্বপ্রকার পৈশাচিকতা বর্তমান বিশ্বে হাজার গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।সেই কারণে বিশ্ব ব্যবস্থপনায় হোঁচট খেতে হয়।পৃথিবীতে শক্তির মহড়া আগেও ছিল।কিন্তু অসহাস দুর্বলের প্রতি নির্দয় আচরণ ও নানাবিধ পাশবিক অত্যাচার মূলক হত্যাকান্ড বর্তমান বিশ্বের একটা নিত্যকার দৃশ্যে পরিনতযা আগেকার যুগ থেকে অনেক বেশি।আগেকার দিনে আধুনিক মারণাস্ত্র এবং আনবিক বোমা, ড্রোন হামলার মাধ্যমে দেশ, অঞ্চল কিংবা কোন গোষ্ঠীকে ধূলিসাৎ করেদেয়ার পদ্ধতি ছিলনা।বর্তমান গ্লোবাল যুগে ছোট্ট পেন্সিলাকারের মারণবোমার সাহয্যে ভয়াবহ ধ্বংস যোগ্যঘটানো যায়।আধুনিক যুগে মানুষকে বাঁচানোর পরিবর্তে মেরে ফেলবার নিয়মটাই বেশি চালু এবং দুষ্টু চক্রই শক্তিশালী।এমনতর ভয়ংকর চিত্র আগেকার যুগে ছিল না।ভূমি,অঞ্চল এবং দেশ দখলের প্রতিযোগিতা ছাড়াও ধর্ম ওজাতের দোহাইয়ে বর্তমান পৃথিবীর অনেক দেশে হাজার বছর ধরে বসবাসকারী মানুষকে নিজ থেকে বিতারিত করে,হত্যাকন্ডের মাধ্যমে পাশবিকতার চূড়ান্ত পর্যায়ে উপনীত হয়েছে বর্তমান বিশ্ব।প্রায় প্রতিটি দেশে অতি তুচ্ছকারণে দুর্বলতর নারী ও শিশু এবং সাধারণ মানুষকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
বর্তমান সময়ের মতো বিশ্বব্যাপি এমন ভয়ংকর চিত্র এর আগে ছিলনা।সেই হিসাবে অনেকের ধারণা মানব বিধ্বংসী যুদ্ধ-বিগ্রহ,বোমাবাজি, এবং গ্লোবাল ওয়ার্মিং জনিত বীষ্পায়নের ফলে প্রকৃতির পরিবেশ কলুষিত হয়ে গেছে এবং সে কারণেই হয়ত: এমন দুর্যোগ নেমে আসতে পারে। আবার এসব ধারণার কোনটাই হয়ত: ঠিক নয়।যে ভয়ংকর করোনাভাইরাসের জন্ম দাতা চীন তা নিয়ে অবশ্যই কথা বলার আছে এবং তা নিয়ে অবশ্যই গবেষণা করা উচিত।আশ্চর্যের বিষয় যে, অতি ক্ষুদ্রকায় ভাইরাসের কত ভয়ংকর মারণ ক্ষমতা। ভাইরাসটির আক্রমণ এতই ভয়ংকর সারা বিশ্ববাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে।ভাইরাসটির আঘাতের এক চূড়ান্ত পর্যায়ে অনেক রোগীর মর্মান্তিক মৃত্যু হচ্ছে। এখন পর্যন্ত করোনাভাইরাসের প্রতিরোধে কোন ঔষধ আবিষ্কার প্রাচীন সভ্যতার ইতিহাস। হুয়াংহো ও ইয়াংজি নদীর অববাহিকায় গড়ে ওঠা অনেকগুলো অঞ্চল এবং জোরপূর্বক অনেক রাজ্য-দেশ দখল ও কুক্ষিগত করে রাখা নিজস্ব প্রভাববলয়ে বর্তমানে চীনের সাম্রাজ্য অনেক বিতৃত।
চীনে নানান জাতি ও গোষ্ঠীর কোটি কোটি মানুষের বসবাস। একসময় সেই দেশের অনেকাঞ্চল মুসলিম শাসনাধীনে ছিল।কালক্রমে সেইসব অঞ্চলের সবগুলোই বর্তমান চীন সাম্রাজ্যের করায়ত্ত।তবু অন্তত: কিছু রাজ্য মুসলিম শায়ত্ব শাসনের সঙ্গে যুক্তছিল। এক সময় হুই মুসলিম জনগোষ্ঠী সংখ্যাগরিষ্ঠ থাকলেও জিনজিয়ান প্রদেশে চীনা রাষ্ট্রপুঞ্জের দমন-নিপীড়নে শিকার হয়ে প্রতি বছর প্রচুর মুসলিমের প্রাণহানি ঘটে।এই রাজ্যের উইঘুর মুসলিম জনগোষ্ঠী এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ।এছাড়া নিংজিয়া,গানসু ও কিংহাই প্রদেশে উলে-খযোগ্যসংখ্যক মুসলিম বসবাস করেন।এই নিবন্ধে মুসলমানেদের কথা এজন্যে উলেখ করা হচ্ছে যে, বিগত কয়েক শতক ধরে চীন সাম্রাজ্যে হাজারো জন গোষ্ঠীর মধ্যে মুসলিম জন গোষ্ঠীই সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত,নিপীড়িত এবং হত্যাযজ্ঞের শিকার হয়ে থাকে। ফলে চীনের অধিকাংশ রাজ্যে মুসলিম জন সংখ্যা নেই বললেই চলে। চীন শুধূ তার দেশের মুসলমানদের প্রতি অত্যাচার,নির্যাতন করছে না। বাইরের কিছু দেশেও মুসলিম এবং অন্য ধর্মের মানুষের নির্যাতনের ব্যিাপারে সহযোগিতা প্রদান করে থাকে।সেইসব দেশের অন্যতম দেশ হচ্ছে বার্মা।বার্মার আদি মুসলিম এলাকা সমূহকে মুসলিম জনশূন্য করে দিয়ে সেসব অঞ্চলে বার্মিজ মগদের পূণ:র্বাসনের ক্ষেত্রে চীনা সরকারের বিরাট সাহায়্যে হাত সবসময়েই খোলা রয়েছে।মানবিক বিপর্যয়ের আরেকটি দিক হচ্ছে সদ্য জন্ম নেয়া অনেক বিকলাঙ্গ শিশুকে মায়ের কোল থেকে ছিনিয়ে নির্দয়ভাবে হত্যা করার কুসংস্কাটিও সেখানে বিদ্যমান।এটি যেমন একটি মানবিক বিপর্যয়ের করুণ দিক ঠিক তেমনই ভয়ংকর করোনাভাইরাসটির উৎপত্তির কারণও আলোচনার বিষয়। চীনা কর্তপক্ষের কথা মত ভাইরাসটির জন্ম যেহেতু প্রাণী থেকে।তেমনই রুচি বিবর্জিত অনেক নিষিদ্ধ প্রাণীসমূহ যেমন সাপ,কেচো,বাদুর,শোকর,কুকুর,শৃগাল,বিড়ালসহ অনেক জাতের নানা রকমের রুচি বিবর্জিত প্রাণী চীনারা অবলীলায় ভক্ষণ করার ফলে হয়ত: বা এই ভয়াবহ করোনাভাইরাসের সৃষ্টি হতে পারে। এমনও প্রবাদ আছে চীনের কোন কোন অঞ্চলে মওকা মত মানুষ পাইলে হত্যা করা হয়এবং তা ভক্ষণ করা হয়।এমন অসভ্যপনা যে দেশটিতে বিধ্যমান এবং যারা স্বার্থের ব্যাপারে ষোলআনা বোঝে এবং আদায় করে ছাড়ে। এছাড়া আচার-ব্যবহারের কোন নীতিমালা কিংবা ম্যানার মেনে চলে না।
বহু দিনধরে চীন একটি অগণতান্ত্রিক কম্যুনিষ্ট রাষ্ট্র। সেই দেশের সাধারণ মানুষের মৌলিক অধিকার লংঘিত হওয়ার বিষয়টির জনশ্র“তি আছে।একটি প্রশ্ন বিশ্বব্যাপী দানা উঠছে যে শহরটি (রোহান) তে করোনাভাইরাসের উৎপত্তি তা এত দ্রুত কীভাবে সেটি নিয়ন্ত্রণে এসে গেল। এমনও জানা গেছে যে, সেখানেমৃতদের সংগে বিপজ্জনকভাবে আক্রান্তদেরও পুড়িয়ে ধুলিসাৎ করে দেয়া হয়েছে।মানুষকে রক্ষা করার নামে এমন অদ্ভূত পদ্ধতিও শোনা যায়। অবাক ব্যাপার চীনের বিশাল সাম্রাজ্যের অন্যান্য শহরগুলো অক্ষত ও সম্পূর্ণ নিরাপদ। বেইজিং,হংকংসহ অনেক বড় বড় শহর কেমন করে নিরাপদ আছে।অথচ সারা বিশ্বের প্রতিটি দেশের বগ বগ শহরগুলোতে দ্রুত ছড়িয়ে গেল! চীনা সরকারের পক্ষ থেকে যদি বিশ্বকে করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা সম্পর্কে কঠোর সতকর্তা জারি করা হতো এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে সমস্ত রাষ্ট্র সমূহের সাথে সাময়িকভাবে চীনের যোগাযোগ বিচ্ছন্নকরা হতো তাহলে অবশ্যই এতদ্রুত সমগ্র বিশ্বময় ভাইরাসটি এত ভয়ংকর ভাবে ছড়িয়ে পড়ত না।এইসব প্রশ্নের ধুম্রজালের একটা সদুত্তর ও সমাধান হয়ত: বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মাধ্যমে প্রকাশ পাবে।সেই দেশ থেকে জন্ম নেয়া ভাইরাসটি মাত্র তিন মাসের মধ্যে সমগ্র বিশ্বকে গ্রাস করে ফেললো।বিশ্বের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে দিল। সারাবিশ্বকে অচল করে দিয়েছে (?) তা অবশ্যই গবেষণা করে প্রকৃত কারণ উদঘাটন করা প্রয়োজন।
ভোগ-বিলাস,লোভ,লালসা, মানববিধ্বংস আর হিংসার রাজত্ব করবার উগ্র-উলাসে বর্তমান পৃথিবীর সবচেয়ে নির্দয় শাসকবৃন্দ নিষ্ঠুরতম কায়দায় মানুষ মারছে। আরব,ইসরাঈল ও মধ্য প্রাচ্যের দেশ গুলোতে নারী,শিশুসহ লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষের প্রাণহানি ঘটছে। মানুষকে ভালোবাসার মধ্যদিয়ে, মানুষের মঙ্গল কমনা এবং মানুষের কল্যাণবোধের মধ্য দিয়েই শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করা সম্ভব। মানুষকে অগ্রাহ্য এবং মানব বিধ্বংসের মধ্যদিয়ে কখনো শ্রেষ্ঠ হওয়া যায় না। ‘মানুষ’ কবিতায় অসাপ্রদায়িক কবি,মানবতার কবি, বিদ্রেহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম বলেছেন “মানুষেরে ঘৃণা করিও কারা কোরান-বেদ-বাইবেল চুম্বিছে!মরি মরি!ও মুখ হইতে গ্রন্থ-কেতাব নাও জোর করে কেড়েকাহারা আনিল গ্রন্থ-কেতাব সেই মানুষেরে মেরে পুজিছে গ্রন্থ ভণ্ডের দল! মুর্খেরা শোনোমানুষ এনেছে গ্রন্থ,গ্রন্থ আনেনি মানুষ কোনো!”মানুষের মধ্যে সাম্য-মৈত্রির বন্ধনকে জোরদার করে সৌভ্রাতৃত্ব প্রতিষ্ঠার দাবিতে মানবতার কবি কাজী নজরুল ইসলামের চিরন্তণ কবিতা “গাহি সাম্যের গান,যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা ব্যবধান,যেখানে মিশেছে হিন্দু-বৌদ্ধ মুসলিম,ক্রীশ্চান”।
বিশ্ব কাঁপানো করোনা ভাইরাসের কবল থেকে রক্ষাকল্পে মহান আলাহর নিকট আমাদের সম্মিলিত প্রার্থনা।আল্লাহ্পাক পৃথিবীর সকল মানুষকে রক্ষা কর।আমরা সবাই যেন এই মহা বিপদের দিনে ধৈর্য ও শক্তি নিয়ে সুস্থ ও সবল হয়ে উঠি। তাই আজকের কাম্য। লেখক: কবি ও প্রাবন্ধিক।