পর্ব-১
নীল চাইলো ওদের সংসার হোক আকাশ বাড়িতে। অনন্যা হাসলো। বললো -কি যে বলনা,আকাশে সংসার! সেখানে ঘর বাঁধবে কোথায়? আকাশে বুঝি বাড়ি ঘর হয়?
নীল বললো – আকাশ মানে মনের আকাশ। আমরা মনে মনে সংসার পাতবো। – আমি বুঝতে পারছি না, নীল। একটু বিস্তারিত বলবে? -কেন অনন্যা, তুমি অপর্ণা সেনের “The Japanese Wife” মুভিটি দেখোনি? – না তো, দেখিনি। তুমি লিংক পাঠাও, আমি দেখবো। ইউটিউব থেকে নীল সিনেমার লিংকটি পাঠিয়ে দিলো অনন্যা’র ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে।
শনিবার এলে, সকাল থেকেই অনন্যা’র নানাবিধ কাজ শুরু হয়ে যায়। যেমন, লন্ড্রি করা, পোষ্ট বক্স চেক করা, অন্তত তিন দিনের জন্য রান্না করা, ঘর সাফ করা ইত্যাদি। সন্ধ্যা পর্যন্ত এক টানা এসব কাজ করে হয় সে বন্ধুদের সাথে সিনেমা দেখতে যায় অথবা রেস্টুরেন্টে খেতে যায়। কিন্তু, আজকে তার ব্যত্যয় ঘটলো। অনন্যা ঘরেই রইলো।
নীল যে সিনেমার লিংকটি পাঠিয়েছে তাই আজ দেখবে বলে প্ল্যান করলো অনন্যা এবং যথারীতি সিনেমাটি সে দেখলোও। সিনেমা শেষ করে অনন্যা স্বগতোক্তি করলো – আসলেই দারুণ কাহিনী, হৃদয় ছুঁয়ে দিলো! অপর্ণা সেন একটা জিনিয়াস! পারেনও, বাব্বাহ!
নীলের বাড়ি কোলকাতায়। অনন্যা কানাডায়। প্রচন্ড ভালোবাসা দু’জনের মধ্যে। ওরা এমন ভাবে ম্যাসেজ লিখে একে অপরকে যেন একটি ঘর, একটি ডাইনিং টেবিল, একটিই বিছানা ভাগাভাগি করে একত্রে বাস করছে দু’জনে। আকাশ বাড়িতেও যে স্বামী-স্ত্রী হয়ে সংসার পাতা যায়, অনন্যা তা ভাবতেই পারেনি।
বিয়ের মন্ত্রটি নীল জানে। তার থেকে দুটি চরণ উচ্চারণ করলো নীল। অনন্যাও তার পিছুপিছু – “যদেতত্ হৃদয়ং তব তদস্তু হৃদয়ং মম । যদিদং হৃদয়ং মম, তদস্তু হৃদয়ং তব”। —তোমার এই হৃদয় আমার হোক আমার এইহৃদয় তোমার হোক।
চলবে….