ডাঃ তাবাস্সুম উর্মি রোজা,
কনসালট্যান্ট সাইকিয়াট্রিস্ট,কগনিসিটি ওয়েলবিং,লন্ডন।
সকালবেলা খালি পেটে ফল খাওয়া যাবে কি যাবে না, এ নিয়ে নানাজনের নানা ভ্রান্ত ভাবনা! এমনকি সকালে খালি পেটে ফল খেলে উপকারের চেয়ে অপকারিতা বেশি বলেও প্রচলিত আছে…. আসলেই কি তাই???
তাহলে চলুন আজ জেনে নেই প্রতিদিন সকালের নাস্তায় ফল খেলে কী হতে পারে তার সঠিক তথ্যটি…
আমাদের ঘুম ভাঙার পরে ব্লাড সেল এবং ব্রেন সেলকে পুনরায় সক্রিয় করতে প্রয়োজন হয় প্রচুর প্রাকৃতিক শর্করার। আর একারণেই খালি পেটে ফল খাওয়ার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। এতে করে শরীরে চিনির চাহিদা পূরণের পাশাপাশি রক্তে শর্করার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কাও কমে। ফলে দূরে থাকা যায় ডায়াবেটিস থেকে।
নিয়মিত খালি পেটে ফল খেলে শরীরে উপকারি ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন এবং মিনারেলের মাত্রা বৃদ্ধি পেতে থাকে, যা খারাপ কোলেস্টেরলের পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখে। ফলে হার্টের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা কমে। তাই সুস্থ থাকতে সকালের নাস্তায় নিয়মিত রাখুন ফল।
সকালের নাস্তা খাওয়ার অঅন্তত ১৫/২০ মিনিট আগে ভিটামিন সি যুক্ত ফল খেলে আমাদের শরীর খাবারে থাকা পুষ্টিকর উপাদানগুলো বেশি মাত্রায় গ্রহণ করতে পারে। এতে শরীরের ভেতরকার পুষ্টির ঘাটতি দূর হয়। এর পাশাপাশি অ্যানিমিয়ার আশঙ্কাও হ্রাস পায়।
প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে এগারোটা পর্যন্ত আমাদের শরীর তার ভেতরে থাকা টক্সিক উপাদানগুলো বের করে দেয়ার কাজ করে। তাই এসময়ের ভেতর অন্তত একবাটি ফল খেতে পারলে শরীরের বিষাক্ত উপাদানগুলো বেশি মাত্রায় বের হয়ে যায়। আর একারণে নানারকম অসুখে আক্রান্ত হওয়ার ভয় কমে।
সকালে খালি পেটে ফল খেলে অ্যাসিডিটি হতে পারে, এটি পুরোপুরি ঠিক নয়! বরং গবেষণা বলছে, ফল খেলে শরীরে অ্যাসিড এবং অ্যালকেলাইনের ভারসাম্য ঠিক হতে শুরু করে। এতে অ্যাসিডিটিতে আক্রান্ত হওয়ার ভয় থাকে না।
ওজন নিয়ে চিন্তিত? নিয়মিত সকালের নাস্তায় ফল খান। কারণ ফলের ভেতর থাকা পুষ্টিকর বিভিন্ন উপাদান আপনার শরীরের টক্সিক উপাদানগুলো বের করে ওজন কমানোর প্রক্রিয়াকে গতিশীল করবে। এর পাশাপাশি দীর্ঘক্ষণ পেট ভরিয়ে রাখার কারণে বারবার খাবার খাওয়ার অভ্যাসেও ভাটা পড়ে। আর তাতে ওজন কমে দ্রুত।
ফলে থাকা ফাইবার হজমে সহায়ক পাঁচক রসের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয়। এতে হজমক্ষমতার উন্নতির পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের মতো অসুখও কমায়। তাই পেটের অসুখে ভুগলে সকালের নাস্তায় ফল রাখার ব্যবস্থা করুন।