প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বর্তমানে জ্বালানি তেলের মজুত ক্ষমতা ১৩ দশমিক ২৮ লাখ মেট্রিক টন যা দিয়ে ৪০-৪৫ দিন দেশের তেলের চাহিদা মেটানো সম্ভব। মজুদ ক্ষমতা ক্রমান্বয়ে ৬০ দিনে উন্নীত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে।
বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকা সাশ্রয়সহ দ্রুত গভীর সমুদ্রে মাদার ভেসেল থেকে মুরিয়ের মাধ্যমে প্রধান স্থাপনা ও ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেডের (ইআরএল) জ্বালানি তেল আনলোডিংয়ের জন্য
সিঙ্গেল পয়েন্ট মর্নিং উইথ ডাবল পাইপলাইন (এপিএম) প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশের জ্বালানি তেলের পরিশোধন ক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য ইআরএল (ইস্টার্ন রিফাইনারি লিমিটেড) ইউনিট-২ স্থাপনের প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে।
জ্বালানি তেল পরিবহনে ঢাকা-চট্টগ্রাম পাইপলাইন এবং বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া ফ্রেন্ডশিপ পাইপলাইনের নির্মাণ কাজ চলমান রয়েছে।
সোমবার ( ৯ আগস্ট) জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-২০২১ উপলক্ষে দেয়া এক বাণীতে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও ৯ আগস্ট ‘জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-২০২১’ উদযাপন করা হচ্ছে জেনে আমি আনন্দিত।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ৯ আগস্ট ব্রিটিশ তেল কোম্পানি ‘শেল অয়েল’ হতে ৫টি গ্যাসক্ষেত্র ক্রয় করে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় এনে জ্বালানি নিরাপত্তার গোড়াপত্তন করেন যা স্বাধীন বাংলাদেশে জ্বালানি ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ।
বঙ্গবন্ধু ১৯৭৫ সালের ১৪ মার্চ দ্য ইএসএসও আন্ডারটেকিং অ্যাকুইজিশন অর্ডিন্যান্স
১৯৭৫ এর মাধ্যমে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে যে যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিলেন তারই ধারাবাহিকতায় বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকার জ্বালানি তেল মজুত ক্ষমতা বৃদ্ধি করেছে এবং সরবরাহ ও বিতরণে এনেছে আধুনিকতা।
তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের মাধ্যমে গ্যাস ও কয়লার উৎপাদন বৃদ্ধিতে সর্বাত্মক কার্যক্রম গ্রহণ করেছে। বর্তমানে দেশে গ্যাসের বর্ধিত চাহিদা মেটাতে এলএনজি আমদানি করে জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা হচ্ছে এবং স্থলভিত্তিক এলএনজি টার্মিনাল স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।
পাশাপাশি, দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ জ্বালানি চাহিদা পূরণে গ্যাস উত্তোলন, প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ কয়লার মজুত নির্ধারণ, আহরিত জ্বালানি সম্পদ ব্যবহারের নতুন ক্ষেত্র প্রস্তুত এবং এ সংশ্লিষ্ট অবকাঠামো উন্নয়নে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির সংযোজন অব্যাহত রয়েছে। বঙ্গোপসাগরে বিশাল সমুদ্র এলাকায় ব্যাপকভিত্তিক গ্যাস ও তেল অনুসন্ধান এবং উৎপাদন কার্যক্রম হাতে নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, আমি বিশ্বাস করি, গ্যাস সম্পদের সুষ্ঠু ব্যবহার, নতুন নতুন গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কার এবং গ্যাস ও কয়লাভিত্তিক অর্থনৈতিক অবকাঠামোকে সুসংহত রূপদানের পাশাপাশি পরিবেশবান্ধব ও অন্যান্য বিকল্প জ্বালানি ব্যবহার ও জ্বালানির অপচয় রোধ করে সাশ্রয়ী ব্যবহার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জ্বালানি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে এ দিবসটি আমাদের অনুপ্রেরণা যোগাবে। আমি ‘জ্বালানি নিরাপত্তা দিবস-২০২১’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করছি।
তথ্য: বাসস