করোনাভাইরাস বা টিকা পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যে কতটা প্রভাব ফেলে এ সম্পর্কে এখনও খুব কম গবেষণা হয়েছে। তবে এবার যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের নতুন এক গবেষণায় এ ব্যাপারে বেশ ভালোভাবে নজর দেওয়া হয়েছে। গবেষক দলটি কম বয়সি এবং মধ্যবয়স্ক পুরুষ যারা সন্তান লাভ করতে চান তারাসহ সব বয়সি পুরুষের ওপর করোনার সম্ভাব্য সুদূরপ্রসারী প্রভাব আবিষ্কার করেছেন।
মৃত্যুবরণ করেছেন এমন ৬ জন করোনা রোগীর অণ্ডকোষের টিস্যুর ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বিশ্লেষণ করা হয় এই গবেষণায়। এর মধ্যে একজন পুরুষের অণ্ডকোষের টিস্যুতে ভাইরাসটির উপস্থিতি দেখতে পান গবেষকরা, যা তার শুক্রাণুর সংখ্যা তিন গুণ কমিয়ে দিয়েছিল।
অন্য আরেকজন রোগী যিনি করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন, তিনি সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার তিন মাস পর অণ্ডকোষের বায়োপসি করেছিলেন। দেখা যায়, করোনাভাইরাস তখনো তার অণ্ডকোষে ছিল।
গবেষক দলটি আরো দেখতে পেয়েছেন, করোনাভাইরাস পুরুষের লিঙ্গের ওপরও প্রভাব ফেলে। দুজন রোগী যারা ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের কারণে পেনাইল ইমপ্ল্যান্ট নিয়েছিলেন তাদের পেনাইল টিস্যু বিশ্লেষণে দেখা গেছে, করোনা থেকে মুক্তির ৭ থেকে ৯ মাস পরও লিঙ্গের টিস্যুতে ভাইরাসটির উপস্থিতি রয়ে গেছে। উভয়েই মারাত্মক ইরেক্টাইল ডিসফাংশনে ভুগেছিলেন। কারণ করোনা সংক্রমণ পুরুষাঙ্গে রক্ত সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছিল।
বাকি দুজনের মধ্যে একজনের কেবল করোনার হালকা উপসর্গ ছিল। অন্যজনকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছিল। তাদের রিপোর্ট বলছে, করোনার হালকা উপসর্গের রোগীরাও সুস্থতার পর গুরুতর পুরুষত্বহীনতার ঝুঁকিতে পড়তে পারেন।
নতুন এই গবেষণার ফল খুব অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়। কেননা বিজ্ঞানীরা জানেন, অন্যান্য ভাইরাসও অণ্ডকোষ আক্রমণ করে এবং শুক্রাণু উৎপাদন ও ঊর্বরতায় প্রভাব ফেলে।
করোনার টিকার উপকারিতা সম্পর্কে নতুন তথ্য
মিয়ামি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা করোনার টিকা নিয়ে সুসংবাদ দিয়েছেন। ৪৫ জন পুরুষের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় তারা দেখতে পেয়েছেন, ফাইজার এবং মর্ডানার এমআরএনএ টিকা পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য নিরাপদ। তাদের মতে, করোনার টিকা নেওয়ার উৎসাহ প্রদানে এটি আরেকটি কারণ হতে পারে।
গবেষকদের মতে, যেসব পুরুষ করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন এবং পরে অণ্ডকোষের ব্যথায় ভুগছেন, তাদের ক্ষেত্রে ভাইরাস অণ্ডকোষেও আক্রমণ করেছে বিবেচনা করা যুক্তিসঙ্গত। ফলস্বরূপ ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হতে পারে। এ ধরনের রোগীদের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।