সরকারের ডিজিটাল সক্ষমতা বাড়াতে আড়াইহাজার কোটি টাকা ঋণ দিতে রাজি হয়েছে বিশ্ব ব্যাংক। শিগগিরই এ বিষয়ে একটি চুক্তি সই হবে।
‘ইনহ্যান্সিং ডিজিটাল গর্ভমেন্ট অ্যান্ড ইকোনোমি’ নামের একটি প্রকল্পের মাধ্যমে এ ঋণ কাজে লাগানো হবে।
প্রকল্পের আওতায় ডিজিটাল সরকার এবং ডিজিটাল অর্থনীতির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা ও পরিবেশ শক্তিশালী করা হবে। একটি বণ্টনযোগ্য এবং সংহত ডিজিটাল প্লাটফর্ম স্থাপন, ডিজিটাল অর্থনীতিকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার লক্ষ্যে মৌলিক দক্ষতা অর্জনসহ চাকরির সংস্থান করা হবে। এছাড়া প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো, সমন্বয় ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন, প্রকল্প ব্যবস্থাপনা এবাং বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সহায়তা করা হবে।
প্রকল্পের মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৯২ কোটি টাকা। এর মধ্যে বিশ্বব্যাংক দেবে ২ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা। চলতি সময় থেকে ২০২৫ সালের জুন মেয়াদে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) সূত্র জানায়, এরইমধ্যে বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা ঋণ দিতে সম্মতি জানিয়েছে। প্রকল্পের উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা (ডিপিপি) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় অনুমোদন হওয়ার পরেই বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে ঋণচুক্তি হবে।
ইআরডির বিশ্বব্যাংক শাখার প্রধান অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ শাহাবুদ্দিন পাটোয়ারী বাংলানিউজকে বলেন, “ডিজিটাল সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধিতে বিশ্বব্যাংক আমাদের ২৯৫ মিলিয়ন ডলার ঋণ দিতে সম্মত হয়েছে। ডিপিপি অনুমোদন পেলেই ঋণচুক্তি হবে। নানা কারণে প্রকল্পটি হাতে নিতে যাচ্ছে সরকার। ডিজিটাল ব্যবহারের মাধ্যমে সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধি, ডিজিটাল সরকার এবং ডিজিটাল অর্থনীতির প্লাটফর্ম স্থাপন করা হবে। একবিংশ শতাব্দীর উপযোগী কর্মসংস্থান, সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, চতুর্থ শিল্পবিপ্লবকে সামনে রেখে দেশের যুবসমাজকে সময়পযোগী কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষণ দিতে প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। ”
আইসিটি বিভাগ সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় বেসরকারি খাত ও বাজারকে ডিজিটাল অর্থনীতির জন্য প্রস্তুতকরণের পাশাপাশি শেখ হাসিনা ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি (এসএইচআইএফটি) প্রতিষ্ঠা করা হবে। ক্লাউড কম্পিউটিং প্লাটফর্ম স্থাপন এবং বাংলাদেশ ন্যাশনাল ডিজিটাল আর্কিটেকচারকে (বিএনডিএ) পরবর্তী ধাপে উন্নীত করার লক্ষেই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হচ্ছে। বাংলাদেশের জনসংখ্যাকে জনসম্পদে পরিণত করে কর্মসংস্থান সৃষ্টিও প্রকল্পের অন্যতম উদ্দেশ্য।
আইসিটি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন অনুবিভাগ) বিকর্ণ কুমার ঘোষ বাংলানিউজকে বলেন, “আমাদের দেশে ডিজিটাল সরকারের সক্ষমতা প্রয়োজনের তুলনায় কম। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গে চাহিদা আরও বাড়বে। আমাদের দেশ এগিয়ে যাচ্ছে, কিন্তু অন্যান্য দেশ আরও এগিয়ে গেছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশ ভারত আইসিটি খাত থেকে ১০০ বিলিয়ন ডলার আয় করছে, সেখানে আমরা করছি মাত্র এক বিলিয়ন। আমাদের সমমানের দেশও ১৫ থেকে ২০ বিলিয়ন ডলার আয় করছে। ”
তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশ সবচেয়ে সম্ভাবনাময় একটি দেশ। আমাদের দেশের মতো কর্মক্ষম জনবল কোথাও নেই। উন্নত দেশে কাজ করার মানুষ নেই। আমরা যদি দেশের যুব সমাজকে আইসিটি প্রশিক্ষণ দিয়ে বিদেশে পাঠাতে পারি তবে এই খাত থেকে কোটি যুবকের কর্মসংস্থান সম্ভব। ”