ভারতের ত্রিপুরায় বিজেপির মধ্যেই এবার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে শুরু হয়েছে বিদ্রোহ। তার বিরুদ্ধে খারাপ নেতৃত্ব ও অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন দলেরই অনেক বিধায়ক। তাকে মুখ্যমন্ত্রীর পর থেকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি তুলে দিল্লি গিয়েছেন অন্তত ১২ বিজেপি বিধায়ক। বিজেপির শীর্ষনেতৃত্বের সঙ্গে দেখা করে নিজেদের অভিযোগ জানাতে চান তারা।
এই দলে রয়েছেন ত্রিপুরার প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী তথা প্রভাবশালী বিজেপি বিধায়ক সুদীপ রায় বর্মণ। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা ও সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি চেয়েছেন তিনি। এমনকি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ও সম্ভব হলে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গেও দেখা করার চেষ্টা করছেন তারা।
দিল্লির ত্রিপুরা ভবনে রয়েছেন বিজেপি বিধায়করা। সেখানেই সংবাদমাধ্যমের সামনে সুদীপ রায় বর্মণ বলেন, আমরা অন্তত ১২ জন বিধায়ক ঠিক করেছি ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রীর একনায়কতন্ত্র, খারাপ নেতৃত্বর কথা দলের শীর্ষনেতৃত্বকে জানাব। কারণ এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমরা শীর্ষনেতৃত্বকে জানাতে চাই যে আমরা দলের অনুগত কর্মী এবং আমরা চাই ত্রিপুরায় একবারের থেকে বেশি বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাক। কিন্তু যদি এভাবেই নেতৃত্ব চলতে থাকে তাহলে বামফ্রন্ট বা কংগ্রেস তাদের হারানো জমি ফিরে পাবে। তাতে দলেরই ক্ষতি। ইতিমধ্যেই অনেক রকমের বেফাঁস মন্তব্য করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেটা বেশিদিন চলতে দেওয়া যায় না।
অভিযোগকারী দলের এক বিধায়ক জানিয়েছেন,করোনা সংক্রমণ চলার সময় ত্রিপুরায় একজন নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যমন্ত্রীও নেই। অভিজ্ঞ আইএএস ও আইপিএস অফিসাররা ত্রিপুরা ছাড়ছেন। নইলে অবসর নিয়ে নিচ্ছেন। মুখ্যমন্ত্রীর একনায়কতন্ত্রের সঙ্গে চলতে পারছেন না তারা। এমনকি তার বিরুদ্ধে কথা বললে সংবাদমাধ্যম ও সাংবাদিকদেরও হুমকি দিয়েছেন তিনি। দলের বেশিরভাগ বিধায়ক চান তাকে সরিয়ে দেওয়া হোক।
অবশ্য বিপ্লব ঘনিষ্ঠ এক বিধায়ক এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তিনি বলেন, কেবলমাত্র সাত থেকে আট জন বিধায়ক রয়েছেন যারা সরকারের এই অগ্রগতি মানতে পারছেন না। তারা সমস্যা তৈরি করার চেষ্টা করছেন। ওই বিধায়কদের বেশিরভাগই কংগ্রেস থেকে বিজেপিতে এসেছেন। বিজেপির পুরনো কর্মী ও নেতাদের বিপ্লব দেবের উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে বলেই জানিয়েছেন তিনি।
বামফ্রন্টের ২৫ বছরের শাসনকে হারিয়ে ২০১৮ সালে ক্ষমতায় এসেছিল বিজেপি সরকার। তাদের সঙ্গে জোট বেঁধেছিল পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা। ৬০ সদস্যের বিধানসভায় ৩৬টি আসন পেয়েছিল বিজেপি। অন্যদিকে পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা পেয়েছিল ৮টি আসন। তারপরেই ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী হন বিপ্লব দেব।