দুই মাসের মধ্যে ভারতের জনসংখ্যা ১৪০ কোটিতে গিয়ে ঠেকতে পারে। এর ফলে ভারত হয়ে উঠতে পারে বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ। তবে অন্তত এক বছর কিংবা তারও বেশি সময় ধরে দেশের প্রকৃত জনসংখ্যা কতো তা জানে না ভারত সরকার।
ভারতে প্রতি এক দশকে একবার আদমশুমারি অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু ২০২১ সালে করোনা মহামারির কারণে এই শুমারি হয়নি। এখন প্রযুক্তিগত এবং সরঞ্জামগত প্রতিবন্ধকতার কারণে আটকে আছে শুমারি কার্যক্রম। এই বিশাল কর্মযজ্ঞ কবে শুরু হবে তাও জানা নেই।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কর্মসংস্থান, আবাসন, সাক্ষরতার মাত্রা, অভিবাসনের ধরণ এবং শিশুমৃত্যুর মতো পরিসংখ্যান বিলম্বিত হলে এশিয়ার অন্যতম বড় অর্থনীতির এই দেশটিতে সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা এবং নীতি নির্ধারণের ওপর প্রভাব পড়বে।
আদমশুমারির তথ্যকে ‘অপরিহার্য’ অভিহিত করে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব পাবলিক ফাইন্যান্স অ্যান্ড পলিসির ফেলো রচনা শর্মা বলেন, ভোগ ব্যয় জরিপ এবং পর্যায়ক্রমিক শ্রমশক্তি জরিপের মতো গবেষণাগুলো আদমশুমারির তথ্যের উপর ভিত্তি করে অনুমান করা হয়।
তিনি বলেন, ‘সর্বশেষ আদমশুমারির তথ্যের অনুপস্থিতিতে অনুমানগুলো এক দশকের পুরানো তথ্যের উপর ভিত্তি করে এবং সম্ভবত বাস্তবতা থেকে অনেক দূরের ধারণা প্রদান করবে।’
পরিসংখ্যান ও প্রকল্প বাস্তবায়ন মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সর্বশেষ ২০১১ সালের আদমশুমারির তথ্য সরকারি ব্যয়ের মূল্যায়নের জন্য প্রয়োজনীয় অনুমান ও ধারণার জন্য ব্যবহার করা হয়েছিল।
মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, সর্বোত্তম সম্ভাব্য অনুমান প্রদানের মধ্যে তাদের ক্ষমতা সীমাবদ্ধ ছিল এবং আদমশুমারি প্রক্রিয়া সম্পর্কে মন্ত্রণালয় মন্তব্য করতে পারে না।
প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এবং প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমালোচকরা অভিযোগ করেছেন, ২০২৪ সালের জাতীয় নির্বাচনের আগে বেকারত্বের মতো রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল তথ্য আড়াল করার জন্য আদমশুমারি বিলম্ব করছে সরকার।
কংগ্রেস মুখপাত্র পবন খেরা বলেছেন, এই সরকার প্রায়ই তথ্যের সাথে তাদের বিরোধিতার বিষয়টি দেখিয়েছে। কর্মসংস্থান, কোভিডের মৃত্যু ইত্যাদির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে, আমরা দেখেছি মোদি সরকার সমালোচনামূলক পরিসংখ্যান লুকিয়ে রাখতে কতোটা পছন্দ করে।’
অবশ্য ক্ষমতাসীন ভারতীয় জনতা পার্টির জাতীয় মুখপাত্র গোপাল কৃষ্ণ আগরওয়াল এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।