জনবহুল দেশে হিসেবে বাংলাদেশের জনস্বাস্থ্য বিবেচনায় একটি ‘পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রতিষ্ঠা করা হোক, এমনটাই চেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
বৃহস্পতিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর মহাখালীতে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব প্রিভেন্টিভ অ্যান্ড সোশ্যাল মেডিসিনের (নিপসম) মাস্টার্স অব পাবলিক হেলথ শিক্ষার্থীদের নবীন বরণ অনুষ্ঠানে এ কথা কথা জানান তিনি।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘হঠাৎ করোনা এসে আমাদের বুঝিয়ে দিলো, পাবলিক হেলথটা জরুরি। যখন ধাক্কা খেয়েছি তখন মনে করেছি, পাবলিক হেলথ জরুরি। এখন আবার ভুলে যাচ্ছি? নাকি ডেঙ্গু নিয়ে ভাবছি? কিছু একটা ধাক্কা লাগবেই, না হলে পাবলিক হেলথকে কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। আমেরিকাতে পড়তে গিয়ে জনেছিলাম, যারা ওখানে চিকিৎসক হিসেবে চাকরি খোঁজেন, তাদের মধ্যে যাদের এমপিএইচ (মাস্টার্স অব পাবলিক হেলথ) করা আছে, তাদের সেখানে প্রাধান্য দেওয়া হয়। আমি জানতে চেয়েছিলাম, এরা তো হাসপাতালে চিকিৎসক হিসেবে যোগদান করছে, পাবলিক হেলথের প্রতিষ্ঠানে যোগদান করছে না। তারা উত্তর দিয়েছিল, যিনি চিকিৎসক তিনি রোগী ফোকাসড, যিনি পাবলিক হেলথ পড়েছেন, তার দেখার দৃষ্টি কোনটা ভিন্ন। তিনি পুরো সমাজটাকে দেখেন, পুরো জনগণকে দেখেন। অর্থায়ন, ব্যবস্থাপনা, কৌশলসহ সবদিক দেখেন। পাবলিক হেলথের দৃষ্টি কোন নিয়ে চিকিৎসক হিসেবে যখন কাজ করবেন, তখন তিনি অনেক বেশি অবদান রাখেন।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের এখানে সেটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয় না। কিন্তু গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার। আমাদের এখন সময় এসেছে— শুধু চিকনগুনিয়া, কোভিড, ডেঙ্গু আসলে এদের কথা মনে করবো, আর বাকি সময় ভুলে থাকবো, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এক কোনায় এদের রেখে দেবো, সেটা যেন না হয়। হেলথ মেকিং ডিসিশনে অবশ্যই পাবলিক হেলথের প্রধান্য থাকবে। আমরা দেশের স্বাস্থ্য-শিক্ষা খাতে সবচেয়ে ভালো করতে চাই। এখানে অনেকগুলো প্রস্তাব এসেছে, পাবলিক হেলথ কাউন্সিলের প্রস্তাব এসেছে, অ্যাক্রিডিটিশনের জন্য। আমাদের অনেক বিশেষায়িত বিশ্ববিদ্যালয় হয়েছে। যখন একটি বিশেষ বিষয় নিয়ে বিশেষ একটি বিশ্ববিদ্যালয় হয়, তখন ওই বিষয়টির প্রতি মানুষের নজর নিয়ে আসা যায়, গুরুত্ব দেওয়া হয়। যেখানে পাবলিক হেলথ বিষয়টিকে এমনিতেই একটু পেছনে ফেলে রাখা হয়, সেখানে পাবলিক হেলথ বিশ্ববিদ্যালয় হওয়াটা মোটেই খারাপ না। কারণ, এই পাবলিক হেলথের এত রকমের দিক রয়েছে, সবকিছু মিলিয়ে একটি পুরোপুরি একটি বিশ্ববিদ্যালয়। পৃথিবীর অনেক বিশ্ববিদ্যালয় আছে যেগুলো পাবলিক হেলথে স্পেশালাইজড। সেসব বিশ্ববিদ্যালয় আবার অন্যান্য বিষয়ও পড়ায়। বাংলাদেশের মতো জনবহুল দেশে কোনও না কোনও অসুখ-বিসুখ থাকবে। বিহেবিয়ার চেঞ্জটা সবচেয়ে কঠিন কাজ। সে কারণে আমার মনে হয়, এ রকম একটি বিশ্ববিদ্যালয় হতেই পারে। আমি আশা করতে পারি, এ রকম একটি উদ্যোগ কেউ নেবেন।’