প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচন নিয়ে আমাদের চিন্তা নেই। জনগণের ভোট আমাদের আছে। তবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র সব সময়ই থাকে। তবে ওটা ভয় পাই না। আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ একটা মানুষকে কাজ দেয়, সেই কাজ সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আল্লাহই রক্ষা করেন। কাজেই দেশের মানুষের জন্য কাজ করার যে সুযোগ পেয়েছি সেটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।
বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে গোপালগঞ্জ, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে মত বিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, উপরে আল্লাহ নিচে আমার দলের লোক। যখনি আঘাত এসেছে আমার দলের মানুষই আমাকে মানব ঢাল রচনা করে নিজেদের জীবন দিয়ে রক্ষা করেছে। মুদ্রা স্ফীতি, অর্থনৈতিক মন্দা আমরা তার থেকে দূরে না- আমাদের উপরও ধাক্কা আসে। সব জিনিস তো আমরা করতে পারি না। সেজন্য আমি সকলকে আহ্বান করেছিলাম; নিজেও শুরু করেছি, কখনো এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। যে যা কিছু পারেন উৎপাদন করবেন। আমাদের খাদ্য উৎপাদন আমরা নিজেরা করবো। বিভিন্নভাবে উৎপাদনমুখী হতে হবে সবাইকে।
জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে জিনিসের দাম, খাবার জিনিসের দাম অতিরিক্ত বেশি। ইতোমধ্যে আপনারা জানেন সাউথ আফ্রিকা, আমেরিকা, লন্ডনসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা ঘুরেছি। দেখেছি সেখানে কি পরিমান জিনিসের দাম। আমাদের মানুষ অত্যন্ত দক্ষ। আমরা যদি চেষ্টা করি, আমাদের খাদ্য আমরা উৎপাদন করি তাহলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও দিতে পারি, ইতোমধ্যে বিদেশেও যাচ্ছে।
কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, অমি কৃতজ্ঞাতা জানাই প্রথমে আমার কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসীর কাছে। সেখান থেকে আমি বারবার নির্বাচিত হই। সব এমপিরা ছোটে তাদের এলাকার জন্য, আর আমাকে দেখতে হয় তিন’শ এলাকা, ১৭ কোটি মানুষকে। আমার সৌভাগ্য এটাই কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসী আমাকে দেখে, আমার জন্য কাজ করে এবং আমাকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দেয়।
এর আগে বেলা এগারোটার দিকে টুঙ্গিপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে পায়ে হেঁটে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যলয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে পৌঁছানোর পর স্থানীয় নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নেন।
প্রধানমন্ত্রীর দুই দিনের সফরের আজ দ্বিতীয় দিন। প্রথম দিন ভাঙ্গা ডা. আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে তিনি বক্তব্য দেন। এরপর বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। বেলা ৪টা ৫৫ মিনিটের দিকে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এসময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নেন।
পরে বিকাল ৫ টা ১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। পরে ছোটবোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্য এবং ৩০ লক্ষ শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে পবিত্র ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ দোয়া এবং মোনাজাত করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে নিজ বাড়িতে যান। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবারের সদস্যদের নিয়ে রাত্রী যাপন করেন।