পরিবেশটা স্বাভাবিক করতে হেসে বলি ‘ডোন্ট ওরি। আই উইল বি উইথ ইউ।’ ও তাকিয়ে থাকে কৃতজ্ঞতার দৃস্টিতে। আমি মাথা নেড়ে বলি ‘ইয়েস আই মীন ইট। তোমাকে ওখানে ফিরে যেতে হবে না।’ আবার হাতদু’টো জোড়বদ্ধ করে তুলে ধরে নিশা।
বলি, রিসেপশনে কথা বলে তোমার জন্য একটা রুম ঠিক করে দিচ্ছি।
বিষ্ময়ে বড় হয়ে ওঠে দু’চোখ। বলে, আমার জন্য একটা রুম মানে!
তোমার একটা নিজস্ব রুম।
আমি তো এই রুমটাকেই আমার নিজস্ব রুম মেনে নিয়েছি।
হেসে উঠে বলি, পাগল!
দরজায় বেল বেজে ওঠে এ সময়। চমকে ওঠে নিশা। হয়তো মনে করে মহিলা এলো কিনা! একটু ভাবি, কে হতে পারে। ও:, নাশ্তার অর্ডার করেছি। ডেলিভারি এসেছে নিশ্চয়ই। ওকে আশ্বস্ত করতে বলি, ডেলিভারি বয়। শাড়ির আচলটাচল ঠিক করে। আমি গিয়ে দরজা খুলে দেই। একটা চায়নীজ ছেলে। গুড মর্নিং বলে। ‘মর্নিং’ বলে টেবিলটা দেখিয়ে দিলে প্যাকেট রাখে সেখানে। বিল বখশিস নিয়ে বের হয়ে যায়। দরজা বন্ধ করে এসে বসি টেবিলে।
নিশা বলে, আমি এখানে থাকলে তোমার কি খুব অসুবিধা হবে?
বলি, আমার তো না। অসুবিধা হবে তোমার। আমি ছেলে। একটা সুন্দরি মেয়ে যদি কোন ছেলের সাথে তার রুমে থাকে বরঞ্চ ভালো লাগার কথা। বলে হেসে দেই।
একটু লজ্জা পায় এ কথায়। মৃদু হেসে বলে, আমারও খারাপ লাগবে না। এবার বেশ সিরিয়াসমতো হয়ে যায়। বলে, প্লিজ আর কোন রুম ঠিক কোর না। আমি এই রুমেই বেশ থাকতে পারবো। আমি জানি এ হোটেলে রুমের ভাড়া অনেক। তুমি অনেক করছো আমার জন্য। আর আমাকে ঋণী কোর না। প্লিজ!
ভাবতে হয়। টাকার কথা আমি ভাবছি না। এভাবে এক সঙ্গে এক রুমে থাকা-। যে রূপ মেয়েটার, কতক্ষন নিজেকে ধরে রাখতে পারবো! মনে মনে আমাকে একটা মহামানব ধরে বসে আছে। শেষে কি আর দশজন পুরুষের কাতারে গিয়ে দাঁড়াবো! না, এটা ঠিক হবে না। দেবতা মনে করেছে। যে ক’দিন আছে আমার সাথে ওর মনে ওই আসনটাই ধরে রাখতে হবে।
বলি, ঠিক আছে। তুমি যদি এখানে থাকতে অস্বস্তি বোধ না করো আমার আপত্তি নাই।
‘থ্যাংক ইউ, থ্যাক ইউ ভেরি মাচ’ বলে দু’হাত তুলে প্রণাম করে। এরপর বলে, তবে তুমি কিন্তু আমার জন্য নিজের কোন অসুবিধা মেনে নিও না। যেভাবে থাকতে নিজের রুমে সেভাবেই মনে কোর। আমার তো আর কোন পথ নেই। তুমি আশ্রয় না দিলে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবো বলো! এই বিদেশের মাটিতে একদম অসহায় অবস্থায়ও যে ভগবান এসে দাঁড়াবে পাশে, কেউ বিশ্বাষ করবে তা!
ভাবি, ওকে কি জানিয়ে রাখবো আমার সিচুয়েশনটা। কিছুই তো জানেনা আমার সম্পর্কে। বলবো কি যে কোন মূহুর্তে আমাকে চলে যেতে হতে পারে। নিজেই এবার নিজেকে প্রশ্ন করি, তাহলে ওর কি হবে! ওর সমস্যা সমাধানের আগেই যদি কোরিয়া থেকে ডাক আসে কি করবো ওকে নিয়ে!
না: এই জটটা খুলছে না। এইখানে এসে বারবার থমকে দাঁড়াচ্ছি। আচ্ছা এখন থাক, যখন অবস্থা দাঁড়াবে তখন দেখা যাবে। এখন এসব বিষয়ে কিছু বলা দরকার নাই। আবার দুশ্চিন্তায় পড়ে যাবে। আত্মবিশ্বাস ফিরে আসছে, মনটা ভালো হয়ে উঠছে, তাই থাকুক।
তবে আমার আজকের কাজগুলো ওকে জানিয়ে রাখা যায়। মহিলাকে ফোন দিতে বলেছি। তার এখানে আসা দরকার নাই। মেয়েটা যাবেনা শুনলে সিন ক্রিয়েট করবে। কখনই যেন সে এখানে আসতে না পারে তার ব্যবস্থা করতে হবে। রিসেপশনে বলে দিলেই হলো। বাকিটা ওরাই টেক কেয়ার করবে। এখন কল দিলে বলবো আমি তার রুমে আসছি। সেখানে গিয়ে যা বলা এবং করার। মেয়েটা ফিরে না গেলে উন্মাদ হয়ে উঠবে। যা কিছু করুক তার রুমে করবে। আমার তাতে কোন অসুবিধা নাই। ওকে বলি, শোন, তুমি তো আর আমার সাথে বেরুচ্ছো না, তাই না?
জিজ্ঞাসার চোখে তাকায়। বলে, কোথায় যাবে তুমি!
এখান থেকে বের হয়ে তো প্রথমে মহিলার ওখানে-।
আমাকে শেষ করতে দেয় না। বলে ওঠে, না না আমি ওখানে কখনো যাবো না।
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.