আমার বিষ্ময়ের কারন বুঝতে পারে এবার। মাথা নীচু করে। ইতস্তত করে বলে, তুমি বলেছিলে। ভাবলাম যদি না পড়ি তুমি মাইন্ড করবে। তাই-।
আমি বেশ জোরেই বলে উঠি, লুঙ্গি আর শার্টে তোমাকে আরো বেশী সুন্দর লাগছে। বলে হাসতে থাকি।
ওও হেসে দেয়। কিছু না বলে খাবারের প্যাকেটটা খুলে বের করতে থাকে।
হঠাৎই মনে হলো, একটু বেশী বলে ফেললাম কি! নাকি বিয়ারের গুনে মাত্রাজ্ঞানটা লোপ পেয়ে আছে। বুঝে ফেললো কি মদ খেয়ে এসেছি! কথা না বলে জুতো মোজা খুলি, লুঙ্গি তোয়ালে নিয়ে পা বাড়াই বাথরুমের দিকে। বলি, তুমি খেয়ে নিতে পারো।
তুমি?
ফিরি ওর দিকে। ও তাকিয়ে আমার দিকে। বলি, আমার ঠিক ক্ষিধে নেই। খেতে ইচ্ছা করছে না কিছু।
শুধায়, ডিনার করেছো।
না। তবে-
আমাকে থামিয়ে দিয়ে বলে, ওসব খাওয়ার পরও ডিনার করা যায়। অসুবিধা হবে না। তুমি ফ্রেশ হয়ে আসো। আমি রেডি করছি।
চুপ হয়ে যাই একেবারে। কোন কথা না বলে গিয়ে ঢুকি বাথরুমে। ধরে ফেলেছে। ধরবেই তো। কম তো খাওয়া হয়নি। যাক, টের পেয়ে গেছে যখন এখন সতর্ক থাকতে হবে যেন মাতলামি প্রকাশ না পায়। অবশ্য ফিরে শুয়ে পড়লেই ঘুমিয়ে যাবো। মাতলামির আর সময়ও থাকবে না।
বের হয়ে এসে দেখি টেবিলে খাবার সাজানো। দাঁড়িয়ে আছে পাশে, এমনভাবে, যেন আমার অপেক্ষা। কোন কথা বলিনা। গিয়ে চেয়ারে বসতে হয়। ও যায় ফ্রিজের দিকে। বলি, কিছু মনে কোর না। আসলে ওই বন্ধুর ওখানে গিয়ে বসলেই সে আর ছাড়তে চায় না।
ওখান থেকেই বলে, এখন কি নেবে, পানি কোক না বিয়ার।
তাকিয়ে দেখি ফ্রিজের দরজাটা খুলে দাঁড়িয়ে আছে আমার দিকে ফিরে। আড়চোখে দেখি আমার জ্যাক লর্ডের বোতলটাও সেখানে। তার মানে ফেলে দেয়নি। টেবিল থেকে নিয়ে ফ্রিজে রেখেছে।
একটু হোচট খাই ওর কথায়। জানতে চাইছে বিয়ার খাবো কিনা! তার মানে এখন ওর সামনে খেলেও কিছু মনে করবে না! ত্রস্তে বলি, না না বিয়ার টিয়ার আর না-।
ষ্মিত হেসে বলে, আমি জানি তুমি ইতিমধ্যেই নিয়েছো।
শুধরে দেই, লিকার না, বিয়ার!
ঠিক আছে। এখন বেশ করে পানি খাও। সব ঠিক হয়ে যাবে। এরপর যদি খেতে চাও একটু বিরতি দিয়ে নেবে।
অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকি মুখের দিকে। বলছে কি! এতসব ও জানে কি করে! কখন কি খাওয়া উচিত! নিজে খায়টায় না তো!
বিষ্ময় কন্ঠে বলি, তুমি এতসব জানো কি করে!
কোন সব?
এই যে ড্রিংকসের ব্যপার স্যপার-।
ও: আমাদের সমাজে এগুলো খুবই স্বাভাবিক ব্যপার। পুরুষরা খায়।
তোমাদের ওখানে সামাজিকভাবে মদ খাওয়া নিষিদ্ধ নয়!
না! এটা তো এক ধরনের ফান, এ্যামিউজমেন্ট।
একটু চুপ থেকে জিজ্ঞেস করি, তুমিও ড্রিংক করো?
না। আমাদের মেয়েরা এসবে অভ্যস্ত না।
তুমি কখনো খেয়েছো?
সামান্য ভেবে নিয়ে বলে, ক্কচিৎ।
আমি আর কথা বলি না। যা ভেবেছিলাম তা নয়। একেবারে আনকালচার্ড গেয়ো নয়। ড্রিংক এর কাছে স্বাভাবিক ব্যপার। রুমে বসে বিয়ার লিকার খেলে কিছু মনে করবে না। শেয়ারও করতে পারে। হঠাৎ ভাবনায় লাগাম দেই। না বাবা, অতটা ঠিক হবে না। আমি যদি নেই কখনো, সামান্য। তাও নেহায়েৎ দরকার না পড়লে না।
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.