তাহলে আমি চলি। ওখানে কি হলো ফোনে জানাবো। এরপর কিছু কাজ আছে। ওপারে মূল হংকং শহরে যেতে হবে। ফিরতে ক’টা বাজবে জানিনা। তুমি কিন্তু সময়মতো খেয়ে নেবে। কালকের মতো যদি ভগবানের অপেক্ষায় বসে থাকো, মাইন্ড করবো কিন্তু।
হেসে দেয়। বলে, ভগবান যদি না খেয়ে থাকে আমি তো তাকে রেখে খেতে পারি না। তো দুপুরে খাওয়া হবে কোথায়!
আমিও হাসতে হাসতে বলি, ওপারে যে অফিসে যাবো সেখানে লাঞ্চ করার কথা আছে। কাজেই আমার জন্য চিন্তা করতে হবে না। তুমি খেয়ে নিও, ওকে!
ঘাড় নেয়ে সায় দেয়।
তাহলে আমি চললাম।
এবার একটু কাতরচোখে তাকায়। বলে, আমি আবার সরি। তোমাকে এই বিশ্রি ব্যপারটা নিয়ে আবার যেতে হচ্ছে মহিলার কাছে।
এক ঝলক মুখের দিকে তাকিয়ে থেকে বলি, ‘ইট্স অল রাইট। টেক কেয়ার।’
‘ইউ টু।’
‘বাই’ বলে বের হয়ে আসি রুম থেকে। নিশা দরজার কাছে এসে পাল্লাটা ধরে দাঁড়িয়ে থাকে। লবি ধরে হাঁটতে হাঁটতে একবার পিছন ফিরে তাকাই। তাকিয়ে আছে একদৃষ্টে। ছোট করে হাত তোলা। আমিও হাত তুলি মৃদু হেসে। এরপর এসে দাঁড়াই রিসেপশনের সামনে। ভেতরে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে দেয় নিশা।
রিসেপশনে কিছু পেমেন্ট দেয়ার ছিলো। এসব গেস্ট হাউসে রুম ভাড়া এডভান্স দিতে হয়। তবে পুরনো কাস্টমার চেক আউটের সময় দিলেও চলে। আমি এখানে এবারই প্রথম এসেছি। বড় চ্যাংয়ের গেস্ট হাউসের রেগুলার কাস্টমার বলে ছোট চ্যাং অবশ্য খাতির করতে চেয়েছিলো। অর্থাৎ বাকি রাখা। আমি নেই নাই সে সুবিধা। এসেই দুই দিনের অগ্রিম দিয়ে রেখেছিলাম। এখন দিলাম আরো দুই দিনের। নিশার ব্যপারে নতুন কিছু বলার নাই। তারপরও লোকটা হেসে শুধায়, সব কিছু ঠিক আছে? হেসে ঘাড় নেড়ে সায় দেই। বুঝে নিলো কালকের নির্দেশই বহাল আছে।
ব্যালকনি দিয়ে হাটতে হাটতে কিছুক্ষন আগে নিশার বলা কথাগুলো মাথার মধ্যে ঘুড়ছিলো। কি করে ও এত সহজ থাকতে পারছে। রাত থেকে যেন সম্পূর্ন ভিন্ন এক নিশা। নিজের এত বড় একটা সমস্যা, যেন কোন চিন্তাই নাই। বুঝলাম আমি ডিল করছি ব্যপারটা। তাই বলে এভাবে নিশ্চিস্ত থাকতে পারে কেউ! আশ্চর্য্য মেয়ে!
হেলিমের ফোনে চিন্তার জাল ছেড়ে। ধরি। প্রথমেই অনুযোগ, কি খবর, ফোন দিলেন না যে! তবে কন্ঠে তার বেশ উদ্বিগ্নতা।
বলি, এখন যাচ্ছি মহিলার কাছে। সকাল থেকে অপেক্ষায় ছিলাম সে কল দেয় কি না। আচ্ছা শোনেন, যদি রুমে গিয়ে না পাই, তাকে ফোন দেবো। যদি না ধরে বুঝতে হবে ঘটনা খারাপ-
মাইনে!
পালাতে পারে। তেমন হলে আপনার বউয়ের কাজিনকে দরকার হবে। জেনি কি এসেছে?
জানায় এখনো আসেনি তবে এসে যাবে যে কোন সময়।
বলি, ওকে একটু বলে রাখেন আমি ফোন দিলে যেন সঙ্গে সঙ্গে তার কাজিনকে যোগাযোগ করে। এয়ারপোর্টে ইনফরমেশন দিয়ে রাখতে হবে যাতে পালাতে না পারে।
হেলিম একটু চুপ থেকে বলে, ওকে ওকে, বুঝছি। নো প্রবেøম। আমি জেনিরে কইয়্যা রাখতাছি।
ওকে দেন। যদি দরকার না হয় আর কল দেবো না। মহিলার সাথে শেষ করে অফিসে আসছি।
ওকে।
বাই বলে ফোন রাখি।
লিফট নিয়ে নেমে আসি পাঁচ তলায়। বেশ টেনশন বোধ হচ্ছিলো। মহিলাটা পালালে এক বিরাট ঝামেলা বেধে যাবে। থানা পুলিশ এয়ারপোর্ট। তারপর কোর্ট কাছারি। মনে মনে চাইছিলাম দয়া করে যেন থাকে রুমে।
না, পালায় নি। রুমেই পাওয়া গেলো। দুইবার বেল বাজাতে খুলে দেয় দরজা। যেন ঘাম দিয়ে জ্বর ছাড়লো আমার!
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.