আমাকে দেখেই ধমকে ওঠে ‘ইউ? হয়্যার ইজ নিশা?’ ধমক হজম করি। খারাপ লাগলো না। অন্তত পালানোর চাইতে ভালো। কোন কথা না বলে ঢুকি রুমে। আমার পেছনে দেখে নিশ্চিত হয় নিশা আসেনি। এরপর দরজা বন্ধ করে দেয়। চোখ পাকিয়ে বলে ‘শি নো কাম?’
নিরুত্তাপ কন্ঠে বলি ‘নো।’
এবার বাঘিনীর মতো গর্জে ওঠে, কোথায় রেখেছো তাকে?
একই নিরুত্তাপ ভঙ্গিতে বলি, তুমি জানো আমি তাকে রাখিনি। সেই আমার রুমে থাকছে।
তুমি তাকে কিডন্যাপ করেছো।
এবার ধমক দেই বেশ শক্ত করে, বাজে বকো না। তুমি আমাকে ফোন দিলে না কেন?
কেন আমি তোমাকে ফোন দেবো?
আরো কঠিন করে বলি, আমি তোমাকে চব্বিশ ঘন্টা সময় দিয়েছিলাম। সে সময় পার হয়ে গেছে। তুমি এখন তার পাসপোর্ট টিকেট ফেরত দিচ্ছো না আমি দ্বিতীয় অপশনে যাবো! বলে ফোনটা হাতে নেই। বলে চলি, আমি ইতিমধ্যেই তাদের সাথে কথা বলেছি। কল দিলেই এখানে এসে উপস্থিত হবে। এখন বলো কোনটা চাও? বলে ফোনে নম্বর টিপবো এমন ভাব করি।
নিয়ে নিলাম একটা রিষ্ক। এখন সে নিজেই চীৎকার করে লোক ডাকতে পারে। গেস্ট হাউসের চায়নীজ মালিককে দিয়ে পুলিশ ডাকিয়ে উল্টো আমাকে ডাকাত বলে ধরিয়ে দিতে পারে। আমি এক ঠায় তাকিয়ে রয়েছি তার মুখের দিকে। হাতে ধরা ফোনটা।
একদম চুপ হয়ে রইলো মহিলা। মাথা নীচু করে গিয়ে বসে বিছানায়। কোন কথা নাই। মনে হলো পুলিশের কথা বলায় একটু থমকে গেছে। আমি সময় দেই ধাতস্থ হতে। একটু পর ফোস ফোস করে কান্না শুরু করে। তারপর নাকে আঁচল চাপা দিয়ে তামিলে কিছু বলে চলে বিড়বিড় করে। হয়তো নিশাকে শাপছে বা নিজের ভাগ্যকে দুষছে।
আশ্বস্ত হই। মনে হয় বরফ গলতে শুরু করেছে। ঝামেলায় যেতে চাইবে না। একটু কেঁদেটেদে নাকচোখ মুছে বলে, আমি ওর সাথে কথা বলতে চাই।
বলি, নো প্রবেøম। ফোনে লাগিয়ে দেবো?
নো। যেন গর্জে ওঠে। আমি ওকে সামনাসামনি পেতে চাই।
এটা তো ঠিক নিশার পাসপোর্ট টিকেট সে আমার হাতে তুলে দিতে পারে না। যার জিনিষ তাকেই দেবে। আসলেই নিশা আমাকে দিয়ে এসব করাচ্ছে না সবই আমার চাল এ ব্যপারটাও তো খতিয়ে দেখবে। হ্যাঁ, দু’জনকে সামনা সামনি হতেই হবে। বলি, ওকে, তার সাথে তোমার দেখা হতে পারে।
সে যেখানে আছে আমাকে নিয়ে চলো সেখানে।
ভাবতে হয় একটু। আমার রুমে নিয়ে যাওয়াটা ঠিক হবে কিনা! রুমে গিয়ে যদি চেচামেচি শুরু করে! না মারধোরই শুরু করে মেয়েটাকে। ঘাগু মহিলা। শুধু প্যাচে পড়ে গেছে হংকং বলে। মিডল ইস্ট বা অন্য কোথাও হলে ওয়ান টু থ্রিতে সমস্যার সমাধান করে ফেলতো। সোজা লোক পাঠিয়ে উঠিয়ে আনতো। না, রুমে নেয়া যাবে না। শেষে গো ধরে বসলে কেলেংকারি হবে। গেস্ট হাউসটা সাধারন লোকজনের জন্য নয়। ওখানে ফালতু কায়কারবার কম। মান সম্মান থাকবে না।
বলি, ওখানে তোমার যাওয়াটা ঠিক হবে না।
চোখ পাকিয়ে তাকায়। আবার গর্জে ওঠে, কেন? কোথায় আছে সে?
আমার রুমে।
তো? সেখানে আমি গেলে অসুবিধা কি?
মিথ্যা বলি, নিশা চাইছে না তুমি আমার রুমে গিয়ে চেঁচামেচি করো সিন ক্রিয়েট করো। আমি তাকে তোমার এখানে নিয়ে আসতে পারি। অবশ্য সে যদি আসতে রাজী হয়।
মানে?
যে ব্যবহার তার সাথে করেছো আমি জানিনা সে তোমার এখানে দ্বিতীয়বার আসতে চাইবে কিনা।
কিন্তু আমার সাথে না মিটিয়ে সে চেন্নাই ফিরে যাবে কি করে?
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.