ফোন রেখে একবার বাথরুমের দরজার দিকে উঁকি দিয়ে বলে, শোনেন, রাইখ্যা দেন।
অবাক হয়ে তাকাই। কি রাখবো!
কসম, কইতাছি এই রকম মাইয়া আর জিন্দেগীতে পাইবেন না।
তো! পাসপোর্ট টিকেট পেয়ে গেছে, কাল বাদে পরশু চলে যাবে। এখন জোর করে আটকে রাখবো!
জোরের কথা কইতাছি?
তাহলে!
প্রেমের জালে আটকান।
এ সময়ই বের হয়ে আসে নিশা। হেলিম ‘ওয়াও’ আওয়াজ করে তাকিয়ে থাকে হা হয়ে তার দিকে। আমিও চোখ ফেরাতে পারি না। স্কীন টাইট জিন্সের ওপর একটা শার্ট পরেছে। সেটাও আঁটশাট। এবারই বোঝা গেলো ওর ব্রেস্ট বেশ বড় তবে বেঢপ বড় নয়। বডির সাথে মানানসই। বাথরুমের আয়নাতেই হালকা মেকাপ নিয়েছে। আমরা দু’জনই যেন হা হয়ে তাকিয়ে থাকি। ও তা খেয়াল করেনা। ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে নিজেকে দেখে নিয়ে ফেরে। পাসপোর্ট টিকেট ফেরত পাওয়ায় দারুন খুশী। চোখে মুখে উচ্ছলতা। হেসে বলে ‘ইজ দিস ওকে?’
আমাদের দু’জনেরই সম্বিৎ ফেরে। আমি বলি ‘নট ওনলি ওকে, সুপার ওকে।’
হেলিম বলে ‘প্যারাডাইস লস্ট!’
‘হোয়াট!’ ভ্রæ কুচকায় নিশা।
সামলে নিয়ে বলে হেলিম, তোমাকে দেখলে এখন গডও স্বর্গ ছেড়ে চলে আসবে।
হেলিমের এ কথায় হেসে উঠি আমরা দু’জন। নিশা এগিয়ে এসে পার্সটা তুলে নেয় হাতে। বলে ‘আই এ্যাম রেডী।’
উঠে দাঁড়াই আমরা। বের হয়ে এসে দরজা লক করি।
রউফ সাহেবকে পাওয়া যায় চুংকিংয়ের সামনেই। একটু আগেই এসেছেন। হাঁটাহাঁটি করছিলেন। পরিচয় করিয়ে দেই তাকে নিশার সাথে। দু’জন কুশল বিনিময় করে হাই হ্যালো বলে। সেই সাথে নিশা হাতজোড় করে মিষ্টি হেসে নমস্তে বলে। কিন্তু রউফ সাহেবকে মনে হলো কেমন যেন একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছেন। তাকিয়েই থাকেন নিশার দিকে। ব্যপারটা বুঝতে পেরে হেলিম গলা খাকারি দেয়। যেন হুশে ফেরেন রউফ সাহেব। এক গাল হেসে বলেন ‘নাইস টু মীট ইউ।’
নিশা ষ্মিত হেসে বলে ‘মী টু।’
পরিচয়পর্ব শেষ হয়। এখন ভেন্যু ঠিক করতে হয়। নিশাকে শুধায় হেলিম কি খাবে সে। ইন্ডিয়ান চায়নীজ না থাই। নিশা তাকায় আমার দিকে। তারপর হেলিমকে বলে তার কোন বিশেষ চয়েস নাই। আমাদের যা পছন্দ ওরও তাই।
রউফ সাহেব বলেন চায়নীজে যাওয়া যায়। আমি বলি দুই দিন ধরে সে চায়নীজই খাচ্ছে। কাল রাতে ইন্ডিয়ান খেয়েছে। এখন থাই চলতে পারে। তথাস্ত। তিন বøক পশ্চিমে এলিজাবেথ রোডের ওপর ওপর একটা থাই রেষ্টুরেন্ট আছে। হেলিম বলে খাবার বেশ ভালো। বেশ বিজি রেষ্টুরেন্টটা। সেখানে যাওয়া যায়।
অল্প একটু হেঁটে আসি আমরা রেস্টুরেন্টে। ডিনার টাইম। একদম জমজমাট অবস্থা। টেবিল খালি নাই। মিনিট পাঁচ সাতেক দাঁড়াতে হয়। এরপর এ্যটেনডেন্ট আমাদেরকে একটা চারজনের টেবিলে নিয়ে আসে। মেন্যু বুক টেবিলেই ছিলো। হেলিমকে বলি পছন্দ করে অর্ডার দিতে। সে লেগে যায় আইটেম বাছতে।
নিশা একটু জড়োসরো হয়েই বসে থাকে। অবশ্য জিন্স শার্টের সাথে ওই লজ্জাশীলা ভাবটা মানানসই ছিলো না। তারপরও প্রথম এসেছে আমাদের সাথে বাইরে। কিছুটা সংকোচ বোধ হওয়াই স্বাভাবিক। কথা প্রায় হেলিমই চালালো। রউফ সাহেব হিন্দিতে শুধান নিশাকে ‘আপ পহলে দফা আয়ে হো হংকং?’
নিশা তাকায় আমার দিকে। সে দৃস্টির অর্থ রউফ সাহেব কি শুধালেন বা কি জবাব দেবে। আমি বলে উঠি ‘শি কান্ট স্পিক হিন্দি।’
রউফ সাহেব একটু হেসে মাথা ঝাকান। তারপর ইংরেজীতে বলেন, আমি জানি তামিলনাডুর লোকেরা হিন্দী বলে না।
নিশা বলে ‘বাট নাও এ ডেইজ ইয়াং পিপল স্পেশিয়ালি স্টুডেন্টস আর লার্নিং হিন্দি।’
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.