থমকে যাই। আসলেই তো ও: মানে কি! কেন মুখ ফষ্কে বের হয়ে এলো শব্দটা। সামলে নেই। কথাটা ঘুরিয়ে দিতে বলি, বলছি- আমাদের মাঝে যদি কোন সম্পর্ক হয়ে থাকে ভাবছি এর কি নাম দেয়া যেতে পারে। একটু চুপ থেকে বলি, আচ্ছা বন্ধুত্ব কি হতে পারে!
হেসে বলে, সে তো আমরা আছিই। কাল বললাম না আমার ভগবানই আমার সব চেয়ে বড় বন্ধু।
এবার একটু রাগমতো করে বলি, আচ্ছা ভগবানকে কি এখন বাড়ী পাঠিয়ে দেয়া যায় না!
হেসে বলে, ভগবান যেখানেই যাক সে সব সময় আমার মনেই থাকবে।
বলি, ওকে দেন, উই আর ফ্রেন্ডস। জাস্ট ফ্রেন্ডস, তাই তো!
ভ্রæ কুঁচকে বলে, জাস্ট ফ্রেন্ডস মানে!
জাস্ট ফ্রেন্ডস মানে শ্রেফ বন্ধু!
কিন্তু বন্ধুত্বকে শ্রেফ শব্দ দিয়ে ক্লাসিফায়েড করতে হবে কেন!
মেয়েটা কথার ভালো প্যাচ কষতে জানে। আমি একটু ইতস্তত: করতে থাকি। কি বলবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। মনে হলো এ সময় কেমন যেন একটু গম্ভীর হয়ে পড়েছি। চোখে মুখে স্বাভাবিকতা ফিরিয়ে আনি। কন্ঠে হাসি এনে বলি, তাহলে কোন শব্দ ব্যবহার করলে এ্যপ্রোপ্রিয়েট হবে।
বন্ধুত্ব বন্ধুত্বই। তাকে কোন বিশেষণ না দিয়ে অবারিত রাখলেই কি ডিগনিটি বাড়ে না!
মনে হলো কথাটায় যুক্তি আছে। বলি, ঠিকই বলেছো। এবার হেসে দেই। হাসতে হাসতেই বলি, তাহলে বন্ধু, এখন রাত অনেক হয়েছে। তুমি কি মনে করছো না আমাদের এখন শুয়ে পরা উচিত।
হঠাৎই যেন সচকিত হয়ে পরে। বলে, ও: আই এ্যম সরি, তুমি কি এখনই ঘুমিয়ে পড়তে চাও?
হেসে বলি, তুমি চাও না!
বলে, তুমি নিশ্চয়ই টায়ার্ড।
দৃষ্টিতে এক ধরনের মাদকতা এনে গভীর কন্ঠে শুধাই, তুমি কি বাকি রাত ধরে কথা বলতে চাও!
একটু চুপ থেকে বলে, তোমার সাথে কথা বলতে কেমন যেন বোধ হয় আমার। মনে হয় খুব ভালো লাগছে, সামথিং সেনসেশনাল, সামথিং- ঠিক বোঝাতে পারছি না ফিলিংসটা। বলে থেমে যায়।
আমি কোন কথা না বলে তাকিয়ে থাকি ওর দিকে। সে সময় চোখ ওর টিভির ওপর। একটুক্ষন চুপচাপ। তারপর এদিকে ফিরে বলে, এ রকম কখনো ঘটেনি। জানো আমার সেই কাজিনটার সাথে কথা বলার সময়ও এমন থ্রিলিং, এক্সাইটমেন্ট বোধ করি না। তারপর আপন মনে বলে চলে ‘আই ডোন্ট নো হোয়াই! দিস ইজ রিয়েলি স্ট্রেঞ্জ! ফিলস লাইক, ইফ উই টক আওয়ার্স, ইফ ফর হোল নাইট, আই উইল নট গেট বোরড। রিয়েলি ইটস্ এ্যমিজিং!
আমি একটু হেসে বলি ‘ইউ লাইক মি, মে বি ইটস্ ফর দ্যাট!’
বলে, আমি তোমাকে পছন্দ করি এটা সত্য। না হলে তোমার সাথে এমন সহজ হতে পারতাম না। তবে এই ফিলিংসটা বোধহয় সে কারনে নয়। তুমি কিছু একটা করেছো হয়তো আমাকে!
কি!
সেটা জানি না। হয়তো সম্মোহিত।
আমি ওকে সম্মোহিত করেছি মানে! মেয়েটা কি তাহলে কোন ঘোরের মধ্যে পড়ে গেছে! অবশ্য এই বয়সের একটা মেয়ে কোন ছেলের সঙ্গে এত দীর্ঘ সময় একসাথে থাকলে, এভাবে পর পর কয়েক রাত এক রুমে কাটালে শরীর মনে এক ধরনের অনুভূতি সৃষ্টি হয়। এটাই মানব মানবীর ধর্ম। সে হিসেবে ওর ভেতর এক ধরনের আচ্ছন্নতা সৃস্টি হওয়া অস্বাভাবিক নয়। আমার নিজের বেলায়ই তো মনে হচ্ছে কেমন নেশাগ্রস্থ ভাব। যত সময় যাচ্ছে মেয়েটার প্রতি কেমন আকর্ষন বোধ করছি! মাঝে মাঝে শিহরন খেলে যায় পুরো শরীরে!
এ সময় নিশা উঠে বাথরুমে যায়। আমি হাত পা টানটান করে আড়মোরা ভাঙ্গি। না: খুব বেশী একান্তে এসে গেছি দু’জন। একটু দুরত্ব, কিছুটা ডাইভারশন দরকার। টিভির দিকে চোখ দেই। আর দেরী করবো না। ফিরলেই বাতি নিভিয়ে শুয়ে পরবো। কিন্তু ঘুম কি আসবে সহসা! নার্ভগুলো স্বাভাবিক হতে সময় লাগবে। গোটা দু’য়েক বিয়ার খেতে পারলে ভালো হতো। চিন্তায় ডাইভারশন আসতো। না, তাতে শুতে আরো দেরী হয়ে যাবে। আর যদি খাওয়ার নেশায় পেয়ে যায় কোথায় শেষ হবে কে জানে। অতএব বিয়ার খাওয়ার চিন্তা বাদ।
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.