হঠাৎই মনে পরে ও তো দু’দিন বাদে চলে যাচ্ছে। প্লেনে উঠিয়ে দিয়ে এলেই সব শেষ। ওর জায়গায় ও থাকবে আমি আমার জায়গায়। হয়তো জীবনে দ্বিতীয়বার কেউ দেখাও পাবো না কারও। হ্যাঁ, এই এ্যঙ্গেলে ভাবনাগুলোকে ডাইভার্ট করে দিলে চিন্তায় ভিন্নতা আসবে। ওর প্রতি কনসেন্ট্রেশন দুর হবে।
খুট করে বাথরুমের দরজা খোলার শব্দে আমার ভাবনার জাল ছিড়ে যায়। নিশা এসে বসে পাশের বিছানায়। আমার দিকে ফিরে একটু হাসে। বলে ‘সরি। আই টক্ড টু মাচ, রাইট? ইউ ওয়ান্ট টু গো শ্লিপ নাও?’
ফিরেছে থেকে ওর দিকে তাকিয়ে ছিলাম। মনে হলো চোখ মুখে পানি ছিটিয়ে এসেছে। হঠাৎ কি দরকার পড়লো বুঝতে পারলাম না। ওর প্রশ্নের জবাবে মৃদু হেসে বলি ‘ইউ ডোন্ট ওয়ান্ট?’
মাথা নেড়ে না বোঝায়। ঠোটের কোনায় আলতো করে ফুটিয়ে তোলা দুষ্টুমির হাসি। তাকিয়ে থাকি দু’জন দু’জনার দিকে কয়েক মূহুর্ত। হঠাৎ নিজেকে সামলে নিয়ে বলে ‘আই ওয়াজ জোকিং। ইউ নীড শ্লিপ। লেটস্ গো!’
আমিও দুস্টুমির কন্ঠেই বলি ‘টুগেদার!’
‘ইউ নটি’ বলে হাসে।
বলি, যদি আমার ঘুম না আসে!
‘কল মি।’ বলে লেপের নীচে ঢুকে যায়। মাথার ওপর দিয়ে লেপ তুলে দিতে দিতে বলে, আমি ঘুম পাড়িয়ে দিতে জানি।
‘ওকে, থ্যাংক ইউ’ বলে আমিও লেপ টেনে নেই। লাইট টিভি বন্ধ করতে করতে বলি ‘গুড নাইট, হ্যাভ এ নাইস শ্লিপ।’ লেপের নীচ থেকে ও ও বলে ‘ইউ টু। গুড নাইট।’
আমাদের কথা শেষ। কিন্তু ঘুম আমার আসেনা। কতক্ষন তাকিয়ে ছিলাম, কতবার এপাশ ওপাশ করেছি জানিনা। হয়তো শেষ রাতের দিকে চোখ লেগে এসেছিলো। ও কখন ঘুমিয়েছে জানিনা। পরদিন সকাল দশটার দিকে আমার ঘুম ভঙ্গে। রুম অন্ধকার। লাইট না জ্বেলে উঠে বাথরুমে যাই। বের হয়ে বাথরুমের লাইট অফ করতে যাবো, নিশার কন্ঠে থামি। বিছানার ওপর উঠে বসেছে। ষ্মিত হেসে বলে ‘গুড মর্নিং।’
‘মর্নিং’ বলে আসি আমার বিছানায়। শুধাই, লাইট জ্বালবো?
বলে, জ্বালতে পারো।
সুইচ টিপে আলো জ্বেলে ওর দিকে তাকাতেই চমকে উঠি। এ কি চেহারা হয়েছে! কেমন রুক্ষèমতো। শুধাই, ঘুমাও নাই রাতে!
হেসে বলে ‘ইয়েস।’
‘দেন হোয়াই ইউ লুক লাইক সো!’
‘লুক লাইক হোয়াট?’
মনে হচ্ছে সারা রাত চোখের পাতা এক করো নি!
কথা না বলে উঠে দাঁড়ায়। লেপটা ভাঁজ করতে করতে বলে ‘মে বি আই ওয়াজ ড্রিমিং লট অব থিংস। ইটস্ অল রাইট। গোসল করলে ঠিক হয়ে যাবো।’
তার মানে রাতে ঘুম হয় নাই। আমারও তো একই অবস্থা। কেমন তন্দ্রাচ্ছন্নের মতো ছিলাম। যাই হোক এখন গোসলটোসল সেরে নাশতা খাই আগে। কাল সেই সন্ধ্যায় থাই খাওয়া হয়েছে। এসব খাবার পেটে বেশীক্ষন থাকে না। ভোর রাত থেকেই ক্ষিধেভাব ছিলো। শুধাই, তোমার ক্ষিধে লাগেনি?
মুখের দিকে তাকিয়ে হেসে দেয়। তারপর মাথা নেড়ে বোঝায় লেগেছে।
বলি, তাহলে আর দেরী করি না। গোসল করতে করতে নাশতা এসে যাবে।
ফোন তুলে নাশতার অর্ডার করি।
ও যায় আগে। ফিরে এলে আমি যাই। শেভ দরকার ছিলো। করে অনেকক্ষন ঠান্ডা পানির নীচে দাঁড়িয়ে থাকি। বেশ সময় নিয়ে গোসল করায় শরীর ঝড়ঝরে, সেই সাথে মনটাও হালকা হয়ে যায়। বের হয়ে এসে দেখি নাশতা এসে গেছে। আর দেরী না করে বসে যাই দু’জন। খাওয়া শেষে নিশা উচ্ছিষ্ট গারবেজ করে প্লেট চামচগুলো ধুয়ে আনে। তারপর কাপে চা ঢেলে একটা এগিয়ে দেয় আমাকে। ওরটা নিয়ে এসে বসে ওর বিছানায়।
কাপে চুমুক দিয়ে বলি, এখন আসো আমাদের আজকের কাজগুলো ঠিক করে নেই।
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.