কি কি কাজ আছে তোমার আজ?
ভাবি কয়েক মূহুর্ত, সত্য বলবো না বানিয়ে বলবো। আচ্ছা দেখি না সত্য বললে ওর কি প্রতিক্রিয়া হয়। বলি, ধরলে অনেক কাজ, আবার যদি মনে করি আসলে কোন কাজই নাই আজ।
একেবারে লাফিয়ে ওঠে কথাটা শুনে। বলে, কোন কাজ নাই! তাহলে তুমি আর এখন বাইরে যাচ্ছো না! থ্যাংক ইউ। থ্যাংক ইউ ভেরী মাচ!
মনটা খুশীতে ভড়ে যায় ওর এই প্রতিক্রিয়ায়। তারপরও অবাক হওয়ার ভান করে বলি, থ্যাংক ইউ ভেরী মাচ কেন!
তুমি আজ আমাকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছো না! তোমাকে এক মূহুর্তের জন্যও হারাতে হচ্ছেনা! চলো আজ আমরা সারা দিন রুমেই কাটাই। কোত্থাও বের হবো না, ঠিক আছে! বলে সমর্থনের আশায় তাকিয়ে থাকে চোখের দিকে।
একটুক্ষন গভীরভাবে চোখের দিকে তাকিয়ে থেকে হেসে দেই। বলি, সারাদিন রুমে থাকলে এক সময় বোর লাগতে পারে, নেশাও লেগে যেতে পারে।
ধরে বসে। বলে, নেশা লেগে যেতে পারে মানে! কিসের নেশা!
সে কথায় না গিয়ে বলি, তার চেয়ে চলো কিছুক্ষন বাইরে থেকে ঘুড়ে আসা যাক। একটু ভেরিয়েশন আসবে।
কিছু ভাবে। তারপর মুখ তুলে বলে, বুঝেছি। ঠিক আছে। বাইরে বেরুলেও তুমি তো সাথেই থাকছো, তাই না!
হালকা হেসে বলি, এক সাথে ঘুড়তে বের হলে তো এক সাথেই থাকা হয়!
চলো তাহলে বের হই। বলে উঠে দাঁড়ায়। ব্যাগ খুলে কিছু কাপড় বের করে বলে, আমি তাহলে রেডী হয়ে নেই। ঘাড় নেড়ে সায় দেই। গিয়ে ঢোকে বাথরুমে ।
আমিও উঠি। কোথাও নিয়ে যাওয়া যায় ওকে। শহরটা দেখতে চেয়েছে, একটু ঘুড়িয়ে আনা যায়। এ সময়ই আসে হেলিমের ফোন। ধরতেই ঝাড়ি। ‘কই হারাইয়া গেলেন ভাই! একটা ফোন দেওয়ারও সময় নাই!’
হেসে দেই। মিথ্যা বলি, ভাইরে সকাল থেকে কয়েকটা কাজ সাড়লাম। তো এখন ফ্রি। রেডী হচ্ছি, বের হবো।
অফিসে চইলা আসেন। মাইয়াডারেও আইনেন লগে। রুমে একলা বইয়া আর কি করবো। জেনি আইছে আইজ। অরে কইছি কাম অইয়া গেছে। হ্যারে একটু দেখতে চাইছে।
বলি, ওকে, নো প্রবেøম।
ওকে দেন, আসেন তাইলে। বাই বলে ফোন রাখে হেলিম। আমি জামা কাপড় পরে নেই এই ফাঁকে। জুতা মোজা পড়তে পড়তে নিশা বের হয়ে আসে। একটা স্কার্ট পরেছে। ওপরে সাদা শ্লিভলেস টপস। গিয়ে দাঁড়ায় ড্রেসিং টেবিলের সামনে। আমি একটুক্ষন তাকিয়ে থাকি ওর দিকে। একটু অন্যরকম লাগছে এ বেশে। অনেকটা শ্রীলঙ্কানদের মতো। হালকা মেকাপ নিয়ে বলে, আমি রেডী।
হেসে বলি, আমিও রেডী।
‘লেটস মুভ দেন।’
‘ইয়েস’ বলে এগোই দরজার দিকে। নিশা পার্সটা তুলে নেয় হাতে।
বের হয়ে আসি রুম থেকে। গেস্ট হাউজের বাইরে এসে হাঁটতে থাকি লবি ধরে। কেউ কোন কথা বলছি না। তবে আড়চোখে লক্ষ্য করি বেশ একটা গর্বিত ভাব ওর চোখেমুখে। প্রশান্তির কমনীয়তা। লিফটের সামনে এসে দাঁড়াতে হয় মিনিট পাঁচেক। আর কেউ নেই। আমরা দু’জনই। একটু হেসে বলে, খুব হালকা মনে হচ্ছে নিজেকে। মনে হচ্ছে আমিও দশজন মানুষের মতো একজন মানুষ। আর ওই কয়দিন মনে হতো আমি যেন আলাদা কেউ এ সমাজ থেকে। সে সন্ধ্যায় রাস্তায় দাঁড়িয়ে নিজেকে কি মনে হচ্ছিলো জানো!
তাকাই। বলে চলে, মনে হচ্ছিলো যেন অন্য কোন জগত থেকে আসা মানুষ থেকে ভিন্ন কোন প্রানী আমি একটা। লজ্জায় ঘেন্নায় ভেতরে সেঁধিয়ে যাচ্ছিলাম। আজ কেমন গর্ব বোধ হচ্ছে নিজেকে একজন মানুষ হিসেবে দেখতে।
আমি কোন মন্তব্য করিনা। লিফট এসে যায়। নীচে নেমে এলে নিশা জানতে চায় কোথায় যাবো এখন।
বলি, কাল যে বন্ধুটা আমাদেরকে সাহায্য করলো আপাতত: ওর অফিসে। পাশের বিল্ডিংয়েই। ওর বউ তোমাকে দেখতে চেয়েছে।
বলে, ও হ্যাঁ সেদিন সে বলছিলো যে তার বউ একজন চায়নীজ। কিন্তু কোন চায়নীজ মেয়ে কি ইন্ডিয়ানকে বিয়ে করে!
Disclaimer:
The editorial team is not responsible for the content of the writing.