পাপের ঘড়া পূর্ণ হলে প্রকৃতির প্রতিশোধ শুরু হয়। আজ গোটা বিশ্বের যে অবস্থা, মাঝেমাঝে মনে হয় তাই কি চলছে! আন্তর্জাতিক গন মাধ্যমগুলোয় তাকানো যায় না। প্রতি ঘন্টায় লাফিয়ে লাফিয়ে উঠছে টলবার। চীনকে টেক্কা দিয়ে ইটালী, ইটালিকে অতিক্রম করে স্পেন, স্পেনকে পেছনে ফেলে আমেরিকা! যেন মৃত্যুর প্রতিযোগীতা। কারও কিছু করার নাই, তাকিয়ে তাকিয়ে মৃত্যুর এই মিছিলের সংখ্যা গোনা ছাড়া।
এত বড় বড় পরাক্রমশালী সব রাস্ট্র সরকার, ট্যাংক মিসাইল ড্রোন ফাইটার জেট সাবমেরিন ক্ষেপনাস্ত্র নিউক্লিয়ার, নিমিষে মানব প্রজাতি ধ্বংসের সব আধুনিক মারনাস্ত্র, অথচ ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র একটি অনুজীব- চোখেও দেখা যায় না, তার কাছে কত অসহায়। বাঘা বাঘা সব পন্ডিত সায়েন্টিস্ট গবেষক বিজ্ঞানী এতদিনে একটা প্রতিষেধক বের করতে পারলেন না। অথচ কত বড়াই! দোর্দন্ড প্রতাপশালী সব রাস্ট্র, শীর্ষ সন্ত্রাসী আমেরিকার নেতৃত্বে গত বিশটা বছর মধ্যপ্রাচ্যে কি নৃশংসতা বর্বরতা চালিয়েছে কল্পনা করে দেখুন। টুইন টাওয়ার ধ্বংসকে অজুহাত হিসেবে ধরে প্রথমে আফগানিস্তান, তারপর ইরাক, লিবিয়া, মিসর, লেবাবন, সিরিয়া তথা গোটা মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে লক্ষ লক্ষ নিরীহ মানুষকে নির্বিচারে হত্যা করেছে।
কখনও আলকায়েদা ধ্বংসের নামে কখনও জীবানু অস্ত্র বিনাশের নামে কখনও ‘ওয়ার অন টেরর’ জারী করে কখনও জঙ্গী নির্মুলের নামে, আইএস সৃস্টি করে আবার আইএস দমনের নামে কত লক্ষ মানুষকে এই সম্মিলিত বাহিনী হত্যা করেছে আজও তার হিসাব বের করা যায় নাই! বিভিন্ন দেশে টর্চার সেল তৈরী করে আবু গরিব কারাগার গুয়ান্তানামো বে’র কারাগারে কি অমানুষিক অত্যাচার চালিয়েছে বন্দীদের ওপর! এদের এই নির্মমতা ববর্রতা পৈশাচিকতার কারনে কোন কোন দেশ ধ্বংশস্তুপে পরিনত হয়েছে। দুর্ভিক্ষ সৃস্টি হয়েছে। লক্ষ লক্ষ সন্তান এতিম হয়েছে স্ত্রী বিধবা হয়েছে মা বাবা সন্তান হারিয়েছে। নির্যাতিত নিপীড়িতদের বুকফাটা আর্তনাদ চোখের পানিতে ফরিয়াদ দু’হাত তুলে বিচার প্রার্থনা- মনে হচ্ছে এসব বৃথা যায় নাই! সেই দস্যুসর্দার বুশ আজ ক্ষমতায় নাই, তার প্রধান স্যাঙাৎ টনি ব্লেয়ারও বিদায় নিয়েছেন, কিন্তু গজবটা তাদের দেশের ওপরই যেন বেশী। তাকিয়ে দেখুন সেই জোটের অন্যতম মিত্রদেশগুলোয়ই আজ বেশী আক্রান্ত।
ইটালি স্পেন ফ্রান্স জার্মানী- সবারই ত্রাহি মধুসুদন অবস্থা! প্রকৃতির প্রতিশোধ ছাড়া একে আর কি বলা যায়! পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআনে বিভিন্ন সময়ে এই ধরনের অনেক জাতি জনগোষ্ঠীকে ধ্বংশ করে দেয়ার কথা বলা আছে- যারা সীমা লঙ্ঘন করেছিল। কিন্তু দু:খ হচ্ছে এই প্রতিশোধের বলি হচ্ছে নিরীহ মানুষ। সাধারন জনগন। প্রান যাচ্ছে নিরপরাধদের। জানিনা কত প্রানের বিনিময়ে এই প্রতিশোধ শেষ হবে, তবে একদিন মানব প্রজাতি আবার উঠে দাঁড়াবে। ততদিনে কোমড় ভেঙ্গে যাবে মহা শক্তিধরদের।
যদি এই শিক্ষা থেকে বিশ্ব মোড়লরা ভবিষ্যতে একটি মানবিক পৃথিবী একটি শান্তির পৃথিবী যুদ্ধমুক্ত পৃথিবী গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করেন, সৃস্টির সেরা জীব হিসাবে আমাদের দাবীটা যৌক্তিক হবে। ইটালির প্রধানমন্ত্রী বলেছেন মানুষের সব চেষ্টা শেষ, এখন আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা ছাড়া আর কিছু করার নাই। আসুন আমরা দু’হাত তুলে আমাদের কৃতকর্মের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করি।