যুক্তরাষ্ট্রের মেম্ফিসে চলতি মাসের শুরুর দিকে মারা যাওয়া কৃষ্ণাঙ্গ যুব্ক টায়ার নিকোলসকে পাঁচ পুলিশ কর্মকর্তা নির্মমভাবে পিটিয়েছিলেন। এসময় ‘মা’ বলে চিৎকার করছিলেন নিকোলস। শুক্রবার কৃষ্ণাঙ্গ এই তরুণকে মারধরের ভিডিও প্রকাশ করেছে কর্তৃপক্ষ।
পুলিশের বডিক্যামের ফুটেজে নিকোলসকে মাটিতে পড়ে থাকতে দেখা গেছে। অফিসাররা যখন তার মুখে ঘুষি ও লাথি মারছিল তখন তিনবার ‘মা’ বলে ডেকে উঠেছিলেন নিকোলস। তিন দিন পর ১০ জানুয়ারি হাসপাতালে তিনি মারা যান।
চারটি ভিডিওর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ ভিডিওটি শহরের একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে থাকা ক্যামেরায় রেকর্ড হয়েছিল। এটি ৩১ মিনিট স্থায়ী এবং কোন শব্দ নেই এতে। বাকী ভিডিওগুলো পুলিশের বডিক্যামেরায় রেকর্ড হওয়া।
একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, নিকোলসকে চালকের আসন থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে তাকে জোর করে মাটিতে ফেলে দিতে দেখা গেছে। এ সময় নিকোলস চিৎকার করে ‘আরে, আমি কিছু করিনি, আমি কেবল বাড়ি যাওয়ার চেষ্টা করছি’ বলতে শোনা যায়। পুলিশ কর্মকর্তারা তাকে মাটিতে উপুড় হয়ে শুয়ে থাকতে নির্দেশ দেন এবং মুখে মরিচের গুড়া স্প্রে করেন। নিকোলস তখন নিজেকে মুক্ত করে দৌড় শুরু করলে পুলিশের ওই কর্মকর্তারা তাকে ধাওয়া করেন। এদের মধ্যে একজন নিকোলসকে লক্ষ্য করে স্টান গান থেকে ফায়ার করেন।
এক পর্যায়ে নিকোলসকে ধরে মাটিতে ফেলে দিয়ে মারধর শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তরা। একজন পুলিশ কর্মকর্তা নিকোলসের গলার উপর হাঁটু গেড়ে বসেন, অন্য একজন তাকে বারবার লাথি মারেন। কর্মকর্তাদের নিকোলসের মুখে বেশ কয়েকটি লাথি মারতে দেখা যায়। বারবার আঘাত করার পরে মাটিতে পড়ে যান নিকোলস। এরপর তার মুখের ওপর আরও দুটি লাথি মারে পুলিশ অফিসাররা। ওই অবস্থাতেই তাকে টেনে পুলিশের একটি গাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়।
পুলিশের ওই পাঁচ কর্মকর্তার সবাই কৃষ্ণাঙ্গ। তাদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মাত্রার খুন, হামলা, অপহরণ, অসদাচরণ ও নিপীড়নের আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে।
ভিডিওগুলো প্রকাশের পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন জানিয়েছেন, তিনি ‘ক্ষুব্ধ’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, নিকোলসের মা ‘নিশ্চিতভাবেই অনেক যন্ত্রণার মধ্যে’ ছিলেন। তবে এর মধ্যেও ওই মা বিক্ষোভ যাতে শান্তিপূর্ণ হয় সেজন্য ‘শক্তিশালী আহ্বান জানিয়েছেন।’
চার বছর বয়সী এক পুত্র সন্তানের পিতা নিকোলস ফেডেক্সে চাকরি করতেন। তিনি স্কেটবোর্ড চালাতে এবং ছবি তুলতে ভালোবাসতেন।