বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান বলেছেন, পৃথিবীতে আমরা একটা রেকর্ড করেছি। ৭-৮ বছরে আজ পর্যন্ত এই ধরনের কোনো প্রজেক্ট কোনো দেশে কমপ্লিট হয়নি। অথচ, আমরা শেষ করেছি। যেখানে অন্য দেশগুলোর ১২ থেকে ১৫ বছর সময় লেগেছে।
বুধবার (৪ অক্টোবর) পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র পরিদর্শনে এসে সংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
পিতা ও কন্যা অর্থাৎ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার কন্যা শেখ হাসিনাকে নিয়ে লেখা কবিতা দিয়েই বক্তব্য শুরু করেন ইয়াফেস ওসমান। ‘পিতা চেয়েছিল, পরমাণু যুগ শুরু হোক রূপপুরে,
পিতার চাওয়া হচ্ছে পূরণ কন্যার হাত ধরে।
রূপপুর আজ রূপ পেয়েছে, অর্জন অশেষ
এই না হলে শেখের বেটি, সাবাস, সাবাস বাংলাদেশ।’
মন্ত্রী বলেন, ‘আসলে আমরা দীর্ঘ সাতটা বছর এই প্রকল্পের ওপর নিরলসভাবে কাজ করে গেছি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী রাশিয়ান প্রেসিডেন্টকে অ্যাপ্রোচ করেছিলেন। উনি বলেছিলেন, পারসোনালি বিষয়টা দেখবেন। যেটা সারা পৃথিবীর মধ্যে বেস্ট হবে। আমরা তার রিফ্লেকশনও পেয়েছি। ইতোমধ্যে করোনা গেছে। তার মধ্যে কিন্তু এক দিনও কাজ বন্ধ হয়নি, পিছিয়ে পড়েনি। আমি বলব, সারা বাংলাদেশের মানুষ এতে সহায়তা করেছেন। এখানে লাখ লাখ টন সিমেন্ট, রড লেগেছে। আরও মজার ব্যাপার, আমাদের দেশের ছেলে-মেয়েরা এখানে কাজ করে, বিশেষ করে ছেলেরা, তারা কিন্তু আজকে রাশিয়ানদের কাছেই পরীক্ষা দিয়ে গ্র্যাজুয়েশন পেয়েছে। সেখানেও তারা ‘এ’ গ্রেডের কর্মী হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। অর্থাৎ এ প্রজেক্টের সাথে মানুষও তৈরি হয়ে গেছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতার আগে এই রূপপুরেই নিউক্লিয়ার পাওয়ার প্রজেক্টের কথা বলেছিলেন। কিন্তু, পাকিস্তানিরা সেটা সরিয়ে নিয়ে যায় করাচিতে। যে কারণে উনি স্বাধীনতার পরপরই চেষ্টা করেছিলেন ফ্রান্স, রাশিয়ার সাথে কথা বলে, যেন এই প্রজেক্টটা শুরু করা হয়। আজকে আমরা যদি চিন্তা করি, যদি স্বাধীনতার পরপরই এই প্রজেক্ট শুরু হতো, কত আগেই আমরা নিউক্লিয়ার ক্লাবে যুক্ত হতে পারতাম। সেই কারণেই আমরা যে বলি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন। আসলে স্বপ্ন তো উনি সারা জাতিকে ধরেই দেখেছিলেন। তারই রিফ্লেকশন আজকে এখানে। আমি বলব, পুরো জাতি এটার জন্য অপেক্ষা করছে।
ইয়াফেস ওসমান বলেন, পৃথিবীতে আমরা একটা রেকর্ড করেছি। ৭-৮ বছরে আজ পর্যন্ত এই ধরনের কোনো প্রজেক্ট কমপ্লিট হয়নি। অন্য দেশের কারো ১৫, কারো ১২ বছর সময় লেগেছে। এসবই সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কারণে। পিতার যে চাওয়া, সেই চাওয়াটা পূরণ করার জন্য উনার যে উদ্যোগ, চেষ্টা; তারই প্রতিফলন এটা। সত্যিকারভাবে কৃতজ্ঞতা জানাই, এই প্রকল্পে যারাই কাজ করেছেন। তারাই কিন্তু উনার প্রাণশক্তি।
সাংবাদিকদের উদ্দেশে মন্ত্রী বলেন, এমন একটা সময়ে আপনারা এসেছেন, যখন বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার ক্লাবে প্রবেশ করছে। ৪০ বছর পর বাংলাদেশ নিউক্লিয়ার ক্লাবে যুক্ত হচ্ছে। আগামী বছর পর্যন্ত আমরা থাকব। তার পর হয়ত নতুন করে অন্যরা আসবে। এসবই সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার বাংলাদেশকে ভালোবাসা, পিতার প্রতি কমিটমেন্টের কারণে। এখানে যারা সরাসরি কাজ করছেন, তাদের কোনো ক্রেডিট নেই। ক্রেডিটে কাউকে মূল্যায়ন করতে হলে তিনি শেখ হাসিনা এবং পুরো জাতি।