ওয়ানডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ তিন দলীয় সংগ্রহ রান কতো? উত্তরটা মুখস্থই থাকার কথা ক্রিকেটপ্রেমিদের। ইংল্যান্ডের ৪৯৮, নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে। একই দলের ৪৮১ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ও তৃতীয় ৪৪৪ পাকিস্তানের বিপক্ষে। শেষটাও করেছে ওই ইংল্যান্ডই।
সবকটিই হয়েছে গত সাত বছরে। ২০১৫ সালের পর! ২০১৫ সালকে বলা হয় ইংলিশ ক্রিকেটের পালাবাদলের সময়। অস্ট্রেলিয়া বিশ্বকাপে বাংলাদেশের কাছে গ্রুপপর্বের ম্যাচ হেরে বিদায় নেয় ইংল্যান্ড। এরপর গোটা দলটাই পাল্টে যায়। ঘরের মাঠে চার বছর পর বিশ্বকাপকে সামনে রেখে ফিয়ারলেস ক্রিকেট খেলার সিদ্ধান্ত নিয়ে সফল লায়ন্সরা। এরপর প্রতি পাঁচ ম্যাচে একটিতে চার’শ ছুঁইছঁই রান। দুটিতে তিন’শ পেরিয়ে দলীয় সংগ্রহ পায় ইংল্যান্ড।
নিজেদের ক্রিকেটে নতুন ব্র্যান্ড দাঁড় করিয়েছে যেখানে বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রান তোলেন তারা। সীমিত পরিসরে ওভারপ্রতি সাত করে রান তাদের মুখস্থ কাজ। টেস্ট ক্রিকেটে গড়ে পাঁচ, কখনো ছয় করেও রান করেন। প্রতিপক্ষের বোলারদের তুলোধুনো করে, প্রতি আক্রমণে রান করা তাদের জন্য ‘ছেলের হাতের মোয়া’ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
২০১৯ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ২০২২ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরও শিরোপা জিতেছে তারা। ২০১৬ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা একটুর জন্য ছুঁতে পারেননি। ২০২১ সালে হয়েছিল সেমিফাইনালিস্ট। সব দিলিয়ে সীমিত পরিসরে তারা এক ভিন্ন দল। আতঙ্কের বড় নাম। যাদের বিপক্ষে পহেলা মার্চ মিরপুরে প্রথম ওয়ানডে খেলতে নামবে বাংলাদেশ।
ওয়ানডেতে ইংল্যান্ড মাঠে নামা মানেই রানের ফুরঝুরি। এমটাই হয়ে আসছে। বাংলাদেশেও কি তারা একই মনোভাব, আক্রমণাত্মক হয়ে খেলবে? জানতে চাওয়া হয়েছিল ইংল্যান্ডের অধিনায়ক জস বাটলারের কাছে। উত্তরে মারকুটে ব্যাটসম্যান যা বললেন তাতে মনে হলো, কন্ডিশন তাদের খেলায় বড় প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।
‘আমরা সবসময় যতটা সম্ভব আক্রমণাত্মক হওয়ার চেষ্টা করি। ভুল ধারণাটি হল যে আমরা প্রতিবার ৪০০ রানের লক্ষ্য রাখছি। কিন্তু বিষয়টা হলো আমরা যতটা সম্ভব বাউন্ডারি খোঁজার চেষ্টা করি এবং গড় রানের পেছনে ছোটার চেষ্টা থাকে আমাদের। এরপর সেটাকে আরও বাড়িয়ে নেওয়ার তাড়ণা কাজ করে। দেখুন উইকেট যদি আমাদেরকে সর্বোচ্চ ১০০ করতে দেয় আমরা ৮০ রানের পরিবর্তে ১০০-ই করবো।’ –বলেছেন বাটলার।
২০১৫ সালে বাংলাদেশের বিপক্ষে পাওয়া হোঁচট ইংল্যান্ডকে ঘুরে দাড়াতে সাহায্য করেছে তা বলতে দ্বিধা করলেন না ইংলিশ অধিনায়ক, ‘বিশ্বকাপের পারফরম্যান্স আমাদেরকে নিজেদের খেলা পরিবর্তন করতে বাধ্য করেছে। আমরা যেখানে ছিলাম সেখান থেকে এগিয়ে গিয়েছি। আমাদেরকে নিজেদের প্রমাণের একটা বিষয়ও ছিল। বলতে দ্বিধা নেই বাংলাদেশের বিপক্ষে ম্যাচটা হেরে আমরা বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাই যেটা ইংলিশ ক্রিকেটের টার্নিং পয়েন্ট। এরপর আমরা কঠিন পথ পেরিয়ে বর্তমান অবস্থায় এসেছি।’