বিএনপির এক নেতা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রকাশ্য সমাবেশে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার পরও দলটির দায়িত্বশীল কোনো নেতা তা নিয়ে কোনো কথা না বলায় বিস্ময় প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের প্রশ্ন রেখে বলেছেন, তাহলে কি এতে তাদের মৌন সম্মতি রয়েছে?
বুধবার (২৪ মে) রাজধানীর সড়ক ভবনে বারৈয়ারহাট রামগড় সড়ক প্রশস্তকরণ কাজের ভিত্তিপ্রস্তর উদ্বোধন করতে গিয়ে এ কথা বলেন তিনি।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘রাজশাহীতে তারা স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়েছে। তিনি যে সাধারণ ব্যক্তি এটা ভাবার কারণ নয়, কারণ তিনি জেলার প্রধান এবং কেন্দ্রের সদস্য। আমি অবাক হলাম মির্জা ফখরুল পার্টির সেক্রেটারি জেনারেল তিনি একটা শব্দও উচ্চারণ করলেন না।’
‘বাংলাদেশের মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস তিনি এই ঘটনাকে ভালোভাবে নেননি এবং নিন্দা করেছেন। সেখানে বিএনপি থেকে কোনো দায়িত্বশীল নেতা তাদের রাজশাহীর নেতার এই হুমকি দিয়ে বিষেদাগার করেছেন, তা নিয়ে তারা আজ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেননি এবং তাদের একজন জয়েন্ট সেক্রেটারি সিলিপ অব টাং বলে দায়িত্ব শেষ করেছেন।’
তিনি বলেন, ‘এটা তো এখানেই শেষ নয়, তারা তাদের মিছিলে পঁচাত্তরের হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার’-এই স্লোগান দিয়েই যাচ্ছেন। মির্জা ফখরুলের সামনেই দিচ্ছেন। তাদের সিনিয়র নেতাদের সামনে প্রকাশ্যে এর আগেও রাজশাহীতে আরও একটি ১৫ আগস্টে ঘটানোর কথা বলেছিলেন তাদের এক নেতা এবং এই প্রসঙ্গে বিএনপির কাউতে কোনো কথা বলতে শুনিনি। এর দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় তাদের নেতারা যেটা রাজশাহী থেকে যেটা বলেছেন, সেটাই বিএনপিরই কথা। তারা এখন ২৭ দফা থেকে এক দফার কথা বলছে। তাহলে কি বুঝে নেবো তাদের এক দফা শেখ হাসিনাকে হত্যার দফা?
‘শেখ হাসিনাকে কবরস্থানে পাঠানো এটাই কি তাদের এক দফা? এই ব্যাপারে তাদের নেতাদের বক্তব্য শুনতে চাই। এতে এখনো স্থায়ী কমিটির কোনো নেতা কিছু বলেননি। তাহলে নিশ্চয় এটাতে তাদের মৌনসম্মতি আছে। উপর দিয়ে তারা বলতে পারছে না কাউকে দিয়ে বলাচ্ছেন।’
রাজধানীতে বিএনপির সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ গাড়িতে আগুন দেওয়ার ঘটনার দৃষ্টি আকর্ষণ করে অপর এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, পুলিশের সাথে তাদের যে সংঘাত, গতকাল তারা গায়ে পড়ে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। বিআরটিসির একটি গাড়ি পুড়িয়ে ফেললো, এটা গাড়িতে আগুন দিলো, একটি গাড়ি ভাঙচুর করলো; এটা তারা যে আন্দোলনের নামে…আমরা এতদিন বলে আসছিলাম, তারা আন্দোলনের নামে নৈরাজ্য করবে, সন্ত্রাস করবে এবং এটা তাদের পুরোনো স্বভাব।
‘কাজেই যেটা যেভাবে মোকাবিলা করতে হয় তা উদ্ভূত পরিস্থিতি বলে দেবে। কোনো পরিস্থিতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কি দায়িত্ব। আর রাজনৈতিকভাবে যে কোনো বিষয়ে আমরা রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করবো এবং রাজনীতিরও একটি ভাষা আছে।’
এ সময় তিনি বলেন, আমার পরিবেশ শান্তিপূর্ণ রাখতে চাই। তবে নির্বাচন প্রতিরোধ করতে হলে আমরাও প্রতিরোধ করবো।
সিটি কর্পোরেশর নির্বাচনে ইসির ভূমিকা নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী বলেন, ইসির দায়িত্বটা তারা যথাযথভাবে পালন করছে কি না এখনই বলা ভুল। নির্বাচন হলে বুঝতে পারবেন ইসির ভূমিকা কি? এ যাবৎ অনেকগুলো নির্বাচন হলো…যেমন গাইবান্ধা তারা বন্ধ করে দিয়েছে। পরবর্তীতে তারা সুন্দর নির্বাচন করেছে। ইউনিয়ন, পৌরসভা, উপজেলা নির্বাচন এরই মধ্যে হয়েছে, এখানে অংশ না নিলেও তো কিছু বলার নেই।
‘তারা (বিএনপি) নির্বাচনও করবে না আবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াবে…পরিচয় গোপন করেও গাজীপুরসহ বাকি চারটি সিটি কর্পোরেশনে তাদের প্রার্থী আছে। তাদের স্বরূপে তারা উন্মেচিত হবে সেটা নির্বাচনে প্রমাণিত হবে।’