প্রবল ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে ‘মোখা’। ঘূর্ণিঝড়টি দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। এটি আরও উত্তর দিকে অগ্রসহ হয়ে একই এলাকায় অবস্থান করছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
বৃহস্পতিবার (১১ মে) সন্ধ্যা ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
পূর্বাভাসে বলা হয়, ‘দক্ষিণপূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’ আরও উত্তর দিকে অগ্রসর হয়ে একই এলাকায় (১২.১ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ এবং ৮৭.৯ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশ) অবস্থান করছে। এটি বৃহস্পতিবার (১১ মে, ২০২৩) সন্ধ্যা ৬টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১১৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ‘এটি শুক্রবার (১২ মে ২০২৩) সকাল পর্যন্ত উত্তরের দিকে অগ্রসর ও আরও ঘনীভূত হয়ে পরবর্তীতে দিক পরিবর্তন করে ক্রমান্বয়ে উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর হতে পারে।’
ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের আশপাশে বাতাসের গতিবেগ নিয়ে বলা হয়, ‘ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৬৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৯০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ১১০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর খুবই উত্তাল রয়েছে।’
এদিকে, ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র প্রভাবে কক্সবাজারের সেন্টমার্টিন দ্বীপ ১৫ ফুটের উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ। বৃহস্পতিবার রাতে এক ফেসবুক পোস্টে এই আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন তিনি।
পোস্টে আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক এই পিএইচডি গবেষক লিখেছেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপের ওপর দিয়ে ঘণ্টায় ১২০-১৫০ কিলোমিটারের বাতাস বেয়ে যাওয়ার ও ১০ থেকে ১৫ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এই দ্বীপের সকল ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দোকানের মালামাল দোকানে রাখলে সম্পূর্ণরূপে নষ্ট হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে।
পোস্টে তিনি আরও লিখেছেন, একইভাবে কক্সবাজারের কুতুবদিয়া, মহেশখালী দ্বীপের উপর দিয়ে ১০০ থেকে ১৩০ কিলোমিটারের বাতাস বেয়ে যাওয়ার ও ১০ থেকে ১২ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়া ঘণ্টায় ১০০ থেকে ১২০ কিলোমিটার গতিবেগের বাতাসের কারণে শরণার্থী শিবিরগুলোর ঘরের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতির সম্ভাবনা রয়েছে। পাশাপাশি কক্সবাজার জেলার উপর ২০০ থেকে ৩০০ মিলিমিটার বৃষ্টির প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থী শিবিরগুলোতে ব্যাপক বন্যা ও ভূমিধ্বসের প্রবল সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।