বিশ্বজুড়ে মাঙ্কিপক্স ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে করোনার সংক্রমণও বাড়তে শুরু করেছে। আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত রোগের প্রাদুর্ভাব আরো বাড়বে। এর ফলে দেখা দিতে আরেকটি মহামারি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ধরনের রোগগুলো জুনোসেস নামে পরিচিত, যা হাজার বছরে ধরে চলে আসছে। সাম্প্রতিক দশকগুলোতে বন উজাড়, ব্যাপক গবাদি পশুর চাষ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং প্রাণীজগতে মানুষের ক্রমবর্ধমান হস্তক্ষেপের কারণে এগুলো আরো সাধারণ হয়ে উঠেছে।
প্রাণী থেকে মানুষের মধ্যে ছড়িয়ে পড়া অন্যান্য রোগের মধ্যে রয়েছে এইচআইভি, ইবোলা, জিকা, সার্স, এমইআরএস, বার্ড ফ্লু এবং বুবোনিক প্লেগ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, তারা এখনও কোভিডের উৎস সম্পর্কে তদন্ত করছে। তবে ‘জোরালো প্রমাণ এখনও জুনোটিক সংক্রমণের আশেপাশে রয়েছে।’
সংস্থাটি আরো জানিয়েছে, গত মাসে বিশ্বব্যাপী এক হাজারেরও বেশি মাঙ্কিপক্স সংক্রমণের তথ্য রেকর্ড করা হয়েছে। এই রোগটি অর্ধশত দেশে দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার জরুরি বিষয়ক পরিচালক মাইকেল রায়ান গত সপ্তাহে বলেছিলেন, ‘এই রোগগুলো মানুষের মধ্যে সংক্রমণের সংখ্যা বাড়ছে এবং এই আমাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে বিস্তারের ক্ষমতা বাড়ছে।’
জাতিসংঘের পরিবেশ প্রকল্প অনুসারে, মানুষের মধ্যে পরিচিত সংক্রমণের প্রায় ৬০ শতাংশই জুনোটিক।
কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের মহামারি বিশেষজ্ঞ রেস্টিফ বলেন, গত কয়েক দশকে ‘জনসংখ্যা বৃদ্ধি, পশুসম্পদ বৃদ্ধি এবং বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল দখলের’ কারণে জুনোটিক রোগ এবং প্রাদুর্ভাবের সংখ্যা বেড়েছে।
তিনি বলেন, ‘বন্য প্রাণীরা মানুষের ক্রিয়াকলাপের প্রতিক্রিয়ায় তাদের আচরণে ব্যাপক পরিবর্তন করেছে। তারা তাদের ক্ষয়িষ্ণু আবাসস্থল থেকে স্থানান্তরিত হয়েছে। মানুষ ও গৃহপালিত প্রাণীদের কাছাকাছি থাকা দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন প্রাণীরা আরও রোগজীবাণু সংক্রমণের একটি নিশ্চিত মাধ্যম হয়ে দাঁড়িয়েছে।’