অনুসন্ধানী রিপোর্ট: ফেডারেশন অব বাংলাদেশি অ্যাসোসিয়েশন অব নর্থ আমেরিকা ফোবানার নেতৃত্ব দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে যুক্তরাষ্ট্রে জেলখাটা চিহ্নিত দাগী আসামীদের একটি সংঘবদ্ধ গ্রুপ। এই গরুপের সম্মুখ থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন ফোবানার তথাকথিত নেতা ক্যানসাসে বসবাসরত রেহান রেজা। তার নেতৃত্ব কিছু চিহ্নিত জেলাখাটা দাগী আসামীরা সংঘবব্ধ হয়ে গত কয়েক বছর ধরেই ফোবানার নেতৃত্ব দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে বলে জানা যায়।
অনুসন্ধানে জানা যায়, গত কয়েক বছর ধরেই ফোবানার সুনাম বৃদ্ধি এবং উত্তর আমেরিকায় ফোবানার গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির লক্ষে ফোবানার নেতৃত্বে কোন আসামী যাতে না আসতে পারে সেজন্য বারবার প্রস্তাব আনার পরও এই প্রস্তাব পাশ করাতে বছরের পর বছর ব্যর্থ হয়েছে ফোবানা কর্তৃপক্ষ।
এ বছর ২০২০ সালে এই ধরনের একটি প্রস্তাব আনে ফোবানার সদস্য আটলান্টায় বসবাসরত ডা. মুহাম্মদ আলী মানিক। প্রস্তাব এনে তিনি বলেন, ফোবানা একটি প্রেস্টিজিয়াস সংগঠন। বাংলাদেশ সহ সারা বিশ্বে, বিশেষ করে উত্তর আমেরিকায় একটি বেশ জনপ্রিয় সংগঠন। ফোবানার মত একটি সংগঠনের নেতৃত্বে কোন ক্রিমিনাল আসে কিভাবে? এটাত ভাবাই যায় না, ফোবানার নেতৃত্বে এক বা একাধিক আসামী রয়েছে। যদি কোন জেলখাটা দাগী আসামী এই সংগঠনের নেতৃত্বে আসে তাহলে সংগঠনটি মানুষের কাছে মুখ দেখাবে কি করে। অথচ এই ফোবানারই কিছু সংখ্যক চিহ্নিত নেতার মদদে জেলাখাটা দাগী আসামীরা ফোবানা দখলে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা ফোবানাকে ধ্বংস করার লক্ষ্য নিয়ে ফোবানার ভেতরে গরুপিং তৈরি করে ফোবানার বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে।
এদিকে গত ৩৩তম ফোবানায় নির্বাচনে হেরে গিয়ে এই ফোবানার ৫টি সংগঠন ফোবানার বিভক্ত অন্য একটি সংগঠনে গিয়ে যোগদান করে। ৩৩তম ফোবানায় এক বছরের জন্য নির্বাচিত এক্সিকিউটিভ কমিটি প্রায় ৯ মাস পরও এই পাঁচটি সংগঠনের বিরুদ্ধে কোন সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। অথচ এই পাঁচটি সংগঠন ক্রমাগত ভাবে ফোবানার সুনাম ক্ষুন্ন করে ফোবানার বিভক্ত অংশের সঙ্গে মিলিত এবং সমর্থন জানিয়ে তাদের পক্ষে খোলামেলা কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের ভাষায়, আমরাতো সংবাদ সম্মেলন করে অন্য ফোবানায় যোগদান করেছি। এই ফোবানা এবং ফোবানার নেতৃবৃন্দকে সাংবাদিক সম্মেলনের মাধ্যমে বহিস্কার করেই আমরা এই ফোবানায় যোগদান করেছি। ওরা আমাদেরকে কি বহিস্কার করবে। আমরা নিজেরাই ওদেরকে বহিস্কার করে দিয়ে অন্য ফোবানায় যোগ দিয়েছি।
এদিকে এই ৫টি সংগঠনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতে না পারার পেছনেও রেহান রেজার নেতৃত্বে জেলাখাটা দাগী আসামীদের বিরোধীতা এবং ফোবানার কোন কোন নেতা এই দাগী আসামীদের পদলেহনের কারণকেই দুষছেন। তবে কারণ যেটিই হোক না কেন, বর্তমান ফোবানা কতৃপক্ষ ফোবানাকে সঠিক ভাবে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছে বারবার। এ বিষয়ে ফোবানার অনেক সিনিয়র নেতা মনে করেন, ফোবানার যে তরুণ নেতৃত্বকে আমরা ভোট দিয়ে নির্বাচন করে নেতা বানিয়েছে তারা ফোবানাকে সঠিক ভাবে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছে। যার ফলে ফোবানার সুনাম ক্ষুন্ন হয়েছে।
এদিকে ফোবানার প্রাক্তন চেয়ারম্যান একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুন নবীর প্রতি এই বিষয়টির দৃষ্টি আকর্ষন করলে তিনি বলেন, ফোবানার নেতৃত্বে কোন জেলাখাটা দাগী আসামী আসার প্রশ্নই উঠে না। তিনি বলেন, বহু আসামী ফোবানার নেতৃত্বে আসার চেষ্টা করছে। ফোবানায় এই ধরনের দাগী আসামীদের আসা বন্ধে অবিলম্বে ফোবানার সংবিধানে পরিবর্তন আনা জরুরি।
এদিকে গত ১২ জুলাই ফোবানার এক সভায় ডা. মুহাম্মদ আলী মানিকের আনিত প্রস্তাবের উপর আনিত আলোচনায় রেহান রেজা, জয়নুল আবেদীন এবং রবিউল করিম বেলালের প্রচন্ড বিরোধীতার মধ্য দিয়ে প্রস্তাবটি রিভিউ কমিটিতে পাঠানো হয়েছে বলে জানা যায়।